সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাবা ছোটবেলায় বলে দিয়েছিলেন, পড়াশোনা না করলে মাঠে ফুটবল খেলতে পাঠাবেন না।
মহমেডান রাইট ব্যাক অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় তাই এখনও বড় দলে খেলার পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছেন পড়াশোনা।
দক্ষিণ কলকাতার চারুচন্দ্র কলেজের স্নাতক স্তরে কলাবিভাগে পাঠরত অঙ্কিত শনিবার রাতে বারাসতে সাদা-কালো শিবিরের ড্রেসিংরুমে বলছিলেন, ‘‘আর্থিক সমস্যা সামলাতে হয়নি। কিন্তু ছোটবেলায় বাবা শর্ত দিয়েছিলেন পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেই খেলা বন্ধ।’’
দমদম স্টেশনের কাছে শেঠবাগানের বাসিন্দা সেই অঙ্কিত কলকাতা লিগে এ বার মহমেডান রক্ষণে নজর কেড়েছেন। সাদা-কালো শিবিরের কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যও বলছেন, ‘‘ছেলেটার বড় সম্পদ হেডিং, উচ্চতাটা ভাল। ওভারল্যাপে গিয়ে সমান গতিতে নামতে পারে। গতিটা বেশ। তবে ট্যাকলটা আরও ভাল করতে হবে। ঠিক মতো এগোলে একদিন জাতীয় দলেও খেলবে।’’
আর্মি একাদশের কোচ সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফুটবলের হাতেখড়ি অঙ্কিতের। স্কুল টুর্নামেন্টে তাঁর খেলা দেখেই ইস্টবেঙ্গল অনূর্ধ্ব-১৯ টিমে তাঁকে নিয়ে যান লাল-হলুদ কর্তারা। সেখান থেকে এরিয়ান হয়ে এ বার মহমেডান। বছরের শুরুতে বাংলার হয়ে সন্তোষ জয়ী টিমেও ছিলেন অনূর্ধ্ব-২৩ এই ডিফেন্ডার।
সেই টিমের মৃদুল বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই অঙ্কিতের স্টপার থেকে রাইট ব্যাক হয়ে যাওয়া। শনিবার বারাসতে মহমেডান ড্রেসিংরুমে অঙ্কিত সে কথা জানিয়ে বলছিলেন, ‘‘এরিয়ানে স্টপারে খেলতাম। তাই সন্তোষের ট্রায়ালে এসে সেই জায়গাতেই খেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মৃদুল স্যার আমাকে রাইট ব্যাক করে দিয়েছেন।’’ মহমেডান কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘ছেলেটা খুব বাধ্য। ভুল করলে আমি ওকে অনুশীলনে চড়-চাপ্পড়ও মারি। কিন্তু তাতেও রাগতে দেখিনি। ফুটবলের মেধাবী ছাত্র।’’
সন্দেশ ঝিঙ্গন ও সের্জিও র্যামোসের ভক্ত অঙ্কিত বলছেন, ‘‘কলকাতার দুই বড় দলে খেলতে চাই। আর চাই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। খেলার সঙ্গে শিক্ষাটাও অপরিহার্য।’’