নায়ক: টাইব্রেকারে জয়ের পরে গোলরক্ষক পিকফোর্ডকে ঘিরে উল্লাস ইংল্যান্ডের ফুটবলারদের। ছবি: রয়টার্স
কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে ইন্টারনেটে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর পড়ে আঁতকে উঠেছিলাম। বলা হচ্ছিল, কলম্বিয়া কোনও দল নয়। ম্যাচটা শুরু হওয়ার আগেই যেন জিতে গিয়েছে ইংল্যান্ড! ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ইয়েরি মিনা গোল করে সমতা ফেরানোর পরে মনে হচ্ছিল, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই না আমাদের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন শেষ করে দেয়। ধন্যবাদ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে। ওঁর হাতই আমাদের তুলে দিল শেষ আটে।
রাশিয়া বিশ্বকাপে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন হ্যারি কেন-রা। মনে হচ্ছিল, ওঁদের হাত ধরেই ৫২ বছর পরে বিশ্বকাপ জিতব আমরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড হারলেও দুশ্চিন্তা হয়নি। কারণ, শেষ ম্যাচে প্রথম একাদশের অধিকাংশ ফুটবলারকে বিশ্রাম দিয়ে দল নামিয়েছিলেন কোচ গ্যারেথ সাউটগেট। আমার কয়েক জন বন্ধু অবশ্য উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল। ওদের বলেছিলাম, চিন্তার কোনও কারণ নেই। হ্যারি কেন এ বার যে রকম ছন্দে আছেন, তাতে কলম্বিয়ার পক্ষে ওঁদের আটকানো কঠিন।
মঙ্গলবার মস্কোর স্পার্টার্ক স্টেডিয়ামে ম্যাচটা শুরু হওয়ার পরে কিন্তু ছবিটা বদলে গেল। কলম্বিয়ার রক্ষণের চক্রব্যূহে বন্দি হয়ে পড়লেন হ্যারি কেন, রাহিম স্টার্লিংরা। কলম্বিয়ার কোচ হোসে পেকারম্যানের রণনীতি ছিল মাঝমাঠেই ইংল্যান্ডের ছন্দ নষ্ট করে দেওয়া। সেটা করতে গিয়েই উত্তপ্ত হয়ে উঠল আবহ। ৪০ মিনিটে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার ব্যারিয়স তো ঢুঁসো মারেন ইংল্যান্ডের হেন্ডারসনকে। রেফারির উচিত ছিল লাল কার্ড দেখানো। অথচ দেখালেন শুধু হলুদ কার্ড! ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি বক্সের মধ্যে হারি কেন-কে ফাউল করেন কলম্বিয়ার কার্লোস স্যাঞ্চেস। পেনাল্টি দিতে ভুল করেননি রেফারি। গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে দেওয়ার মনে হচ্ছিল, হামেস রদ্রিগেস-হীন কলম্বিয়ার পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো অসম্ভব।
আরও পড়ুন: ‘বেলজিয়ামের মনোবল কিন্তু বেড়েই থাকল’
ভাবিনি, ম্যাচের শেষ মুহূর্তে নাটকীয় ভাবে বদলে যাবে ম্যাচের রং। নেপথ্যে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা। সংযুক্ত সময়ে কর্নার পায় কলম্বিয়া। ওদের গোলরক্ষক দাভিদ অস্পিনাও উঠে গিয়েছিল ইংল্যান্ডের পেনাল্টি বক্সে। দুরন্ত হেডে গোল শোধ করলেন মিনা। এই গোলটার পরে আর জেতার আশা করিনি। ৫২ বছর ধরে প্রত্যেক বার আশা জাগিয়েও আমরা ছিটকে গিয়েছি। আমাদের হেন্ডারসন ব্যর্থ হওয়ায় পরে ভেবেছিলাম, এ বার রাশিয়াতেও তা-ই হবে। ত্রাতা হয়ে উঠলেন পিকফোর্ড। টাইব্রেকারে বাঁচালেন উরিবের শট। বিশ্বকাপে এই প্রথম টাইব্রেকারে জিতল ইংল্যান্ড। এ বার সামনে সুইডেন।
গোলরক্ষকদের বিশ্বকাপ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy