প্রথমার্ধে দু’গোল খেয়েও সেই ম্যাচ থেকে পুরো তিন পয়েন্ট তুলে মাঠ ছাড়া! এ রকম ছন্দময় শুরু হয়েছিল তাঁর চলতি মরসুম। এই মুহূর্তে সেই ছন্দ হাতড়ে বেড়াচ্ছেন প্রথম জন!
দ্বিতীয় জন আবার মরসুমের শুরুতে তাঁর টিম নিয়ে সাফল্য পাননি। কিন্তু আই লিগ শুরু হতেই ফের স্বমহিমায় তাঁর টিম। সঙ্গে টগবগ দৌড়চ্ছেন এএফসি কাপেও।
স্বভাবতই প্রথম জন ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। দ্বিতীয় জন মোহনবাগান কোচ সঞ্জয় সেন। একটা জায়গাতেই দু’জনের এখন মিল— সঞ্জয়ের মতোই আই লিগ জেতার স্বপ্নে বিভোর বিশ্বজিৎও।
কেন মরসুমের গোড়ার সেই ছন্দ আই লিগের প্রায় শেষের দিকে এসেও খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে? প্রশ্ন শুনে আইজল থেকে ফোনে বিশ্বজিৎ প্রথমে যেন অল্প বিরক্ত। ‘‘সামনের ছ’টা ম্যাচে সেই ছন্দ ফিরে আসবে না কে বলল? লিগ টপারের থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকেও আমার ছেলেরা কিন্তু আই লিগ নিজেদের তাঁবুতে আনতে এককাট্টা।’’ বলে তার পর যোগ করলেন বোধহয় আসল কথাটা। ‘‘সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু মেন্ডি আসার পরেই টিমে হঠাৎ একটা বাড়তি আত্মবিশ্বাস চলে এসেছিল। শেষ কয়েকটা ম্যাচে তার মাশুল দিতে হয়েছে। আশা করছি আইজল থেকে আবার পুরনো ছন্দ অর্ণবরা ফিরে পাবে।’’
লাল-হলুদে যখন পুরনো ছন্দ খুঁজে পাওয়ার তোড়জোড়, তখন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সবুজ-মেরুনের পালতোলা নৌকা তরতরিয়ে বইছে বিদেশেও। মরসুমের প্রথম ডার্বিতে চার গোল খেলেও বাগান কোচ ঘনিষ্ঠমহলে বলেছিলেন, ‘‘পুরো দল হাতে পেলে বুঝিয়ে দিতে পারব আমরাও কী ফুটবলটা খেলতে পারি।’’ আই লিগ যত এগোচ্ছে ততই ক্ষুরধার সঞ্জয়-ব্রিগেডকে। টিমে একাধিক বিকল্প। শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ। সঞ্জয়ের সুবিধে এটাই যে, লেনি রদ্রিগেজ বা কেন লুইস—যিনিই প্রথম দলে ঢুকছেন, কাজের কাজটা করে দিয়ে আসছেন।
এএফসি কাপে সাউথ চায়নাকে চার গোলে উড়িয়ে বৃহস্পতিবার বেশি রাতে হংকং থেকে শহরে এল মোহনবাগান। সঞ্জয় যদিও উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ। বলছেন, ‘‘একই সঙ্গে দু’-দু’টো টুর্নামেন্টে সুইচওভার করতে হচ্ছে আমাদের। সুতরাং আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।’’ মানছেন, আই লিগে অ্যাওয়েতে মুম্বই এফসি ম্যাচ জিততে পারেননি। ‘‘রবিবার বারাসতে তাই ফিরতি ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট চাই-ই চাই। ছোটখাটো ভুলও করা যাবে না।’’
বিশ্বজিৎ আবার শনিবারের ম্যাচের ৪৮ ঘণ্টা আগে আইজলের হোটেল থেকে বলে দেন, ‘‘চুরাশি-পঁচাশির মরসুমেও কিছু সহজ ম্যাচ হেরে প্রথমে সমস্যায় পড়েছিলাম। পরে গোটা টিম এককাট্টা হয়ে সেই ভুলভ্রান্তি সারিয়ে তুলেছিল। মেন্ডি, অর্ণবদের সে কথা বলেই আপাতত মোটিভেট করছি।’’ শনিবার দুপুর দু’টোয় ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের। তাই এ দিন দেড়টা থেকে স্থানীয় মাঠে অনুশীলন করেছে তারা। বিশ্বজিৎ বললেন, ‘‘দুপুরে খেলতে হবে। তাই আবহাওয়া, পরিবেশের সঙ্গে সড়গড় হতে শুক্রবারও একই সময়ে প্র্যাকটিস করব।’’
লাল-হলুদের প্রতিপক্ষ আইজল এফসিতে আবার জহর দাস কোচ হয়ে আসার পরে টিমের পারফরম্যান্সে উন্নতি ঘটেছে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিশ্বজিৎ বললেন, ‘‘নিজেদের কৃত্রিম ঘাসের মাঠে আইজল মোটেও সহজ হবে না। সঙ্গে জহরদার অভিজ্ঞতা। তাই ডিফেন্স গুছিয়ে তবেই আমরা কাউন্টার অ্যাটাকে জেতার চেষ্টা করব।’’