Advertisement
E-Paper

সন্তোষ অসন্তোষ আনলেন বাগানে

পাহাড়ে উঠেই হোঁচট খেলেন সনি নর্ডি-পিয়ের বোয়ারা! মোহনবাগানের বারো ম্যাচ অপরাজিত থাকার অশ্বমেধের ঘোড়া রুখে দিলেন সন্তোষ কাশ্যপ। মধুর প্রতিশোধও নিলেন পুরানো দলের বিরুদ্ধে। কেন দু’ দু’বার গোল করে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত এ ভাবে হারল মোহনবাগান?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:০২
শিলংয়ে ধাক্কা খেল সঞ্জয়-রথ।

শিলংয়ে ধাক্কা খেল সঞ্জয়-রথ।

মোহনবাগান ২ (বলবন্ত, সনি)
রয়্যাল ওয়াহিংডো ৩ (জ্যাকিচাঁদ, থিওবোল্ড পেনাল্টি, নওবা)

পাহাড়ে উঠেই হোঁচট খেলেন সনি নর্ডি-পিয়ের বোয়ারা!
মোহনবাগানের বারো ম্যাচ অপরাজিত থাকার অশ্বমেধের ঘোড়া রুখে দিলেন সন্তোষ কাশ্যপ। মধুর প্রতিশোধও নিলেন পুরানো দলের বিরুদ্ধে।
কেন দু’ দু’বার গোল করে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত এ ভাবে হারল মোহনবাগান?
শিলংয়ে ফোন করে জানা গেল, মূলত ওয়াহিংডো কোচের স্ট্র্যাটেজি আর বাংলার ক্লাবের বাতিল এক ফুটবলারের জেদের কাছেই হারতে হয়েছে বাগানকে। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে দূরপাল্লার শটে নওবা সিংহের গোলই তো সনি-বোয়াদের আছড়ে ফেলল মাটিতে।
বাগান কোচ অবশ্য তা মানতে নারাজ। নিজের মাঠে রয়্যাল ওয়াহিংডো এ বার অনেকটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো খেলছে। শনিবার সেই দলের কাছে হেরে সঞ্জয় সেন সরাসরি দায় চাপাচ্ছেন রেফারির উপর। ‘‘আমরা হারিনি, জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলবন্তের পরিষ্কার গোল অফসাইড বলে বাতিল হয়েছে। কাতসুমির গোলও একই কারণে বাতিল হয়েছে। অকারণে ওদের পেনাল্টি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেওয়া হয়নি। এটা মানা যায় না।’’ বাগান কর্তারাও রেফারিকে দায়ী করে চিঠি দিতে চলেছেন ফেডারেশনকে। ক্ষুব্ধ ক্লাব সচিব অঞ্জন মিত্রও কোচের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘‘রেফারিং নিয়ে আমরা আগেও চিঠি দিয়েছি। আবারও দেব। যা শুনলাম তাতে রেফারিই আমাদের হারিয়ে দিয়েছে।’’
বাগান কোচের দাবি শুনে হেসেছেন পাহাড়ি টিমের কোচ। স্বস্তি মাখানো গলায় বলে দিয়েছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে থাকতে এ দিনের জয়টা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মোহনবাগান ভাল টিম। তবে এ দিন আমার ছেলেরাই দাপটের সঙ্গে খেলেছে। পুরো দ্বিতীয়ার্ধ তো আমরাই খেললাম।’’
ম্যাচের শুরুটা অবশ্য খারাপ করেনি মোহনবাগান। বলবন্তের গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় তারা। এর পরেই কোনও এক অজ্ঞাত কারণে রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে সঞ্জয়ের টিম। হয়তো তাদের ধারণা ছিল, এতে আটকে থাকবেন পাহাড়িরা। আর সেই মনোভাবই বুমেরাং হয়ে যায় বাগানের কাছে। স্টেডিয়াম ভর্তি করে এসেছিলেন রয়্যাল সমর্থকরা। তাদের সম্মিলিত শব্দব্রহ্মে কেঁপে যান সনি-কাতসুমিরা। ১-০ পিছিয়ে থাকা অবস্থায় কাশ্যপের একটা নিখুঁত চাল আরও বেকায়দায় ফেলে দেয় বাগানকে। উইংয়ের শক্তি বাড়াতে টিমের গতিশীল জ্যাকিচাঁদের জায়গা বদল করে দেন ওয়াহিংডো কোচ। নিয়ে আসেন ডানদিকে। মণিপুরী এই মিডিও-র ক্রমাগত দৌড়ে বাগান আরও বিপদে পড়ে যায়। জ্যাকির দৌড়ে লেফট ব্যাকে খেলা ধনচন্দ্র সিংহ তখন দিশাহারা। নিট ফল, ১-১ করেন জ্যাকিচাঁদ।
এর পর অবশ্য কাতসুমি এবং বলবন্তের একটি করে গোল অফসাইড বলে বাতিল হয়। বলবন্তের গোলটি বাতিল হওয়ায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। ফুটবলার থেকে কোচ, ম্যানেজার প্রত্যেকেরই দাবি, ‘‘কাতসুমির গোলটা নিয়ে তাও পঞ্চাশ শতাংশ ধন্ধ রয়েছে। কিন্তু বলবন্তের গোলটা কোনও ভাবেই অফসাইড ছিল না।’’ বাগানের টিম ম্যানেজার শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘যে টিমে সাত জন মণিপুরী ফুটবলার খেলছে, সেই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন মণিপুরী রেফারিকে। আমাদের বিরুদ্ধেই যে সব সিদ্ধান্ত যাবে, এটা তো স্বাভাবিক।’’
এত সবের পরও অবশ্য সনির গোলে ২-১ করেছিল মোহনবাগানই। কিন্তু শেষ পাঁচ মিনিটেই ম্যাচের রং বদলে যায়। তুল্যমুল্য ম্যাচ অপ্রত্যাশিতভাবে হঠাৎ-ই ঢলে পড়ে পাহাড়ি দলের দিকে। দু’টি গোল পেয়ে যায় রয়্যাল ওয়াহিংডো। রেফারির সঙ্গে অকারণ ঝামেলায় জড়িয়ে লাল কার্ড দেখেন বলবন্ত। শুধু লাল কার্ড দেখাই নয়, মাঠের বাইরে যাওয়ার আগে দলের আরও ক্ষতি করে বসেন বাগানের পঞ্জাবি স্ট্রাইকার। তাঁর হাতে বল লাগায় পেনাল্টি পায় ওয়াহিংডো। যা থেকে থিওবোল্ড ২-২ করেন। গোল করেও তাই ভিলেন হয়ে যান বলবন্ত। নওবা যখন ৩-২ করেন তখন বাগান আবার দশ জনে খেলছে। এ দিনের ম্যাচে বাগানের হারের জন্য অনেকেই তাই বলবন্তকে দায়ী করছেন।
সমতলে ভাল খেললেও পাহাড়ে গিয়ে মোহনবাগানের তিন গোল খাওয়া যেন এ বার আই লিগে নিয়ম হয়ে উঠেছে। এর আগে লাজং এফসি-র বিরুদ্ধে জিতলেও তিন গোল হজম করতে হয়েছিল বাগানকে। এ বার আবার ওয়াহিংডোর কাছেও তিন গোল খেল তারা। আর যার জেরে হাতছাড়া হল অপরাজিত থাকার রেকর্ড। সনিরা (২৮ পয়েন্ট) শীর্ষস্থান ধরে রাখলেও ব্যবধান কমল দুইয়ে থাকা ওয়াহিংডোর (২৬) সঙ্গে। তবে বাগান দু’ম্যাচ কম খেলেছে।

মোহনবাগান: দেবজিৎ, ধনচন্দ্র, বেলো, কিংশুক, প্রীতম, শেহনাজ, নর্ডি, ডেনসন (শৌভিক), কাতসুমি, বোয়া, বলবন্ত।

Mohun Bagan Royal Wahingdoh I-League football Santosh Kashyap
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy