বাজপাখির মতো ছোঁ মেরে ঋদ্ধিমানের অবিশ্বাস্য ক্যাচ! ছবি: সংগৃহীত।
চলতি সিরিজে যে দুই অসাধারণ ক্যাচ তাঁকে ‘সুপারম্যান’ বানিয়েছে, সেই দুই ক্যাচের মধ্যে কোনটা সেরা? পুণে টেস্টে শূন্যে শরীর ভাসানো ক্যাচটাকেই এগিয়ে রাখছেন ঋদ্ধিমান সাহা। যে ক্যাচ নেওয়ার পরে ক্রিকেট বিশ্বে তাঁকে নিয়ে আলোড়ন পড়ে যায়।
বাংলার ঋদ্ধির নামের পাশে নানা বিশেষণ বসানো শুরু হয়ে যায় পুণের সেই ক্যাচের পর থেকেই। পুণে টেস্টের সেই ক্যাচ নিয়ে ঋদ্ধিমানের মন্তব্য, ‘‘ওই ক্যাচটা বেশি কঠিন ছিল। কারণ, খুব কম সময় পেয়েছিলাম ওই ক্যাচটা নিতে। কিছুটা হলেও বেশি সময় পাই বেঙ্গালুরুর ক্যাচটাতে। পুণের ক্যাচটা অনেক কঠিনও ছিল।’’
এ বার নতুন গ্লাভসে স্টাম্পের পিছনে আরও ক্ষিপ্রতা দেখাতে পারবেন বলে মনে করছেন ঋদ্ধি। যে গ্লাভস রাঁচী টেস্টেই তাঁর হাতে ওঠার সম্ভাবনা প্রবল। শনিবার এক অনুষ্ঠানে তাঁর অটোগ্রাফ-সহ নতুন ‘সুপারম্যান’ ব্র্যান্ডের সেই গ্লাভস হাতে নিয়ে ঋদ্ধি বললেন, ‘‘এই গ্লাভসের চামড়াটা অনেক নরম। পরে মনে হচ্ছে, এই গ্লাভস হাতে কালই ম্যাচে নামা যেতে পারে। তবু, ক’দিন এই গ্লাভস পরে অনুশীলন করে নিলে হয়তো আরও অভ্যস্ত হয়ে যাব। তখন হয়তো আরও ভাল কিপিং করতে পারব। আমাকে নিয়ে সবার প্রত্যাশা এখন অনেক বেশি। তাই এখন আরও ভাল খেলতে হবে।’’ এ দিন এই অনুষ্ঠানেই জানা গেল, শুধু গ্লাভস নয়, ঋদ্ধির সই করা ‘সুপারম্যান’ ব্র্যান্ডের ব্যাটও আসছে বাজারে।
আরও পড়ুন: জনসনের মুখে বিরাট দ্বৈরথ
এমনিতেই অবশ্য ঘূর্ণি উইকেটে অশ্বিন, জাডেজাদের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে তাঁকে এখন অনেক বেশি চাপ নিতে হচ্ছে। ঋদ্ধিই বললেন এ কথা, ‘‘অশ্বিন, জাডেজারা যতটা বল স্পিন করায়, তাতে কিপ করতে গিয়ে অসম্ভব রিফ্লেক্স আর মনঃসংযোগ লাগে। নিয়মিত কঠিন অনুশীলন না করলে এগুলো ধরে রাখা মুশকিল। আরও সমস্যা হল, বল মাঝে মাঝে ব্লাইন্ড জোনে পড়ে যায়, ব্যাটসম্যান বা তার ব্যাট সামনে এসে যায়। তখন বলের উপর থেকে নজর হারিয়ে যায়।’’ কাজটা ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠছে বলেই হাতে একটা ঠিকঠাক গ্লাভস থাকা দরকার বলে মনে করছেন ঋদ্ধি। যা পরে নিজের দায়িত্বটা নিখুঁত ভাবে পালন করতে পারেন তিনি। সম্ভবত সোমবার, হোলির সকালে রাঁচী রওনা হচ্ছেন ঋদ্ধিমান। তার আগে এই নতুন কিপিং গ্লাভস সংগ্রহ করে নিলেন তিনি।
প্রস্তুত: নতুন ‘সুপারম্যান’ গ্লাভস। যা পরে রাঁচী টেস্টেই নামতে পারেন ঋদ্ধিমান। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
বিশ্বসেরা টেস্ট দলের নিয়মিত কিপারের অবশ্য কোনও প্রিয় কিপিং গ্লাভস এখনও নেই, যা তিনি স্মারক হিসেবে সারা জীবন নিজের কাছে রেখে দিতে চান। তবে একটা প্রিয় ব্যাট আছে তাঁর। যে ব্যাট দিয়ে গ্রস আইলেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ব্যাট আর নিজের কাছে রাখবেন না বলে ঠিক করেছেন। ঠিক করেছেন, ওই ব্যাটটা তাঁর বাবাকে দিয়ে দেবেন। বললেন, ‘‘বাবা ওটা চেয়েছেন। উনি ওটা নিজের কাছে রেখে দিতে চান। বাবা চেয়েছেন যখন, দিতেই হবে।’’ ছোটবেলায় বাবা প্রশান্ত সাহাই ছিলেন তাঁর প্রথম ক্রিকেট কোচ।
আর একটা ইচ্ছেও অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে ঋদ্ধির। এমন একটা টেস্ট ম্যাচ খেলা, যে ম্যাচে বিপক্ষে থাকবেন তাঁর অন্যতম প্রিয় উইকেটকিপার, অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। সেটা যে আর হবে না, তা জানেন ঋদ্ধি। তবে ক্রিকেট জীবনের বাকি ইচ্ছেগুলো, যেগুলো তাঁর সাধ্যের মধ্যেই আছে, সেগুলো ষোলো আনা পূরণ করাই এখন লক্ষ্য ঋদ্ধিমানের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy