জরিমানা গুনতে হল নিক কিরিয়সকে। ছবি: রয়টার্স
রয়্যাল বক্সের প্রথম সারিতে বসা প্রিন্স জর্জের সামনে অনউইম্বলডনোচিত ভাষায় তুমুল চিৎকার, শেষে প্রথা ভেঙে লাল টকটকে টুপি মাথায় দিয়ে ডাচেস অব কেমব্রিজের হাত থেকে রানার-আপ ট্রফি নেওয়া। ব্রিটেনের রাজ পরিবারের সামনে এই ঔদ্ধত্য মেনে নিতে পারেনি অল ইংল্যান্ড ক্লাব। জরিমানা গুনতে হল নিক কিরিয়সকে।
রয়্যাল বক্সের সামনে দেখানো ঔদ্ধত্যের পরবর্তী ধাপটা ছিল সাংবাদিক সম্মেলনে। চার হাজার ডলার (প্রায় তিন লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা) গচ্চা দেওয়ার পরে কিরিয়সের প্রথম উক্তি, ‘‘বরাবরই মনে হয়েছে গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলার যোগ্যতা আমার আছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আমি ঠিক উইম্বলডন ফাইনালিস্ট হওয়ার যোগ্য নই।’’
ফার্স্ট সার্ভটা যে গতিতে করেন, প্রায় প্রতি ম্যাচে নিয়ম করে সেই গতিতেই অনবদ্য থেকে অসভ্য হয়ে ওঠাটা কিরিয়সের সহজাত। সেই কিরিয়সিত ভঙ্গিতেই নোভাক জোকোভিচের বিরুদ্ধে প্রথম সেটটা জেতার পরে এক মহিলা দর্শককে সেন্টার কোর্টের গ্যালারি থেকে বার করে দিতে বলেন। সেটা করতে গিয়ে কিরিয়সের মুখের ভাষা ছিল, ‘‘আরে ভাই, ওই যে ওই পোশাক পরে যে মহিলা বসে রয়েছেন, যাকে দেখে মনে হচ্ছে ৭০০ পেগ মদ চড়িয়েছে, তার কথা বলছি।’’ রুদ্রমূর্তির কিরিয়সের চিৎকার শুনে ‘৭০০ পেগ’ মদ্যপান করা মহিলার নেশা ছুটে গিয়েছিল কি না জানা যায়নি, কিন্তু স্ত্রী-র পাশে বসা প্রিন্স জর্জের টুকটুকে ফর্সা মুখটা তখন লজ্জায় গোলাপি।
‘অপরাধ’-এর তালিকা এখানেই শেষ নয়। আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক জোড়েন, খেলা শেষে আবার জর্জ-পত্নী কেটের হাত থেকে লাল টুপি পরে উইম্বলডন রানার-আপের পুরস্কার নেন। উইম্বলডন মানেই সাদা পোশাক। সেই নিয়ম মেনেই খেলতে হয় সমস্ত খেলোয়াড়কে। কিন্তু সাদা যত ধবধবে হবে, তাতে কালির দাগ ছেটাতে বোধ হয় তত স্বচ্ছন্দ কিরিয়স।
সাংবাদিক সম্মেলনে যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়, প্রথম বার উইম্বলডন ফাইনালে উঠে তাঁর জয়ের খিদে আরও বেড়ে গেল কি না। উত্তরে কিরিয়স বলেন, “একেবারেই না। আমি খুব ক্লান্ত। সবার আগে আমার খুব বড় একটা ছুটি চাই।” কিন্তু ছুটি তো নিতে জানেন না এই অস্ট্রেলীয়। তাই এর পরেই তাঁর মুখ থেকে বের হয়, ‘‘ভেবে দেখলাম, আজ জিতিনি ভাল হয়েছে। জিতলে হয়তো বাকি টেনিসজীবনের জন্য অনুপ্রেরণাটাই হারিয়ে ফেলতাম। আপনারা যেটাকে টেনিসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ বলেন, হয়তো সেটাই জয় করা হয়ে যেত। বরাবরই মনে হয়েছে গ্র্যান্ড স্ল্যামে খেলার যোগ্যতা আমার আছে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, আমি ঠিক উইম্বলডন ফাইনালিস্ট হওয়ার যোগ্য নই। আরে, আমি ক্যানবেরার (অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী) ছেলে। উইম্বলডন ফাইনালিস্ট হিসেবে এখানে বসে বকবক করছি, এটা ভেবেই অবাক লাগছে। বাস্তবে বোধ হয় সবই সম্ভব। এটা তার একটা উদাহরণ। আমার মতো এক জন নোভাক জোকোভিচকে উইম্বলডন ফাইনালে তিন ঘণ্টা কোর্টে আটকে রেখেছে, ভাবা যায়!’’
টেনিস কোর্টে কিরিয়স থাকলে কিছুই হয়তো ভাবা যায় না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy