একসময় মুম্বইয়ের ঘরোয়া ক্রিকেটার হিসাবে নাম ছিল তাঁর। খেলেছেন ভারতীয় দলে। সেই সময়ে তাঁর সতীর্থ ছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। পরে অভিনয়ও করেছেন তিনি। ছিলেন সঞ্জয় দত্তের সহ-অভিনেতা। সেই সলিল আঙ্কোলা জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় নিয়ে মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, মরে যেতেও পারতেন তিনি।
বিকি লালওয়ানির ইউটিউব চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকারে আঙ্কোলা বলেন, “দুঃখে মদ খাওয়া শুরু করেছিলাম। ১৯৯৭ সালে জীবনের সেরা ফর্মে ছিলাম। হঠাৎ চোট পেয়ে গেলাম। সেই সময়ে শ্রীনাথের চোট ছিল। মনোজ প্রভাকরও দলে জায়গা পাচ্ছিল না। কপিল পাজি অবসর নিয়েছিল। তাই আমিই এক নম্বর ছিলাম। সেই সময়েই চোট পেলাম। এক মুহূর্তে সব ভেস্তে গেল।”
তার পর আর জাতীয় দলে খেলেননি আঙ্কোলা। খেলাও দেখেননি দীর্ঘ দিন। আঙ্কোলা বলেন, “আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না, ১৯৯৯-২০০০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আমি একটা ম্যাচও দেখিনি। বীরেন্দ্র সহবাগের খেলা দেখিনি। বিরাট কোহলির অভিষেক দেখিনি। জাহির খানের বোলিংও দেখিনি। এমনকি, আমার বন্ধু অজিত আগরকরের বোলিংও দেখিনি। কেন? আমার ক্রিকেট দেখতেই ভাল লাগত না।”
এমন একটা সময় এসেছিল, যখন তিনি সারা দিন মদ্যপান করতেন। মদেই ডুবে থাকতেন। আঙ্কোলা বলেন, “দিন দিন আমার মদ্যপান বেড়েছে। একসময় তো ২৪ ঘণ্টা মদ্যপান করতাম। জীবন থেকে পালাতে চাইতাম। অনেকেই আমাকে থামানোর চেষ্টা করেছে। কারও কথা শুনিনি। পরে একটা সময় রিহ্যাব করেছি। মদ ছাড়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি।”
অতিরিক্ত মদ্যপান করায় শরীর খারাপ হয়েছিল আঙ্কোলার। হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল তাঁকে। সেখান থেকে ফিরেছেন তিনি। আঙ্কোলা বলেন, “ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। ২০১৪ সালে মরেও যেতে পারতাম। তিন বার আইসিইউতে ভর্তি হয়েছি। প্রতি বারই সুস্থ হয়ে ফিরেছি।” এখন অবশ্য মদ্যপান ছেড়ে দিয়েছেন আঙ্কোলা। ভারতের সব খেলা বাড়িতে বসে দেখেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
১৯৮৯ সালের ১৫ নভেম্বর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্টে অভিষেক হয়েছিল আঙ্কোলার। সেই টেস্টে অভিষেক হয়েছিল সচিনেরও। কিন্তু কেরিয়ারে ওই একটি টেস্টই খেলেছেন আঙ্কোলা। নিয়েছেন ২ উইকেট। সেই বছরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এক দিনের দলেও অভিষেক হয়েছিল আঙ্কোলার। ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ২০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। নিয়েছেন ১৩ উইকেট। ১৯৯৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের পর আর দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাননি আঙ্কোলা।
ক্রিকেট কেরিয়ার শেষ হওয়ার পর অভিনয়ও করেছেন আঙ্কোলা। ন’টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। একটি ছবিতে তাঁর সহ-অভিনেতা ছিলেন সঞ্জয়। ছোট পর্দাতেও কাজ করেছেন তিনি। ২০১৩ সালের পর থেকে আর অভিনয়ের দুনিয়াতেও দেখা যায় না আঙ্কোলাকে।