ভারত বনাম পাকিস্তান আসন্ন সিরিজ ঘিরে অনিশ্চয়তার মধ্যে নাটকীয় ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন পাকিস্তানের বিশ্বজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ইমরান বলে এলেন, ভারত-পাক সিরিজ হওয়া উচিত!
পাকিস্তান সরকার সিরিজ নিয়ে ছাড়পত্র দিয়ে দিলে কী হবে, মোদী সরকার এখনও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি। এবং যত দিন এগোচ্ছে, সিরিজ-সম্ভাবনা ততই কমছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহরিয়র খান এ দিনও বলে রেখেছেন যে, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে সিরিজ করতে না পারলে ২০১৬-তে ভারত-পাকিস্তান সিরিজের আর কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ তার পরে দু’দেশেরই ঠাসা ক্রীড়াসূচি। এ সবের মধ্যে ইমরান শুক্রবার দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বলে দেন যে, দু’দেশের মধ্যে ক্রিকেট হওয়া উচিত। ‘‘মোদীজি শুনে হাসলেন। বুঝলাম না যে, ওটা হ্যাঁ নাকি না। তবে আমি পজিটিভ লোক। পজিটিভ ভাবেই ব্যাপারটাকে দেখতে চাইব,’’ পরে এক অনুষ্ঠানে বলে দেন ইমরান, বর্তমানে যিনি পাক রাজনীতির এক বিশিষ্ট চরিত্র।
নয়াদিল্লির ওই অনুষ্ঠানে ইমরান আরও বলেন যে, ‘‘কয়েক জন বিকৃত লোকের জন্য কি গোটা একটা সমাজকে বয়কট করে দেওয়া হয়? ঠিক তেমনই সন্ত্রাসের উত্তর কখনও দু’দেশের মধ্যে ক্রিকেট বন্ধ করা হতে পারে না।’’ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘আমি এক সময় দক্ষিণ আফ্রিকাকে ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করাটা সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু সেটা বর্ণবৈষম্য নিয়ে ওদের মনোভাবের জন্য। ওখানে তো মানুষের অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হচ্ছিল। কিন্তু ওটা বাদ দিলে আমি সব সময় মনে করে এসেছি যে, খেলাধুলো কখনও বন্ধ থাকা উচিত নয়। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে, যোগাযোগ বাড়াতে হলে তো এটাই প্রয়োজন। সচিন তেন্ডুলকরকে পাকিস্তান কম ভালবাসে না। আবার ওয়াসিম আক্রমকে ভারত অসম্ভব ভালবাসে।’’
ইমরান বলতে বলতে অতীতেও ফিরে গিয়েছেন। বলে দিয়েছেন যে, দেশভাগকে ঘিরে প্রচুর হিংসার গল্প তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু ভারতে ক্রিকেটার হিসেবে আসার পর তাঁর ধারণাই বদলে যায়। ‘‘ভারত সফরে এসে বুঝেছিলাম যে, দু’দেশের মানুষ তো একই রকম। একই রকম রুচি। একই পছন্দ। একই রকম গান আমরা শুনি। পাকিস্তানও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। আমাদের তাই উচিত নিজেদের মধ্যেকার দূরত্বকে কমানো, বাড়ানো নয়।’’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা কপিল দেবও বলে দেন যে, দু’দেশের প্লেয়ারদের মধ্যে খেলা নিয়ে কোনও সমস্যা থাকে না। কিন্তু দেশের সরকারের নীতির বিরুদ্ধাচরণও সম্ভব নয়। ভারতের প্রথম বিশ্বজয়ী অধিনায়কের বক্তব্য, ‘‘প্লেয়ারদের কোনও সমস্যা থাকে না। কিন্তু দেশের নীতিও মানতে হয়। দু’দেশের বোর্ড চায় খেলতে। কিন্তু এখানে ইমরান বা কপিল কী মনে করল-না করল, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে সরকারের সিদ্ধান্তই শেষ কথা।’’