Advertisement
E-Paper

নীরজ, স্বপ্নারা ছাড়া চমক নেই ভারতের

হেপ্টাথলনে বাংলার স্বপ্না বর্মনের সোনা জেতার অপ্রত্যাশিত স্কোর (৫৯৪২) দেখেও কিন্তু কেউ প্রশ্ন তুলছেন না। বরং অভিভূত দেশের প্রায় সব কোচই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৫:০৫
সাফল্য: ভুবনেশ্বরে এশীয় অ্যাথলেটিক্সে সোনাজয়ী দেবশ্রী মজুমদারদের চারশো মিটার রিলে দল। ফাইল চিত্র

সাফল্য: ভুবনেশ্বরে এশীয় অ্যাথলেটিক্সে সোনাজয়ী দেবশ্রী মজুমদারদের চারশো মিটার রিলে দল। ফাইল চিত্র

জ্যাভলিন থ্রো-তে হরিয়ানার নীরজ চোপড়ার চমকে দেওয়া পারফরম্যান্স দেখে কেউ বিশ্মিত নন। বরং জুনিয়র বিশ্বকাপ রেকর্ডের মালিক উনিশ বছরের বিষ্ময় যুবক লন্ডনের আসন্ন বিশ্ব মিটে কিছু করে ফেলতে পারেন, এই আশায় বিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন অনেকেই।

হেপ্টাথলনে বাংলার স্বপ্না বর্মনের সোনা জেতার অপ্রত্যাশিত স্কোর (৫৯৪২) দেখেও কিন্তু কেউ প্রশ্ন তুলছেন না। বরং অভিভূত দেশের প্রায় সব কোচই।

তামিলনাড়ুর গোবিন্দন লক্ষণনের জোড়া সোনা (৫০০০, ১০০০০) জেতা দেখেও আশ্চর্য হচ্ছেন না কেউ-ই। সবাই বলছেন, ঠিক আছে।

এসবই টুকরো টুকরো প্রশ্নহীন সাফল্যের নির্যাস মাত্র। এর বাইরে?

কারণ ভুবনেশ্বরে রবিবার শেষ হওয়া এশীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে পদক তালিকা দেখে চোখ কপালে উঠেছে অনেকেরই। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে প্রথমবার ২৯ টি পদক (১২ সোনা, ৫ রুপো ও ১২ ব্রোঞ্জ) জিতে ভারত সবার শীর্ষে উঠে পড়েছে। লিগ টেবলে চিন, জাপান, কুয়েত, কাতার সবাই পিছনে। কোন জাদুদন্ডে এই সাফল্য? প্রশ্ন উঠেছে ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সে কি কোনও বিপ্লব ঘটে গেল গত কয়েক মাসে। না কি ‘পদকের দুধ’-এ অনেকটাই ‘জল’। প্রতিযোগী কতটা শক্তিশালী ছিল, পদক, পারফরম্যান্স, সময় বা দূরত্বের চুলচেরা বিশ্লেষণ করে কোচেরা দেখেছেন, এই সাফল্যে উদ্বেলিত হওয়ার কিছু নেই। বরং সবাই একমত, এশিয়ার শক্তিশালী দেশগুলো তাদের সেরা পারফর্মারদের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে নামাননি বলেই বাহাদুর সিংহের দল এ রকম বাহাদুরি দেখাতে পেরেছে।

আরও পড়ুন: ‘স্যার না থাকলে কবেই অভাবের গ্রামে কাদা মাখা গলিতে হারিয়ে যেতাম!’

‘‘একমাস পরেই বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স রয়েছে লন্ডনে। ওটা চিন বা কাতারের কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ওরা এশীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় দল পাঠাবে এটাই স্বাভাবিক। ভাল করে দেখিনি। তবে যে সব অ্যাথলিটকে চিনি বা জানি তাদের কাউকে দেখেনি,’’ বলছিলেন দ্রোণাচার্য কুন্তল রায়। সাইয়ের প্রাক্তন চিফ কোচ কুন্তলবাবুর হাত দিয়ে উঠেছেন সোমা বিশ্বাস, সঞ্জয় রাই, সুস্মিতা সিংহ রায়ের মতো অ্যাথলিট। বলছিলেন, ‘‘মেয়ে বা ছেলেদের ৮০০ মিটারে, লং জাম্প, ট্রিপল জাম্পে যে পারফরম্যান্সে সোনা এসেছে সেটা রাজ্য মিটে হয়। ফলে বোঝাই যাচ্ছে সেরা-রা আসেনি। তবে এটা বলছি, নীরজ, স্বপ্না যা করেছে সেটা কিন্তু অসাধারণ। নীরজের তো বিশ্বরেকর্ড আছেই। স্বপ্না যা করেছে দুদার্ন্ত।’’

কুন্তলবাবু ভুবনেশ্বর যাননি। তবে গিয়েছিলেন পূর্বাঞ্চলীয় সাইয়ের চিফ কোচ কল্যাণ চৌধুরী এবং সুভাষ সরকার। কল্যাণবাবু বলছিলেন, ‘‘চিন তো ১০০ মিটারে ছেলে-মেয়েদের সেরা টিমই পাঠায়নি। শুনলাম অগস্টে বিশ্ব মিটে নামাবে। টোকিও অলিম্পিক্সের জন্য তৈরি হচ্ছে। কাতার বা জাপানের মতো টিমও একই রাস্তায় হেঁটেছে। সেই সুবিধাটা ভারত পেয়েছে।’’ আর স্বপ্না বর্মনের কোচ সুভাষবাবুর মন্তব্য, ‘‘দেখুন যাঁরা পদক পেয়েছে তাদের মধ্যে নীরজ ছাড়া বিশ্বমঞ্চে আর কেউ পদক পাওয়ার জায়গায় পৌছতে পারবে না। আমার ছাত্রীও না।’’ জলপাইগুড়ির স্বপ্নাকে হাতাশা আর অবসাদ থেকে ফিরিয়ে আলোয় এনে ফেলা কোচকে নিয়ে হইচই হচ্ছে। সুভাষবাবু কিন্তু বাস্তবের মাটিতে। বলছিলেন, ‘‘স্বপ্না এশিয়াডে সোনা পেতে পারে। আমি জানি, খুব ভাল করলে চোট বড় জোর ৬২০০ পয়েন্ট করতে পারবে। তাতে অলিম্পিক্স টিমেও হয়তো ঢুকবে। কিন্তু পদক পাবে না।’’

সংগঠক দেশ বলে ভারত এ বার সব থেকে বড় দল নামিয়েছিল। ৯৫ জন। সব ইভেন্টে টিম নামায় পদক এসেছে প্রচুর। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেল রিও অলিম্পিক্সের সোনা জয়ী একজনই শুধু নেমেছিলেন। হ্যামার থ্রো-তে তাজাকিস্থানের দিলসাব নাজারভ। সোনাও পেয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে, কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে বিশ্ব অ্যাথলিটদের সেরা পারফরর্মারা না নামাতেই ভারতের এই সাফল্য তা সে চিফ কোচ বাহাদুর সিংহ যতই দাবি করুন, ‘‘নিন্দুকরা যাই বলুন ভারত কিন্তু এগোচ্ছে।’’

Swapna Barman স্বপ্না বর্মন নীরজ চোপড়া অ্যাথলেটিক্স Athletics Hepatathlon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy