সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জেরে নেপালের অর্থনীতি কতটা ধাক্কা খেয়েছে, এ বার সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনল কাঠমান্ডু। গত সেপ্টেম্বরে নেপালে কেপি শর্মা ওলির সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিল সে দেশের তরুণ প্রজন্ম (জেন জ়ি)। ওই বিক্ষোভের জেরে পতন হয় ওলি সরকারের। বর্তমানে নেপালের প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বার সেই অন্তর্বর্তী সরকার জানাল, জেন জ়ি বিক্ষোভের জেরে নেপালের অর্থনীতিতে ৫৮ কোটি ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৫২৯৪ কোটি টাকার) বেশি ক্ষতি হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে নেপালে তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে ওই বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার নেয়। বিক্ষোভের সময়ে ৭৭ জন নিহত হন। জখম হন অন্তত ২০০০ জন। বিভিন্ন সরকারি ভবনে আছড়ে পড়ে জনতার ক্ষোভ। সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর দফতর, সুপ্রিম কোর্ট, পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনীতিকের বাড়িতেও হামলা হয়। রাজনীতিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বেশ কয়েক জন ব্যক্তির ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও হামলা হয়। অগ্নিসংযোগ করা হয় একের পর এক সরকারি এবং বেসরকারি সম্পত্তিতে। বিক্ষোভের জেরে পতন হয় ওলি সরকারের। নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কীকে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেন বিক্ষোভকারীরা।
শুক্রবার সেই অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী কার্কীর দফতর থেকে বিক্ষোভে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব প্রকাশ করা হল। জানানো হল, তিন মাস আগে ওই বিক্ষোভের সময়ে নেপালের অর্থনীতিতে ৫৮ কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। যে সব সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেগুলি পুনরায় নির্মাণ করতে আনুমানিক ২৫ কোটি ডলার খরচ হবে। নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার এই সম্পত্তিগুলি পুনর্গঠনের জন্য একটি সরকারি তহবিল গঠন করেছে। এখনও পর্যন্ত সাধারণ মানুষ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ১০ লক্ষ ডলারেরও কম অর্থ জমা পড়েছে ওই তহবিলে। বাকি অর্থের ঘাটতি কী ভাবে পূরণ করা হবে, সে বিষয়ে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কিছু জানায়নি অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুন:
গণবিক্ষোভের জেরে গত ৯ সেপ্টেম্বের নেপালে পতন হয় ওলি সরকারের। সরকার পতনের তিন দিন পরে কার্কী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন তিনি। ওই সময়েই নেপালের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়, আগামী ৫ মার্চ নির্বাচন হবে। নেপালের নির্বাচন কমিশনও সেই মতো পদক্ষেপ করেছে। নির্বাচনের নির্ঘণ্টও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে সে দেশে।