Advertisement
E-Paper

মিশন মস্কো: ২০১৮ বিশ্বকাপের গাইড, ‘ডি’ গ্রুপে সেরা আকর্ষণ লিয়োনেল মেসি

খুব উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। কনমেবল (দক্ষিণ আমেরিকা) গ্রুপে তৃতীয় হয়ে শেষ করার পরে রাশিয়ার টিকিট অর্জন নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০৪:৩৭
অগ্নিপরীক্ষা: মেসির দিকেই তাকিয়ে আর্জেন্তিনা। ফাইল চিত্র

অগ্নিপরীক্ষা: মেসির দিকেই তাকিয়ে আর্জেন্তিনা। ফাইল চিত্র

গ্রুপ ডি

• সেরা দল: আর্জেন্তিনা

• ফিফা র‌্যাঙ্কিং: ৫

বিশ্বকাপ ইতিহাস

• প্রথম পর্বে - ১৬ বার

• সেমিফাইনালে - ৫ বার

• ফাইনালে - ৫ বার

চ্যাম্পিয়ন - ২ বার (১৯৭৮, ১৯৮৬)

কী ভাবে রাশিয়ায়

খুব উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। কনমেবল (দক্ষিণ আমেরিকা) গ্রুপে তৃতীয় হয়ে শেষ করার পরে রাশিয়ার টিকিট অর্জন নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। ঘরের মাঠে ইকুয়েডর এবং প্যারাগুয়ের কাছে হার, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ড্র, ব্রাজিলে গিয়ে ০-৩ পর্যুদস্ত হওয়া। এর সঙ্গে ম্যানেজার নিয়ে চূড়ান্ত ডামাডোল। তিন বার পরিবর্তন হয়েছে। সেরার্দো ‘তাতা’ মার্তিনো, এদগার্দো বাউজার পরে দায়িত্বে এসেছেন হর্হে সাম্পাওলি। অনেকগুলি ম্যাচে লিয়োনেল মেসির অনুপস্থিতি ভুগিয়েছে। আর্জেন্তিনাকে উদ্ধার করেন অধিনায়কই। শেষ ম্যাচে ইকুয়ে়ডরের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত হ্যাটট্রিক করে মেসিই নিশ্চিত করেন, রাশিয়ায় যাওয়া আটকাচ্ছে না আর্জেন্তিনার।

কোচ

হর্হে সাম্পাওলি: আর্জেন্তিনার গুরু ব্রাজিল বিশ্বকাপে চিলির কোচ ছিলেন। নক-আউট পর্বে গিয়েছিল তাঁর দল। এর পর তাঁর অধীনে কোপা আমেরিকাও জেতে চিলি। সাম্পাওলির বিশেষত্ব হচ্ছে, উচ্চ গতিতে প্রেসিং ফুটবল খেলেন। মেসির আর্জেন্তিনা সেই ফুটবলে মানিয়ে নিতে পারবে কি না, সেটাই দেখার। যোগ্যতা অর্জন পর্বে ডামাডোলের মধ্যে শেষ ম্যাচে এসে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট অর্জন করা সাম্পাওলির মনোবল বাড়াবে।

শক্তি

বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার রয়েছে তাদের দলে। কিন্তু এ বারের আর্জেন্তিনা দলের আসল শক্তি হচ্ছে, মেসি ছাড়াও একাধিক ভাল ফুটবলার রয়েছেন। যাঁরা প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দিতে পারেন। লিয়োনেল মেসি, অ্যাঙ্খেল দি মারিয়া, সের্জিয়ো আগুয়েরো, গঞ্জালো হিগুয়াইন— যে কোনও দলের কাছে স্বপ্নের আক্রমণ বিভাগ। যদি তাঁরা গ্রুপ হিসেবে খেলতে পারেন, দলগত সংহতি গড়ে তুলতে পারেন, আটকানো কঠিন হতে পারে। যোগ্যতা অর্জন পর্বে শেষ ম্যাচে বাজিমাত করে মানসিক শক্তি দেখিয়েছেন মেসি। সেটাই রাশিয়ায় তাঁরা দেখাতে পারলে প্রতিপক্ষদের ভয় ধরানোর মতো দল।

দুর্বলতা

ফুটবলারদের ভূমিকা নিয়ে দলের মধ্যে নানা বিভ্রান্তি রয়েছে। রাশিয়া রওনা হওয়ার কয়েক দিন আগেও অনেকেই জানেন না, প্রধান জায়গাগুলোয় কে খেলবেন। এর কারণ হচ্ছে, কোচ সাম্পাওলি বিভিন্ন নকশায় খেলেছেন। একাধিকবার তাঁর ছক পাল্টেছেন। এক-এক জায়গায় এক-এক জনকে চেষ্টা করেছেন। ক্রমাগত পরিবর্তন ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাস এবং প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে। আরও সমস্যা রয়েছে। লুকাস বিগলিয়া এবং আগুয়েরোর চোট থেকে ফেরার জন্য খুব কম সময় হাতে থাকছে। তাঁরা রাশিয়া পৌঁছে খুব বেশি তৈরি হওয়ারও সুযোগ পাবেন কি না, সন্দেহ। রক্ষণে রামিনো মোরি এবং মার্কাস রোহো দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে। সাম্পাওলির মাঝমাঠও খুব ভাল তৈরি হয়নি। শেষ ফ্রেন্ডলি ম্যাচে স্পেনের কাছে ১-৬ গোলে হারের ধাক্কা চিন্তায় রাখছে।

তারকা কারা

লিয়োনেল মেসি যে দলে থাকবে, তাদের তারকা কারা, তা নিয়ে আর কী বলা যেতে পারে! বার্সেলোনাকে এ বারেও তিনি প্রায় একাই টেনেছেন। বার্সার লা লিগা এবং কোপা দেল রে ট্রফি জয়ের প্রধান স্থপতি সেই তিনিই। বিশ্রাম নিয়ে তিনি আসছেন অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে— বিশ্বকাপ জয়। বলা যেতে পারে ‘নাউ অর নেভার’। অর্থাৎ, এ বারে না জিতলে আর কখনও বিশ্বকাপ জেতা হবে না তাঁর। ৩০ বছরের মেসি কি পারবেন আরও চার বছর পরের বিশ্বকাপে খেলতে? তার উপর কোপা আমেরিকা জিততে না পেরে তিনি নিজেই দেশের জার্সি তুলে রেখে অবসর নিয়ে ফেলেছিলেন। আর্জেন্তিনায় সকলের অনুরোধে ফিরে আসেন। রাশিয়ায় না জিতলে মনে হয় না আর আর্জেন্তিনার হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন তিনি। কোনও সন্দেহ নেই, শুধু আর্জেন্তিনা বলে নয়, রাশিয়াতে বিশ্বকাপের সব চেয়ে বড় তারকা লিয়োনেল মেসিই।

গ্রুপের অন্যরা

• আইসল্যান্ড: মাত্র ৩৩০,০০০ জনসংখ্যা নিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে ক্ষুদ্রতম দেশ আইসল্যান্ড। যেখানে তারা বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে, সেই রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতেই শুধুমাত্র তাদের দেশের থেকে চল্লিশ গুণ বেশি মানুষ বাস করেন। তবু তারা জায়ান্টকিলার হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ২০১৬ ইউরোতে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল। ফিফা র‌্যাঙ্কিংও বেশ ভাল, ২২। তাদের প্রধান ফুটবলারদের মধ্যে আছেন অধিনায়ক অ্যারন গুনার্সন, জিলফি সিগুর্দসন। কোচ হেইমির হলগ্রিমিসন পেশায় দাঁতের ডাক্তার। নানা দিক থেকে রাশিয়ায় চমক হতে পারে আইসল্যান্ড।

• ক্রোয়েশিয়া: স্বপ্নের প্রজন্ম বলা হচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার বর্তমান দলকে। তবু রাশিয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হয়েছে কষ্ট করে। একেবারে শেষ দিনে ইউক্রেনকে ২-০ হারিয়ে প্লে-অফে পৌঁছয় তারা। কিন্তু গ্রুপের সেরা হয় আইসল্যান্ড। যদিও রাশিয়ায় দারুণ সব ফুটবলার নিয়ে আসছে ক্রোয়েশিয়া। মারিয়ো মাঞ্জুকিচ, ইভান রাকিতিচ, লুকা মড্রিচ যে কোনও দলের কাছে স্বপ্নের ত্রয়ী হতে পারেন। এর সঙ্গে বাড়তি আকর্ষণ এ বারে ইভান পারিসিচ। যদি এঁরা সকলে ক্লাবের ফর্ম দেখাতে পারেন রাশিয়ায়, খুবই শক্তিশালী দল হয়ে উঠতে পারে ক্রোয়েশিয়া। ফিফা র‌্যাঙ্কিং ১৮। কোচ জ্লাটকো ডালিচ যোগ্যতা অর্জন পর্বে শেষ ম্যাচের আগে দায়িত্ব নেন। ইউক্রেনকে হারানোর পরে প্লে-অফে তাঁর অধীনে ক্রোয়েশিয়া হারায় গ্রিসকে।

• নাইজিরিয়া: আফ্রিকা থেকে প্রথম দল হিসেবে রাশিয়ার টিকিট অর্জন করে নাইজিরিয়া। তাদের গ্রুপে ক্যামেরুন, জাম্বিয়া এবং আলজিরিয়া থাকলেও স্বচ্ছন্দেই যোগ্যতা অর্জন করে তারা। ক্যামেরুনকে ৪-০ হারানোর মধ্যে ছিল পুরনো নাইজিরিয়ার আধিপত্য। সব ঠিক থাকলে ‘সুপার ঈগল্‌স’ কিন্তু ভয় ধরানোর মতো দল।গত নভেম্বরে রাশিয়াতেই একটি ফ্রেন্ডলিতে সেটা টের পেয়েছিল আর্জেন্তিনা। ০-২ পিছিয়ে পড়েও ৪-২ জেতে নাইজিরিয়া। প্রধান তারকা অবশ্যই জন ওবি মিকেল।

Football Lionel Messi Argentina FIFA World Cup 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy