লা লিগার প্রচারে ঝটিকা সফরে ভারতে এসেছিলেন। ইংরেজিতে তেমন স্বচ্ছন্দ নন। মঙ্গলবার বিকেলে কোচি ছাড়ার আগে মোবাইলে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তাই দোভাষীর সাহায্য নিলেন। তিনি— স্পেন এবং রিয়াল মাদ্রিদের প্রাক্তন স্ট্রাইকার ফের্নান্দো মোরিয়েন্তেস। সাক্ষাৎকারে যে সব প্রসঙ্গে উঠে এল..
লা লিগা এবং বিশ্বকাপ: লা লিগার সব ক্লাবের প্রতিনিধি আছে রাশিয়ায়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, লিয়োনেল মেসিদের কথা বাদই দিলাম। ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদ্রিচ, ইভান রাকিতিচরাও জমিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপ। তবে আমার কাছে এখনও সেরা ফুটবলটা খেলেছে স্পেনের ইস্কো। মাঝমাঠের রাশটা নিজের হাতে রেখেছে।
কোচ বিতর্কে স্পেন: বিশ্বকাপ শুরুর দু’দিন আগে কোচ বরখাস্ত হলে যে কোনও দলে একটা ধাক্কা তো লাগবেই। স্পেনেরও লেগেছে। কিন্তু তার পরে ওরা গুছিয়ে নিয়েছে। এর জন্য আমি ফের্নান্দো ইয়েরো-কে কৃতিত্ব দেব। ও দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। সবাই এখন মাঠের ব্যাপারেই মনঃসংযোগ করছে।
স্প্যানিশ ডিফেন্সে সমস্যা: জানি, মরক্কোর কাছে সোমবার রাতে দু’গোল খাওয়ার পরে আমাদের ডিফেন্স নিয়ে কথা হচ্ছে। ডিফেন্স একটা সমস্যার জায়গা ঠিকই, কিন্তু শুধু ডিফেন্স দিয়েই তো হবে না। পুরো দলটাকে স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী খেলতে হবে। সে দিকেই আমরা এগোচ্ছি।
ইস্কো-ইনিয়েস্তা জুটি: স্পেনের মাঝমাঠের ইঞ্জিন এই দু’জন। ইনিয়েস্তার প্রতিভা নিয়ে কথা বলার মানে হয় না। ইস্কোও প্রতিভাবান। দু’জনে দু’ধরনের ফুটবলার। মিডফিল্ডে এই দুই ফুটবলারের থাকাটা স্পেনকে অনেক শক্তিশালী করে তুলেছে। মনে রাখতে হবে, যে কোনও দলের মেরুদণ্ডই হল মাঝমাঠ। সেখানে স্পেন ভাল জায়গায়।
স্পেনের গোল স্কোরার: আগের মতো গোল শিকারি হয়তো নেই। কিন্তু দিয়েগো কোস্তা এবং ইয়াগো আসপাস ভাল ফর্মে আছে। গোল পাচ্ছে। এর সঙ্গে আমি আরও এক জনের কথা বলব। রদ্রিগো মোরেনো। এই ত্রিফলা কিন্তু স্পেনকে অনেক দূর টেনে নিয়ে যাবে।
বার্সার মেসি, আর্জেন্টিনার মেসি: অনেকেই বলে, বার্সেলোনায় মেসি যে সাহায্যটা পেয়ে থাকে সতীর্থদের কাছ থেকে, সেটা আর্জেন্টিনায় পায় না। আমি বলব, বার্সার ফুটবলারদের সঙ্গে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের তুলনা করা ঠিক নয়। দু’দলে দু’ধরনের ফুটবলার আছে। আমি কখনওই বলব না আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা বার্সেলোনার ফুটবলারদের চেয়ে খারাপ। এই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা আর মেসি খেলতে পারছে না বলে এত কথা উঠছে। কিন্তু আর্জেন্টিনার এই দলটার ক্ষমতা আছে ঘুরে দাঁড়ানোর। মেসির নেতৃত্বে অনেক হিসেবই উল্টে দিতে পারে ওরা। এখনই আর্জেন্টিনাকে উড়িয়ে দিলে চলবে না।
মেসি ও বিশ্বকাপ: মেসি ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা। ও বিশ্বকাপ পাক বা না পাক, তাতে কিছু যায় আসে না। পেলে অবশ্যই মেসির মুকুটে উজ্জ্বল রত্ন হয়ে থাকবে। কিন্তু না পেলেও মেসির ফুটবল জীবনে কালো দাগ লাগবে না। বিশ্বকাপ না জিতলেও মেসি মেসিই থাকবে।
এখন পর্যন্ত সেরা দল: আমি দু’টো দলের কথা বলতে চাই। ক্রোয়েশিয়া এবং বেলজিয়াম। দু’টো দলই চোখ ধাঁধানো ফুটবল খেলছে। গোলও যে রকম করছে, ডিফেন্সও তেমনই মজবুত।
ভিডিয়ো-বিতর্ক: নতুন জিনিস নিতে একটু সময় লাগবে। ফিফা ঠিকই করেছে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে। বিতর্ক হলেও যেন ‘ভার’ তুলে দেওয়া না হয়।
শেষ চারে কারা: আমি চারটে দলের নাম বলব। স্পেন, ব্রাজিল, ক্রোয়েশিয়া, ইংল্যান্ড।