Advertisement
E-Paper

মহিলা প্রতিযোগীকে দিলেন নিজের জার্সি, বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের মঞ্চে বিরল সম্মান ভারতীয়ের

ফেন্সিং বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে হতাশাজনক পারফরম্যান্স করার পরেও বিশেষ পুরস্কার জিতলেন এক ভারতীয়। অথচ নিজে আশাই করেননি সাধারণ একটা কারণে পুরস্কৃত হবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:০২
picture of Maria Akshita

বিশ্ব ফেন্সিং সংস্থা বিশেষ পুরস্কার দিয়েছে মারিয়া অক্ষিতাকে। ছবি: টুইটার।

বিশ্ব ফেন্সিং সংস্থার কাছ থেকে বিশেষ এক পুরস্কার পেলেন ভারতের মারিয়া অক্ষিতা। যে পুরস্কার এর আগে ভারতের কোনও ফেন্সিং খেলোয়াড় পাননি। মারিয়া নিজেও বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের এই বিশেষ পুরস্কার প্রত্যাশা করেননি।

গত নভেম্বরের মাঝামাঝি তাঁর বাড়িতে আসে বিশ্ব ফেন্সিং সংস্থার একটি চিঠি। মারিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হয় মিশরে। সংস্থার বার্ষিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে। চিঠি পেয়ে বেশ অবাকই হয়েছিলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে হতাশাজনক পারফর্ম করা মারিয়া। কারণ বিশ্ব ফেন্সিং সংস্থা তাঁকেই বেছে নেয় ‘ফেয়ার প্লে’ পুরস্কারের জন্য। কেন সে সময় বুঝতে পারেননি তিনি। কিছুটা বিস্ময় নিয়েই ২৮ নভেম্বরের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিশর গিয়েছিলেন। সেখানে ‘ফেয়ার প্লে’ পুরস্কার নেওয়ার আগে জানতে পারেন কারণ। প্রায় ভুলে যাওয়া একটি ছোট্ট সাহায্যের জন্য বিশ্বমঞ্চে সম্মানিত হয়ে উচ্ছ্বসিত মারিয়া। ‘ফেয়ার প্লে’ ট্রফি নিয়ে মারিয়ার ছবি সমাজমাধ্যমে ক্রীড়াপ্রেমীদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। ভারতের প্রথম ফেন্সার হিসাবে বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ‘ফেয়ার প্লে’ পুরস্কার পেলেন তিনি।

বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপে কী করেছিলেন তিনি? তৃতীয় রাউন্ডে প্রাক্তন জুনিয়র বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আমেরিকার লরেন স্ক্রুগসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মারিয়া। সে সময় ২৩ বছরের ভারতীয় ফেন্সার পাশের অনুশীলন পিস্তে (ফেন্সিং খেলার জায়গা) হঠাৎ হইচই শুনতে পান। বুঝতে পারেন ম্যাচ শুরুর আগে এক প্রতিযোগীর জার্সিতে (ফেন্সিংয়ে যাকে ইলেকট্রিক জ্যাকেট বলে) সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেই প্রতিযোগীর দলের কর্তারা বেশ ক্ষিপ্ত। ওয়াকওভার দিয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেই প্রতিযোগীর। তখন সময় নষ্ট না করে মারিয়া নিজের ইলেকট্রিক জ্যাকেট সেই প্রতিযোগীকে দিয়ে দেন। কয়েক মিনিট পরের নিজের ম্যাচ শুরুর কথাও ভাবেননি!

সেই প্রতিযোগী মারিয়ার জ্যাকেট পরে ম্যাচ খেলতে যান। তাঁর ম্যাচ চলতে চলতেই অন্য পিস্তে মারিয়ার ম্যাচের সময় হয়ে যায়। কিন্তু তাঁর কাছে জ্যাকেট না থাকায় খেলা শুরু করা যাচ্ছিল না। সমস্যা বুঝতে পেরে আয়োজকেরা অতিরিক্ত কয়েক মিনিট অপেক্ষা করেছিলেন। জ্যাকেট ফিরে পাওয়ার পর স্ক্রুগসের সঙ্গে ম্যাচ খেলেন মারিয়া। যদিও জিততে পারেননি সেই ম্যাচ। হতাশ মারিয়া ফিরে এসেছিলেন চেন্নাইয়ে। অচেনা সেই প্রতিযোগী অবশ্য সাহায্যের জন্য মারিয়ার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে ভোলেননি। ঠিক এই ঘটনার জন্যই পুরস্কার পেয়েছেন মারিয়া। যা তিনি নিজেও আশা করেননি।

উচ্ছ্বসিত মারিয়া বলেছেন, ‘‘সেই প্রতিযোগী অন্য পুলে ছিলেন। আমি ছিলাম অন্য পুলে। তিনি নিজের পুলের প্রতিযোগীদের কাছে সাহায্য চেয়েও পাননি। তখন আমি সাহায্য করেছিলাম। যদিও তাঁকে আমি চিনতাম না। তাঁর দেশের নামও শুনিনি আগে। বিশেষ কিছু করেছিলাম বলে মনে হয় না। এ রকম সাহায্য আমি মাঝে মাঝে করেই থাকি। তাই ঘটনাটা আমার মাথাতেও ছিল না। জ্যাকেট, মাস্ক এবং তলোয়ার আমাদের খেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। কোনও একটা সমস্যা দেখা দিলে ম্যাচ খেলা কঠিন। এটার জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপের ফেয়ার প্লে পুরস্কার পাব ভাবিনি।’’

মারিয়ার বয়স যখন ১৪ ছিল, সে সময় একটি প্রতিযোগিতায় গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। তাঁর ইলেকট্রিক জ্যাকেটে সমস্যা হওয়ায় ম্যাচ খেলতে পারেননি। সে সময় তাঁকে কেউ সাহায্য করেনি। সেই ঘটনা মনে পড়ে গিয়েছিল মারিয়ার। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে দু’বার ভাবেননি মারিয়া।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy