Advertisement
E-Paper

টোকিয়ো জুড়ে প্রশ্ন একটাই, অলিম্পিক্স কি হবে

কিন্তু কোভিডের সংক্রমণের মাত্রা যে হারে আবার বাড়তে শুরু করেছে তাতে বাস্তব ছবিটা রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৫৮
—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নতুন করে করোনা সংক্রমণ রুখতে গত সপ্তাহে টোকিয়ো এবং সন্নিহিত অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। সঙ্গে এই আশ্বাসও দিয়েছিলেন, নির্বিঘ্নেই এবং সমস্ত প্রতিযোগীদের সুরক্ষিত রেখেই আয়োজিত হবে অলিম্পিক্স।

কিন্তু কোভিডের সংক্রমণের মাত্রা যে হারে আবার বাড়তে শুরু করেছে তাতে বাস্তব ছবিটা রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা আগেই জানিয়ে দিয়েছে, এ বার আর অলিম্পিক্স স্থগিত রাখা সম্ভব নয়। কিন্তু আগামী জুলাই মাসে অলিম্পিক্স আয়োজন আদৌ সম্ভব হবে কি না, তা নিয়েই জোরালো প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে।

আর সেই সম্ভাবনা আরও প্রকট হয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক সময়ের দু’টি জনসমীক্ষায়। জাপানের কয়েকটি সমীক্ষক সংস্থা আমজনতার মতামত জানতে চেয়েছিল এই পরিস্থিতিতে অলিম্পিক্স আয়োজন কতটা বাস্তবোচিত হবে? ৮০ শতাংশ মানুষ জানিয়ে দিয়েছেন হয় অলিম্পিক্স স্থগিত রাখা হোক অথবা সময়সীমা আরও একটি পিছিয়ে দেওয়া হোক। সেই জনমতই উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে টোকিয়ো অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটির সদস্যদের।

টোকিয়ো সোফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক কোইচি নাকানো বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেছেন, “জাপানের বড় অংশের মানুষ এখন অলিম্পিক্স আয়োজনের তীবের বিরোধী হয়ে পড়েছেন। এবং সেই বিরোধিতা বেড়ে গিয়েছে গত সপ্তাহে সরকার জরুরি অবস্থা জারি করার পরে। সকলের মধ্যেই একটা ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে যে, এই বছরেও অলিম্পিক্স আয়োজন কোনও অবস্থায়

সম্ভব নয়।”

কিন্তু অলিম্পিক্স বাতিল হওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশীয় অর্থনীতির সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে চিড় ধরার মতো সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে দেশ জুড়ে অলিম্পিক্স বিরোধিতার হাওয়ায়। ইতিমধ্যে এক বছর অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ায় করদাতা এবং সম্প্রচারকারী চ্যানেলগুলিকে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। তারই সঙ্গে এমন ইঙ্গিতও মিলেছে যে, কোনও কারণে টোকিয়োয় অলিম্পিক্স স্থগিত হয়ে গেলে চিন সেই দায়িত্ব পালন করতে তৈরি। নাকানোর কথায়, “এশীয় মানচিত্রে জাপানের যে শক্তপোক্ত অবস্থান ছিল, তা দারুণ ভাবে ব্যাহত হতে পারে অলিম্পিক্স স্থগিত হয়ে গেলে। বিশেষ করে, তার সঙ্গে চিরকালীন প্রতিপক্ষ চিনের স্বার্থ জড়িয়ে পড়ায়।” নাকানো আরও মনে করেন, অলিম্পিক্স স্থগিত হলে জাপানের রাজনীতিতেও ভয়ঙ্কর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তবে আয়োজক কমিটির সদস্যরা এখনও মনে করেন, নির্দিষ্ট সময়েই অলিম্পিক্স আয়োজিত হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিযোগীদের করোনার হাত থেকে সুরক্ষিত রেখেই তা আয়োজিত হবে। বরং এক ধাপ এগিয়ে আয়োজকেরা এই দাবিও করছেন যে, আগামী মার্চে গোটা দেশ জুড়ে দশ হাজার রানার অলিম্পিক্স মশাল নিয়ে দৌড়বেন। কিন্তু সেখানেও উল্টো সুর শোনা গিয়েছে টোকিয়ো মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ আতসুয়ো হামাদার কথায়। তিনি জানিয়েছেন, দেশের সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে যদি সংক্রমণের মাত্রা আরও বেড়ে যায়, তা হলে হিতে বিপরীত হবে। তখন সংক্রমণ রোখা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনাকে রুখতে যে ধরনের বিশেষ জৈব সুরক্ষিত বলয় তৈরি করে বিভিন্ন দেশে খেলাধুলো শুরু হয়েছে, সেই পদ্ধতি অলিম্পিক্সে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে খরচের মাত্রা আরও বেড়ে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিতে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ভবিষ্যতে। সব মিলিয়ে টোকিয়ো অলিম্পিক্স নিয়ে অনিশ্চয়তার ছায়া ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে।

Tokyo olympics 2021 Coronavirus Japan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy