Advertisement
E-Paper

শতবর্ষে বিনিয়োগকারী নিয়ে সঙ্কটে ইস্টবেঙ্গল

ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহলে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল গত মরসুমে সুপার কাপে খেলা নিয়ে। লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তারা বেঙ্গালুরুতে গিয়ে বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পরেও সমস্যা মেটেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০৪:১৫
ধোঁয়াশা: আলেসান্দ্রোর ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র

ধোঁয়াশা: আলেসান্দ্রোর ভবিষ্যৎ নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। ফাইল চিত্র

শতবর্ষে লগ্নিকারী হারাতে পারে ইস্টবেঙ্গল! মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে শেষ হতে চলেছে মধুচন্দ্রিমা।

ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহলে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল গত মরসুমে সুপার কাপে খেলা নিয়ে। লাল-হলুদের শীর্ষ কর্তারা বেঙ্গালুরুতে গিয়ে বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পরেও সমস্যা মেটেনি। সুপার কাপে না খেলার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা। তাঁদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার একাধিক অভিযোগও করা হয় লাল-হলুদ শিবির থেকে। বিচ্ছেদের সম্ভাবনাও তৈরি হয়।

এই মরসুমে ডুরান্ড কাপে খেলা নিয়েও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিনিয়োগকারী সংস্থা অনূর্ধ্ব-১৯ দল পাঠানোর পক্ষে। আপত্তি জানান ক্লাব কর্তারা। শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগকারী সংস্থা পূর্ণশক্তির দল পাঠানোর সম্মতি দেয়। কিন্তু চব্বিশ ঘণ্টা আগে ইস্টবেঙ্গলের শতবার্ষিকী সূচনাকে কেন্দ্র করে চরমে পৌঁছয় সংঘাত। বিনিয়োগকারী সংস্থাকে উপেক্ষা করাই নয়, আশ্চর্যজনক ভাবে পুরনো সংস্থার প্রতীক দেওয়া জার্সি ব্যবহার করা হয় শোভাযাত্রায়। দেখা যায়নি কোচ আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস গার্সিয়া-সহ এই মরসুমের দলের কাউকেই। জল্পনা শুরু হয়, এ বার কি তা হলে কি বিচ্ছেদ নিশ্চিত? বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বিনিয়োগকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই নাকি ক্লাবকে জানিয়ে দিয়েছে, তারা সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায়। অভিযোগ, ক্লাবের কয়েক জন কর্তার সঙ্গে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে আজ, মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে বৈঠকের পরে।

ক্ষোভ রয়েছে দুই শিবিরেই। বিনিয়োগকারী সংস্থার অভিযোগ, ক্লাব কর্তারা যুদ্ধংদেহি মনোভাব নিয়ে সব ব্যাপারে বিরোধিতা করছেন। ক্ষমতা ধরে রাখাই ক্লাব কর্তাদের মূল উদ্দেশ্য। অথচ, দল গড়তে খরচ করছে বিনিয়োগকারী সংস্থা। ৭০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতেই। এই পরিস্থিতিতে একসঙ্গে থাকা অসম্ভব।

ক্লাব কর্তাদের পাল্টা অভিযোগ, দল গঠন থেকে শুরু করে সব ব্যাপারেই বিনিয়োগকারী সংস্থা তাঁদের অন্ধকারে রেখে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ফলে শতবর্ষে সব চেয়ে দুর্বল দল হয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। এটিকে-তে জবি জাস্টিনের চলে যাওয়া নিয়েও বিনিয়োগকারী সংস্থাকে দায়ী করছেন তাঁরা। ক্লাব কর্তাদের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, মোহনবাগানের এক শীর্ষ কর্তার পরামর্শেই চলছেন বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রধান। এই কারণে আইএসএলে খেলার সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে বদলান তিনি। সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন আইএসএলকে সর্বোচ্চ লিগ ঘোষণা করেছে। ফলে আই লিগ পরিণত হয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণির লিগে।

বিনিয়োগকারী সংস্থা চলে গেলে ইস্টবেঙ্গলের ভবিষ্যৎ কী? আর্থিক সঙ্কটের মোকাবিলা কী ভাবে হবে? স্প্যানিশ কোচ, ফিজিক্যাল ট্রেনার থেকে ফুটবলার— প্রত্যেকের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিনিয়োগকারী সংস্থা। বিচ্ছেদ হলে কি তাঁরাও চলে যাবেন? ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন তারকা শ্যাম থাপা বললেন, ‘‘আমি শুধু বিস্মিত নই, অত্যন্ত চিন্তিত। এই বিনিয়োগকারী সংস্থা চলে গেলে ইস্টবেঙ্গলের ক্ষতি তো হবেই। জানি না, নতুন কোনও সংস্থা এলে তারা কতটা সাহায্য করতে পারবে।’’ আর এক প্রাক্তন গৌতম সরকারও বলেছেন, ‘‘বিনিয়োগকারী সংস্থা চলে যাওয়া বড় ধাক্কা হবে। নতুন লগ্নিকারী সংস্থা খুঁজে পাওয়া কঠিন।’’

সোমবারই ক্লাবের এক শীর্ষ কর্তা বেঙ্গালুরুতে পুরনো বিনিয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা নাকি ক্লাবের শতবর্ষ উৎসবে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্ত এই অবস্থায় আদৌ কি তারা আগ্রহী হবে?

Football East Bengal Quess Corp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy