Advertisement
E-Paper

সুরজিৎকে মনে করিয়ে দিচ্ছে সনি

শিলিগুড়িতে মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচটা জেতার পর যে প্রশ্নটা এখন উঠছে তা হল—মোহনবাগান আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কি?

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:১৬
নায়ক: মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সনি নর্দে। ফাইল চিত্র

নায়ক: মোহনবাগানকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন সনি নর্দে। ফাইল চিত্র

শিলিগুড়িতে মোহনবাগান ডার্বি ম্যাচটা জেতার পর যে প্রশ্নটা এখন উঠছে তা হল—মোহনবাগান আই লিগে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কি?

আমার মতে ডার্বি জেতার পর আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দৌড়ে মোহনবাগান ফেভারিট। কিন্তু আমার প্রিয় ক্লাবকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে গেলে একটা ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

সনি-প্রণয়দের ড্রেসিংরুমে যেন আত্মতুষ্টি না ঢোকে কোনও মতেই। কারণ সেই খেলোয়াড় জীবন থেকে দেখে আসছি, বড় ম্যাচ যারা জেতে তারা কিন্তু আত্মতুষ্ট হয়ে গিয়ে পরের ম্যাচেই ড্র করে কিংবা হারে। সেখানে ডার্বির পরেই সনিদের খেলতে হবে লাজংয়ের বিরুদ্ধে। বাকি চার ম্যাচের মধ্যে রয়েছে আইজলও।

উনআশির কলকাতা লিগের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সে বার আইএফএ শিল্ডে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু তার পর কলকাতা লিগের ম্যাচগুলোতে পয়েন্ট নষ্ট করে ইস্টবেঙ্গলকে প্রায় চ্যাম্পিয়ন করিয়েই দিচ্ছিলাম। শেষ ম্যাচে গিয়ে স্পোর্টিং ইউনিয়ন-কে হারানোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম আমরা। আসলে বড় ম্যাচ জেতার পর ফুটবলাররা আত্মতুষ্ট হয়ে পড়লে ফোকাসটা নড়ে যায় বাকি ম্যাচগুলো থেকে। আর এখানেই চ্যালেঞ্জ মোহনবাগান কোচ সঞ্জয়ের।

যদি কোচ টিমের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ, ম্যান ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখতে পারে তা হলেই এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। সাতাত্তর-এর ডুরান্ডে আইটিআই-এর বিরুদ্ধে আমাদের পাঁচ গোলে জিততে হতো। কিন্তু আমাদের কোচ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় সে দিন শ্যাম থাপা, সুভাষ ভৌমিক, হাবিবদের আত্মতুষ্টি দূর করে এমন তাতিয়েছিলেন যে, ম্যাচটায় আমরা ছ’গোল দিয়েছিলাম। সঞ্জয়কেও এ বার সেটাই করতে হবে। আমার বিশ্বাস মোহনবাগান কোচ সেটা পারবেও।

এক্ষেত্রে মোহনবাগানে কোচের পাশাপাশি ফুটবলারদের মোটিভেশনের কাজটা করতে পারে সনি। বিশ্রামের পর ওকে অনেক ফিট, মনোযোগী এবং চনমনে দেখাচ্ছে। সনিকে খেলতে দেখলেই আমার টপ ফর্মের সুরজিৎ সেনগুপ্তর কথা মনে পড়ে যায়। দু’জনেই গোলের সামনে নিখুঁত ভাবে কাজের কাজটা করে যায়। যে ভাবে ও খেলছে তাতে খুব দ্রুতই চিমা, এমেকা, মজিদ, ব্যারেটোদের মঞ্চে জায়গা করে নিতে পারবে। ওর আউটসাইড ডজ করে ভিতরে ঢুকে আঠেরো-বিশ গজের শটে গোল করে যাওয়াটা মুগ্ধ হয়ে দেখতে হয়।

চিমার মতো শক্তি বা ব্যারেটো, এমেকা, মজিদের মতো সৃষ্টিশীল হয়তো নয়। কিন্তু সনির একাগ্র মানসিকতাই ওকে বিখ্যাতদের তালিকাভুক্ত করার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সাফল্যের জন্য একাগ্র সনি এক্ষেত্রে আজহার, ডাফি-দের আত্মতুষ্টি মুক্ত রাখার ব্যাপারে উদ্যোগ দেখাতে পারে।

সঞ্জয় বুদ্ধি করে ডার্বি ম্যাচটা ঠিক জিতে নিয়েছে। উল্টোদিকে মর্গ্যান? আই লিগের প্রথমে ডংকে বাদ দিল। তার বদলে যাদের নিয়ে এসেছে সেই ক্রিস পেইন, উইলিস প্লাজারা অতি সাধারণ মানের। আইজল রবিবার বেঙ্গালুরুর কাছে হারায় মোহনবাগানের সঙ্গে ড্র করলেই চলত ইস্টবেঙ্গলের। সেখানে একা উইলিস প্লাজাকে আক্রমণে রেখে যে কাজ হবে না সেটা ইস্টবেঙ্গল কোচ বুঝতে পারবে না! আর সনির ফ্রি-কিকের সময় ওয়াল দাঁড় করানোতেও ভুল ছিল মেহতাবদের। এগুলো কোচকে দেখে ছেলেদের সতর্ক করতে হয়।

কিন্তু ইস্টবেঙ্গলে তা হয়নি। উল্টে মর্গ্যান নিজে ভুল করে কর্তাদের দিকে আঙুল তুলছে। কলকাতা লিগে তো এই দল নিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তখন কেন বলেনি দলটা ও বানায়নি।

মোহনবাগান কোচ সেখানে অনেক পরিণত চাল দিয়েছিল ডার্বিতে। আশা করছি বাকি চার ম্যাচে সঞ্জয় সেই সব তীক্ষ্ণ চালের সঙ্গে ড্রেসিংরুমে আত্মতুষ্টি ঢুকতে দেবে না। স্রেফ এটা করলেই ফের আই লিগ দেখতে পাচ্ছি মোহনবাগানে।

Subrata Bhattacharya Sony Norde Surajit Sengupta Mohun Bagan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy