প্রথম ভালবাসা বলে কথা। তাই দেবারতির কাছে এক দশকের স্মৃতি এখনও সতেজ। মনে পড়ে যায় সেই দিনগুলির কথা। চেন্নাইয়ের টিম হোটেল থেকে আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলছিলেন, “অর্কুটে কে কাকে প্রথম বন্ধুত্বের বার্তা পাঠিয়েছিলাম মনে নেই। প্রথমবার দেখা করার পর কে প্রথম প্রেম নিবেদন করেছিলাম, সেটাও ঠিক মনে পড়ছে না। যতদূর মনে পড়ে ২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় আইপিএল খেলতে যাওয়ার আগে ঋদ্ধিই প্রথম প্রেমের কথা বলে। তারপর থেকেই অজান্তে ওর প্রেমে আবদ্ধ হয়ে গেলাম।”
ভারতীয় ক্রিকেট মহলে ঋদ্ধিকে নিয়ে একটা কথা চালু আছে। ‘ছেলেটা বড্ড মুখচোরা। বড্ড উদাসীন।’ স্বামীর এমন আচরণে দেবারতিও মাঝেমধ্যে বিরক্ত হয়ে পড়েন। বললেন, “ওর দায়বদ্ধতা, খারাপ সময়েও ইতিবাচক মানসিকতা ভাল দিক। দ্বিতীয়বার গর্ভবতী থাকার সময় ও নিউজিল্যান্ডে ছিল। এরপর রঞ্জি ফাইনাল, আইপিএল, অস্ট্রেলিয়া সফর লাগাতার ক্রিকেট চলছেই। তবে ঘরে না থাকলেও ও কিন্তু সবসময় আমার খোঁজ নিয়েছে। তবে ওর অনেক খারাপ দিকও আছে। সেটাও জানিয়ে রাখা দরকার। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল ও নিজের জন্য কিছুই বলবে না। খুবই উদাসীন। মাঠে ও যেমন নির্লিপ্ত, আগ্রাসী মানসিকতা দেখায় না, সংসারের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। ফলে ওর সঙ্গে প্রচুর ঝগড়াও হয়। তবে সেটা শুধুই আমার তরফ থেকে। ঝগড়ার সময় আমাকে আবার খুঁচিয়ে ও চুপ করে যায়। এতে আরও রাগ বাড়ে।”
দীর্ঘ সম্পর্কে অনেক প্রেম দিবস একসঙ্গে কাটালেন। এবারও দুজন কাটাবেন অনেকটা সময়। তবে এ বার জৈব বলয়ে থাকার জন্য বাইরে বেরনোর উপায় নেই। টিম হোটেলেই নৈশভোজ সারতে হবে। যদিও এমন বিশেষ দিনের প্রসঙ্গ এলে দেবারতির কাছে একটা মুহূর্ত বারবার ফিরে আসে। ২০১২ সাল। সেবার পাপালির ১৭০ রানের উপর ভর করে দলীপ ট্রফি জিতেছিল পূর্বাঞ্চল। সেই ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রিয় মানুষের পাশে ছিলেন। একে তো জয়ের আনন্দ, অন্যদিকে প্রেম দিবসে প্রিয় মানুষের কাছে থাকা।
এমনই টুকরো টুকরো ভাল-মন্দ স্মৃতি নিয়েই ওঁরা বেঁচে আছেন দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। সেলিব্রেটি সত্ত্বাকে দূরে সরিয়ে রেখে। শহরের আর পাঁচজন মধ্যবিত্ত মানুষের মত। তবুও দেবারতির একটা আক্ষেপ থেকেই গেল। ওঁর ‘মনের মানুষ’ ড্রেসিংরুমে বসে, আর ঋষভ পন্থ উইকেটের পিছনে রয়েছেন।