লড়াকু: ১৯৯০ উইম্বলডনে শাসন মার্টিনার। ফাইল চিত্র
আবার ক্যানসারে আক্রান্ত মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। মঙ্গলবার সকালে খবরটা শোনার পর থেকেই মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ওর সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয়। বছর দুয়েক আগেও ওর সঙ্গে কথা হয়েছিল। জীবনে ঝড়-ঝাপ্টা কম পেরোতে হয়নি মার্টিনাকে। আমার মতে শুধু টেনিস নয় বিশ্বমঞ্চে সর্বকালের সেরা মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসেবে মার্টিনার নাম লেখা থাকবে।
আমার চোখে টেনিসে পুরুষদের মধ্যে সর্বকালের সেরা যদি রড লেভার হয় তা হলে মেয়েদের সর্বকালের সেরা মার্টিনাই। শুধু টেনিসে ওর অবিশ্বাস্য সাফল্যের জন্যই নয়, জীবনযুদ্ধেও মার্টিনার লড়াই সবার কাছে প্রেরণা। ১৯৫৬ সালে চেকোস্লোভাকিয়ায় জন্ম মার্টিনার। যা এখন চেক প্রজাতন্ত্র। সেই দেশের হয়ে টেনিস জীবন শুরু করলেও ১৯৭৫ সালে আশ্রয় নিতে হয়েছিল মার্কিনযুক্তরাষ্ট্রে। দেশ ছেড়ে আসার পরে মার্টিনার জীবনে শুরু হয় আর এক যুদ্ধ। তার সঙ্গে টেনিস কোর্টে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার চ্যালেঞ্জ তো ছিলই। যার জন্য শুধু প্রতিভা থাকলেই হয় না, অসম্ভব মনের জোরও চাই। দুটো যুদ্ধেই মার্টিনা সমান তালে লড়াই করে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৯৮১ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব পায়। টেনিস বিশ্বেও শাসন চলতে থাকে বাঁ-হাতি কিংবদন্তির।
খেলোয়াড় জীবনে অন্য সব ট্রফি তো ছেড়েই দিলাম শুধু গ্র্যান্ড স্ল্যামই জিতেছে ৫৯টা। সিঙ্গলস, ডাবলস আর মিক্সড ডাবলস মিলিয়ে। সিঙ্গলসে মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯ বার জিতেছে উইম্বলডন। সব মিলিয়ে সিঙ্গলসে ওর গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা ১৮। ৯টা উইম্বলডন ছাড়া চারটে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন, তিনটে অস্ট্রেলীয় ওপেন ও দুটো ফরাসি ওপেন ট্রফি। লিয়েন্ডার পেজের সঙ্গেও তো মিক্সড ডাবলসে দুটো গ্র্যান্ড স্ল্যাম রয়েছে মার্টিনার। ২০০৩ সালে উইম্বলডন আর অস্ট্রেলীয় ওপেনে। কলকাতার মানুষও হয়তো মনে রেখেছে মার্টিনাকে সামনাসামনি দেখার অভিজ্ঞতা। বছর আটেক আগে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রদর্শনী ম্যাচে মার্টিনা খেলে গিয়েছে। অনেক দর্শক হয়েছিল। এত দিন টিভি বা খবরের কাগজে যার লড়াই মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো দেখে এসেছিলেন সে দিন চাক্ষুষ করেছিলেন।
২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের ডাবলসে যখন শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিল মার্টিনা, তখন ওর বয়স প্রায় ৫০। ওই বয়সেও যে টেনিসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দাপট দেখাতে পারে সে কম বয়সে কী রকম খেলোয়াড় ছিল সেটা আন্দাজ করা শক্ত নয়। তাই বলছি মার্টিনা লড়াইয়ের আর এক নাম। তেরো বছর আগেও তো ক্যনসারকে হারিয়েছে, আমি নিশ্চিত এই লড়াইয়েও মার্টিনা জিতে ফিরবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy