Advertisement
E-Paper

রিফ্লেক্স আর টেকনিকে কামাল ঋদ্ধির, বলছেন পণ্ডিতরা

স্পাইডারম্যান— ব্যাটম্যান— সুপারম্যান— ‘ঋদ্ধিম্যান’। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘন ঘন পোস্ট হচ্ছে এই মেসেজ। সঙ্গে ঋদ্ধিমান সাহার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে শূন্যে বল ছোঁ মেরে নেওয়ার দৃশ্য।

রাজীব ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৪
বিপজ্জনক হওয়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন স্টিভ স্মিথ। তাঁকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাস অশ্বিন ও কোহালির। ছবি: পিটিআই।

বিপজ্জনক হওয়ার ভয় দেখাচ্ছিলেন স্টিভ স্মিথ। তাঁকে ফিরিয়ে উচ্ছ্বাস অশ্বিন ও কোহালির। ছবি: পিটিআই।

স্পাইডারম্যান— ব্যাটম্যান— সুপারম্যান— ‘ঋদ্ধিম্যান’।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘন ঘন পোস্ট হচ্ছে এই মেসেজ। সঙ্গে ঋদ্ধিমান সাহার ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে শূন্যে বল ছোঁ মেরে নেওয়ার দৃশ্য।

কেউ কেউ লিখলেন, ‘ফ্লাইং জাটের পর এ বার ফ্লাইং সাহা নামের একটা ছবিও তৈরি করা উচিত।’ ‘ফ্লাইং সাহা’ নামের একটা হ্যাশট্যাগও তৈরি হয়ে গেল। ভারতীয় দলেরই ক্রিকেট তারকা রোহিত শর্মা দিলেন এই নাম। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘এখন থেকে এই নামেই সবাই ডাকব ঋদ্ধিমানকে’। তিনি আবার মনে করিয়ে দেন, দিল্লিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও এমনই একটা ক্যাচ ধরেছিলেন ঋদ্ধি।

বৃহস্পতিবার শেষ বিকেলে যে ঘটনাটা ঘটালেন ঋদ্ধি পুণের এমসিএ স্টেডিয়ামে, তার পর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। উমেশ যাদবের শর্ট পিচড বলটা অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে যাচ্ছিল। উল্টো দিকে স্টিভ ও’কিফ। বলটা কাট করতে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে বলটা স্লিপের দিকে উড়ে যায়। ঋদ্ধিমান ডান দিকে ডাইভ মেরে শরীরটাকে শূন্যে ভাসিয়ে ক্যাচটা তুলে নেন।

এমন অসাধারণ ক্যাচ দেখে ভারতীয় দলের প্রাক্তন উইকেটকিপার কিরণ মোরে উচ্ছ্বসিত। সন্ধ্যায় ফোনে বলছিলেন, ‘‘ওর রিফ্লেক্স যে ভাল জানতাম। আজকের এই ক্যাচটা বুঝিয়ে দিল আরও উন্নতি করেছে রিফ্লেক্সে। ফিটনেসেও আগের চেয়ে বেশি মন দিচ্ছে বোঝা যাচ্ছে।’’ কিন্তু শুধু রিফ্লেক্সেই কি এমন ক্যাচ ধরা যায়? ভারতীয় দলের আর এক প্রাক্তন কিপার চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত বললেন, ‘‘শুধু রিফ্লেক্স ছিল না এটা। বাড়তি চেষ্টাও ছিল এর মধ্যে। সাহার এই মরিয়া ভাবটাই ওকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। এখনই সারা দেশে ওর ধারেকাছে কেউ নেই টেস্টে কিপিং করার মতো।’’

বাংলার প্রাক্তন উইকেটকিপার সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘আমি মনে করতে পারছি না, সৈয়দ কিরমানি, ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার এ রকম ক্যাচ খুব একটা ধরেছে বলে। এই ধরনের ক্যাচ নিতে বেশি দেখেছি অ্যালান নট, রডনি মার্শদের। ঋদ্ধির ক্যাচটার ক্ষেত্রে ওর রিফ্লেক্সটা খুব ভাল কাজ করেছে। টেকনিকটাও দারুণ। না হলে বলের কাছে হাত নিয়ে যেতে পারত না।’’

অবিশ্বাস্য ওই ক্যাচ বারবার দেখানো হচ্ছিল টিভি-তে। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরো ভাইরাল হয়ে যায় ঋদ্ধির এই ক্যাচ নেওয়ার ছবি। বিসিসিআই-এর টুইটার হ্যান্ডলে সেই ভিডিও পোস্ট করে লেখা হয় ‘সুপারম্যান অর ঋদ্ধিমান?’

বিকেলে টিভি বক্সে বসে রবি শাস্ত্রী বলছিলেন, ‘‘এই একটা ক্যাচের জন্যই ঋদ্ধিমান সাহাকে আমি ম্যান অব দ্য ম্যাচ ঘোষণা করে দিতে পারি।’’

ও’কিফের উইকেটটা যে বঙ্গ উইকেটকিপারই তাঁকে দিলেন, তা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই উমেশের। দিনের শেষে টিভি ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ‘‘দুর্দান্ত ক্যাচটা নিল। এ সব ক্যাচ সাধারণত হাত থেকে ফস্কেই যায়। আমি ভেবেছিলাম এটাও ফস্কে যাবে। দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলাম ও ধরে নিয়েছে।’’

ব্যাটসম্যান ও’কিফ আকস্মিক ভাবে এমন আউট হয়ে প্রথমে একটু থতমত খেয়ে যান। কয়েক সেকেন্ড পরে ঘটনাটা উপলব্ধি করতেই ক্রিজ ছেড়ে হাঁটা লাগান। তিনিও কয়েক সেকেন্ড যেন ঋদ্ধি-ম্যাজিকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন।

Reflex and Techniques Wriddhiman Saha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy