Advertisement
E-Paper

শেষ বলে ছক্কার নায়কের বন্দনা চলছে দেশ জুড়ে 

তাঁর তেরো বছরের বেশি ক্রিকেট জীবনে ভারতের হয়ে এ রকম নাটকীয় ম্যাচ এর আগে কখনও জেতাননি কার্তিক।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৭
নায়ক: নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এ ভাবে স্কুপ শট মেরেই সফল দীনেশ কার্তিক। শেষ বলে ছক্কা মেরে তিনি অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন। ফাইল চিত্র

নায়ক: নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে এ ভাবে স্কুপ শট মেরেই সফল দীনেশ কার্তিক। শেষ বলে ছক্কা মেরে তিনি অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন। ফাইল চিত্র

শেষ বলে তাঁর মারা ওভারবাউন্ডারি ভারতকে একটা অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছে ত্রিদেশীয় নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে। কভারের ওপর দিয়ে মারা সেই শটটা এখন ক্রিকেটবিশ্বের চর্চার বিষয়। কিন্তু তারও আগে, ১৯তম ওভারে মারা দীনেশ কার্তিকের একটি স্কুপ শটও আলোচনায় উঠে আসছে। বাংলাদেশের ফাস্ট বোলার রুবেল হোসনের করা ডেলিভারি প্রায় হাঁটু মুড়ে বসে ফাইন লেগের ওপর দিয়ে ‘স্কুপ’ শটে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে দেন রবিবারের ফাইনালের নায়ক।

ম্যাচের পরে কার্তিক জানিয়েছেন, কী ভাবে নিজেকে তৈরি করেছিলেন এই ধরনের শট খেলার জন্য। ‘‘নেটে আমি এই ধরনের শট খেলা অনুশীলন করেছি। ফলে আমি তৈরি ছিলাম,’’ বলেছেন তিনি। যে সময় ব্যাট করতে নেমেছিলেন, তখন ম্যাচ প্রায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছিল। দু’ওভারে করতে হতো ৩৪ রান। সেই অবস্থায় প্রথম বলেই ছয় মেরে শুরু করেন কার্তিক। কী পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিলেন? ভারতের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের জবাব, ‘‘আমার সামনে মারা ছাড়া কোনও রাস্তা ছিল না তখন। প্রতিটা বলে একটা করে বাউন্ডারি মারতে চেয়েছিলাম।’’ যে আটটা বল কার্তিক খেলেছেন, তার হিসেব এ রকম: ৬,৪,৬,০,২,৪,১,৬।

যে শটগুলো খেললেন, সেগুলো নিয়ে কী বলবেন? কার্তিকের জবাব, ‘‘আমি অনুমান করার চেষ্টা করছিলাম ওরা কী বল করবে। সেই মতো আগে থেকে ক্রিজে নিজেকে তৈরি রাখছিলাম জায়গা বানিয়ে। ব্যাপারটা কাজে লেগে গেল।’’ একই সঙ্গে কার্তিক ধন্যবাদ দিচ্ছেন দলের সাপোর্ট স্টাফকেও। বলেছেন, ‘‘আমি আজ যেখানে আছি, তার জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য দলের সাপোর্ট স্টাফের। গত কয়েক মাস ধরে ওরা আমাকে সব রকম ভাবে সাহায্য করে চলেছে।’’

আরও পড়ুন: ফিনিশার বলে কার্তিক-কে সাত নম্বরে নামান রোহিত

তাঁর তেরো বছরের বেশি ক্রিকেট জীবনে ভারতের হয়ে এ রকম নাটকীয় ম্যাচ এর আগে কখনও জেতাননি কার্তিক। তাঁর চেয়ে অনেক কম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেও হৃষীকেশ কানিতকর বা যোগিন্দর শর্মার নাম ঘরে ঘরে পরিচিত। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঢাকায় কানিতকরের মারা শেষ ওভারের সেই বাউন্ডারি বা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে করা যোগিন্দরের শেষ ওভার ভারতীয় ক্রিকেট রূপকথায় জায়গা করে নিয়েছে। কলম্বোর ফাইনালের পরে এ বার সেখানে চলে এল কার্তিকের নামও। হয়তো সে কারণেই ম্যাচের শেষে কার্তিক বলে দিচ্ছেন, ‘‘আজীবন মনে থেকে যাবে এই ম্যাচটা।’’

কী ভাবে খেলেন

কার্তিকের শট কভারের ওপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে পড়তেই মাঠে ঢুকে পড়েছিল পুরো ভারতীয় দল। একটু পরেই শুরু হয়ে যায় মাঠ প্রদক্ষিণ। যেখানে স্বাভাবিক ভাবেই মধ্যমণি ছিলেন কার্তিক। এর পর ‘বিসিসিআই টিভি’-র সামনে এসে মুখ খোলেন কার্তিক। ‘‘দুর্দান্ত একটা অনুভূতি হচ্ছে। এ রকম সব ঘটনাই আজীবন মনের মধ্যে থেকে যায়।’’ কথা বলার ফাঁকেই কার্তিকের মাথায় জল ঢেলে দেন কোনও এক সাপোর্ট স্টাফ!

একটা কথা বারবার বলছিলেন কার্তিক। ‘‘এ রকম একটা জয়ের অংশ থাকতে পেরে অসাধারণ লাগছে।’’ শ্রীলঙ্কার দর্শকদের কথাও বলতে ভোলেননি তিনি। ‘‘অবাক লাগছিল যে বাংলাদেশ বনাম ভারতের ম্যাচ দেখতে শ্রীলঙ্কার এত মানুষ মাঠে এসেছিলেন। আমরা এ রকম দর্শক আশা করিনি। ওঁরা আমাদের সমর্থনও করেছেন। ব্যাট করার সময় এ রকম সমর্থন পেলে দারুণ লাগে। খুব উপকার হয়। সবাইকে ধন্যবাদ।’’

একটা সময় ভারতীয় ক্রিকেটের মূলস্রোত থেকে দূরে সরে যাওয়া কার্তিক আবার সীমিত ওভারের খেলায় নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। গত এক বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘গত একটা বছর ভারতীয় ক্রিকেট দারুণ একটা সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমি এর অংশ হতে পেরে দারুণ খুশি। এই টুর্নামেন্টটা জিততে পেরে খুব ভাল লাগছে।’’

কার্তিকের ব্যাটিংয়ে মুগ্ধ সচিন তেন্ডুলকর থেকে বিরাট কোহালি। দেশ জুড়ে চলছে তাঁর বন্দনা। ভিভিএস লক্ষ্মণ যেমন টুইট করেন, ‘আমার সব সময় মনে হতো, কার্তিকের মধ্যে এ রকম ইনিংস খেলার দক্ষতা আছে।’’ এ বার দেখার, কার্তিক নিজেকে কোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন।

Dinesh Karthik Indian Cricketer Cricketer Nidahas Trophy T20 Tri-Series Cricket India vs Bangladesh দীনেশ কার্তিক Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy