হতাশ জোরগেনসেন। পেনাল্টি নষ্টের পর। ছবি:রয়টার্স।
ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে রবিবার প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে গোল করতে পারেননি। নিঝনি নভগরদ স্টডিয়ামে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল ডেনমার্ক। আর তার ফলশ্রুতি হিসেবে মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন ড্যানিশ স্ট্রাইকার নিকোলাই জোরগেনসেন। ডেনমার্কের ফুটবল সংস্থা অবশ্য পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর।
টুইটারে এক বিবৃতিতে ড্যানিশ ফুটবল সংস্থা কড়া ভাষায় জানিয়েছে, “এসব বন্ধ হোক। আমাদের সমাজ মৃত্যুর হুমকি মেনে নেয় না। তা সে বিশ্বকাপের তারকাদের বিরুদ্ধেই হোক বা রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে। এটা একেবারেই মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। এটা নিম্নরুচিরও। আমরা এই বিষয়টি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করছি। যাতে এই পাগলামি বন্ধ হয়, সেটাই উদ্দেশ্য।”
প্রসঙ্গত, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচে ডেনমার্কের তিনজন টাইব্রকারে গোল করতে পারেননি। নিকোলাই জোরগেনসেন শেষ ড্যানিশ ফুটবলার হিসেবে মিস করেন টাইব্রেকারে। ৩-২ ফলে টাইব্রেকারে জেতেন লুকা মদরিচ, ইভান রাকিতিচরা।
রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পরই ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক প্রোফাইলে হুমকি দেওয়া হয় নিকোলাই জোরগেনসেনকে। আপত্তিকর ভাষাও ব্যবহার করা হয়। তবে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন সমর্থকরা।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে পেনাল্টি নষ্টের পর কলম্বিয়ার বাক্কা। ছবি: এএফপি
শুধু জোরগেনসেন একাই নন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে টাইব্রেকারে পরাজয়ের পর কলম্বিয়ার মাতেউস উরিবে ও কার্লোস বাক্কার উদ্দেশে আপত্তিকর বার্তা আসতে শুরু করেছে। উরিবের শট লেগেছিস ক্রসবারে। আর বাক্কার শট আটকে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। প্রধানত বাক্কাকে উদ্দেশ্য করে যে বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তাতে ‘মৃত’ বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে ফুটবলারদের। আত্মহত্যা করার আবেদনও জানানো হয়েছে তাঁদের। বলা হয়েছে, ভুল করেও যেন কলম্বিয়ায় তাঁরা না ফেরেন।
প্রসঙ্গত, এবারের বিশ্বকাপে কলম্বিয়ার কার্লোস স্যাঞ্চেজকেও মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছিল। জাপানের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ অভিযানের শুরুর ম্যাচে তিন মিনিটের মধ্যে লাল কার্ড দেখেছিলেন তিনি। সেই ঘটনা নিয়ে পুলিশের তদন্ত চলছে। কিন্তু, তার পরও হুমকি দেওযা হচ্ছে। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুরন্ত লড়েও ব্রিটিশ গোলরক্ষকের কাছে হার কলম্বিয়ার
আরও পড়ুন: রুশ দম্পতির ঘর ভাঙলেন মেসি-রোনাল্ডো!
এদিকে, গত ২ জুলাই ছিল আন্দ্রেস এসকোবারের মৃত্যুর ২৪তম বার্ষিকী। তিনি ছিলেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন তিনি। যার ফলে বিদায় নেয় কলম্বিয়া। দেশে ফেরার পর হত্যা করা হয় তাঁকে। সেই খুনের সঙ্গে ড্রাগ মাফিয়ারা জড়িত ছিলেন বলে মনে করা হয়। আর রাশিয়া বিশ্বকাপে কলম্বিয়া বিদায় নিয়েছে ৩ জুলাই। দুটো তারিখের যোগসূত্রের জন্য মৃত্যুর হুমকি আরও গুরুত্ব পাচ্ছে।
এসকোবারের ভাই সাচি ভয় পাচ্ছেন গোটা ঘটনায়। তাঁর আক্ষেপ, অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়নি! সাচি বলেছেন, “যাঁরা মনে করেন হিংসা দিয়ে কোনও কিছুর সমাধান হয়, যাঁরা অস্ত্র দিয়ে কারওর জীবন নিতে চান, তাঁদের বার্তা দিতে চাই। ফুটবল কিন্তু শান্তির মাধ্যম। আর দিনের শেষে, ফুটবল একটা খেলাই।”
যা দাঁড়াচ্ছে, এসকোবারের স্মৃতি জাগিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপে ফিরল মৃত্যুর হুমকি!
আরও পড়ুন: জোড়া হলুদ কার্ড দেখে কোয়ার্টার ফাইনালে যাঁরা মাঠের বাইরে
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে একমাত্র ‘আফ্রিকান দল’ ফ্রান্স
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy