Advertisement
E-Paper

এই হার বিশ্বাসই হচ্ছে না জার্মানির

বিকেলের দিকে আকাশ কালো করে মেঘ এসেছিল। সেই মেঘ যে জার্মানির ফুটবল আকাশে দেখা যাবে, তা একেবারেই বোঝা যায়নি। রবিবার ছুটির দিন।

সোহম রায়

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৮ ০৫:২৬
অভিব্যক্তি: হারে বিষণ্ণ জার্মান তরুণী। ছবি: গেটি ইমেজেস

অভিব্যক্তি: হারে বিষণ্ণ জার্মান তরুণী। ছবি: গেটি ইমেজেস

অবিশ্বাস্য। একটা শব্দই বুঝিয়ে দেবে প্রথম ম্যাচে হারের পরে জার্মানি জুড়ে কী প্রতিক্রিয়া। জার্মানির মানুষ যেন কিছুতেই বিশ্বাস করে উঠতে পারছেন না, প্রথম ম্যাচেই তাঁদের দলকে হেরে যেতে হয়েছে। তাও কি না আবার মেক্সিকোর মতো দলের কাছে!

বিকেলের দিকে আকাশ কালো করে মেঘ এসেছিল। সেই মেঘ যে জার্মানির ফুটবল আকাশে দেখা যাবে, তা একেবারেই বোঝা যায়নি। রবিবার ছুটির দিন। পাবলিক ভিউয়িং এরিয়ায় (যেখানে জায়ান্ট স্ক্রিনে বিশ্বকাপ দেখানোর ব্যবস্থা হয়েছে) খেলা দেখব বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। মানহাইমের রাস্তা একেবারেই শুনশান। ম্যাচ দেখার জন্য এক দল বাড়িতে বসে, এক দল ভিড় জমিয়েছে এই জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনে বা পাবে। আর যাঁরা কাজ করতে বাধ্য হচ্ছিলেন, তাঁদের একটু বিরক্ত দেখলাম। যেমন ম্যাচ দেখার আগে যেখানে খেতে ঢুকেছিলাম, সেই রেস্তরাঁর ওয়েটারকে।

জার্মানি যখন গোল খেয়ে যায়, তখন একটা ধাক্কা লাগলেও জার্মানরা কিন্তু আস্থা রেখেছিলেন দলের ওপর। একবারও ভাবেনি গোল শোধ হবে না। তাই ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে আশেপাশের মানুষের মুখে খুব বেশি করে অবিশ্বাসের ছবিটা ধরা পড়ছিল। আস্তে আস্তে জায়ান্ট স্ক্রিনের সামনের জায়গাটা ফাঁকা হয়ে যেতে থাকে। যাঁদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল, তাঁদের অনেকেই পরের ব্রাজিলের ম্যাচটা দেখার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন। কিন্তু জার্মানির হারের পরেই ফাঁকা হয়ে
যায় জায়গাটা।

বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলে দেখছিলাম একের পর এক বিশ্লেষণ ভেসে আসছে এই হারের। একটা জায়গায় বলা হচ্ছে, মেক্সিকোর গতির কাছেই হার মানতে হয়েছে জার্মানিকে। ওয়াকিম লো-র এই দলটায় বেশ কয়েক জন বয়স্ক ফুটবলার আছেন। ফলে দলের গতি খুব বেশি নয়। আর সেই সুবিধেটাই নিয়ে গেল মেক্সিকো।

একটা ওয়েবসাইটে জার্মানির ডিফেন্ডার ম্যাটস হুমেলসের প্রতিক্রিয়াও দেখলাম। হুমেলস বলেছেন, ‘‘ওদের কাজটা সহজ করে দিলাম। আমরা যে ব্যাপারটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করি, সেটা মাঠে করে দেখাতে পারছি না।’’ এর পরে হুমেলস যেটা বলেছেন, সেটা কিন্তু ভীষণ তাৎপর্যের। জার্মান ডিফেন্ডারের বক্তব্য, ‘‘এখন পরের দু’টো ম্যাচ জিততে হবে। না হলে হয়তো বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাবে আমাদের জন্য।’’ আর এক ফুটবলার মেসুত ওজিল তো বলেছেন, জার্মান ফুটবলে বিপর্যয় ঘটে গেল।

জার্মানির পরের দু’টো ম্যাচ সুই়ডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে। এখানে যে কথাটা শুনছিলাম, সেটা বেশ আশঙ্কার। অনেকেই মনে করেন, কোরিয়া তাদের গতিটা কাজে লাগিয়ে সমস্যায় ফেলতে পারে জার্মানিকে।

একটা ওয়েবসাইটে দেখলাম ম্যাচের পরে ওয়াকিম লো কথা বলেছেন। কেন এ রকম হল? কেন এক গোলে হারতে হল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের? জার্মানির কোচ বলেছেন, ‘‘প্রথমার্ধে একেবারেই খেলতে পারিনি। আমরা যে ধরনের আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলি, যে রকম ভাবে পাস বাড়াই, সে সব কিছুই করতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা চাপ সৃষ্টি করেছিলাম ঠিকই, কিন্তু সেটা কাজে দেয়নি শেষ পর্যন্ত। বরং মেক্সিকো ম্যাচটা ধরে নেয়।’’

হারের পরে জার্মানি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খলতা দেখলাম না। রাস্তা নিঝুম হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কোথাও জার্মান সমর্থকদের ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায়নি। আসলে সবাই এখন তাকিয়ে আছে পরের ম্যাচটার দিকে। হুমেলস যেটা বলেছেন, সেটাই ঠিক। সুইডেনের সঙ্গে জিততে না পারলে কিন্তু স্বপ্নভঙ্গ হতে পারে বিশ্বজয়ীদের।

Germany Mexico FIFA World Cup 2018 বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮ Football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy