Advertisement
০৪ মে ২০২৪
উৎসবের শহরে তাতছে ডার্বির মেজাজ

তারকাদের টানে আজ মাঠে পঙ্কজরা

এত দিন টিভিতে দেখেছেন। এ বার চাক্ষুস করার পালা। কেউ গাড়ি চালান। কেউ লটারি বিক্রি করেন। কারও জীবিকা আবার চাষবাস। জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত এলাকা রাজগঞ্জের এই বাসিন্দাদের মিল এক জায়গায়— সকলেই ফুটবল পাগল। উইলিস প্লাজা, ওয়েডসন বা সনি নর্ডি, ডাফিদের এত দিন দেখেছেন টিভির পর্দায়।

মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উৎসাহ শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উৎসাহ শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

এত দিন টিভিতে দেখেছেন। এ বার চাক্ষুস করার পালা।

কেউ গাড়ি চালান। কেউ লটারি বিক্রি করেন। কারও জীবিকা আবার চাষবাস। জলপাইগুড়ির প্রত্যন্ত এলাকা রাজগঞ্জের এই বাসিন্দাদের মিল এক জায়গায়— সকলেই ফুটবল পাগল। উইলিস প্লাজা, ওয়েডসন বা সনি নর্ডি, ডাফিদের এত দিন দেখেছেন টিভির পর্দায়। পছন্দের এই ফুটবলারদের খেলা দেখতে পঙ্কজ রায়, মিঠুন রায়, পাপা হেলা, সুমন্ত রায়েরা আজ, রবিবার হাজির হচ্ছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে।

বেশ কয়েক বছর আগেও অবশ্য তাঁদের মধ্যে ফুটবল নিয়ে তেমন উদ্দীপনা ছিল না। কিন্তু এখন তাঁরা ফুটবলের অন্ধ ভক্ত। কেউ ইস্টবেঙ্গল, কেউ আবার মোহনবাগানের সমর্থক। তাঁদের মধ্যে এই উৎসাহ এনেছে ইস্টবেঙ্গল-রাজগঞ্জ ওয়েলফেয়ার ফুটবল অ্যাকাডেমি। বছর সাতেক আগে রাজগঞ্জ ব্লকে যৌথ ভাবে এই অ্যাকাডেমি চালু করে ইস্টবেঙ্গল এবং স্থানীয় রাজগঞ্জ ওয়েলফেয়ার সংস্থা। আবাসিক এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে অক্ষয় সরকার, অমরজিৎ ওঁরাও, প্রদীপ রায়দের মতো বেশ কয়েক জন অনূর্ধ্ব ১৮ ও ১৯ ইস্টবেঙ্গল দলে খেলেছে। অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় দলে গোলকিপার হিসেবে রয়েছে এই অ্যাকাডেমির সোমিক মিত্র। বাড়ি রাজগঞ্জেই। আর এ সবই ফুটবল নিয়ে চর্চা তৈরি করেছে এলাকায়।

গত বছরও শিলিগুড়িতে ডার্বি দেখতে এসেছিলেন অনেকে। এ বার আরও অনেকে আসছেন। অ্যাকাডেমির অন্যতম কর্তা সৌমিক মজুমদার বলেন, ‘‘গ্রামের অন্তত ২০০ জন স্টেডিয়ামে হাজির হতে ইচ্ছুক। আমাদের কাছে টিকিট চাইছেন। ইস্টবেঙ্গলের কর্মকর্তাদের বলেছি। তাঁরা ওই বাসিন্দাদের জন্য ভাবছেন বলে জানিয়েছেন।’’ ইস্টবেঙ্গলের গ্রাউন্ড সচিব বাবু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই এলাকায় মানুষজনকে ফুটবলে উৎসাহী করা যাচ্ছে, এটা বড় ব্যাপার। আগে জানলে কিছু টিকিট গ্রামেই পাঠানোর ব্যবস্থা করতাম। তবে কিছু নিশ্চয়ই করব।’’

অ্যাকাডেমির ছাত্র, রাজগঞ্জের মহেন্দ্রনগরের বাসিন্দা প্রদীপ রায়ের কথায়, ‘‘অ্যাকাডেমি হওয়ার পরে আমি সুযোগ পাওয়ার পরে বাড়ির লোকেরা ফুটবল নিয়ে উৎসাহী হয়েছে।’’ তিনি জানান, তাঁর দাদা সুমন্ত রায় ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। কিন্তু কখনও মাঠে বসে খেলা দেখেননি। এ বার সেই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চান। রবি মণ্ডল, প্রণব রায়েরা আবার মোহনবাগান ভক্ত। রাজগঞ্জের মগরাডাঙির পঙ্কজ রায় বলেন, ‘‘গ্রামে ফুটবল একটা চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। বন্ধু সুনীল মণ্ডলের সঙ্গে খেলা দেখতে যাব ঠিক করেছি। অ্যাকাডেমির এক কর্মকর্তা টিকিটের ব্যবস্থা করে দেবেন বলেছেন।’’

ওই এলাকার অনেকে শনিবার শিলিগুড়িতে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে নিয়েছেন। মাঠে বসে প্রিয় খেলোয়াড়দের খেলা দেখার ছাড়পত্র হাতে পেয়েই চওড়া হাসছেন সৌরভ মল্লিক, প্রণবেশ মণ্ডলেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Derby Match
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE