নায়ক: জিততেই হবে এমন পরিস্থিতিতে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিয়োনেল মেসিই। মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গে। ছবি: গেটি ইমেজেস
আর্জেন্টিনা ২ : ১ নাইজিরিয়া
বিশ্বকাপ ফাইনাল দেখা হবে না আমার। বৃহস্পতিবারই কলকাতায় ফিরছি। তবে ফাইনাল দেখতে না পাওয়ার দুঃখ অনেকটাই ভুলিয়ে দিলেন লিয়োনেল মেসি।
আমি যেমন ব্রাজিলের সমর্থক, তেমনই মেসির অন্ধ ভক্ত। এ বার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা প্রথম ম্যাচে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে ড্র করল। পরের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে হারল। আমি ব্রাজিলের সমর্থক হয়েও দুঃখ পেয়েছিলাম। মেসিকে ছাড়া বিশ্বকাপ হয় নাকি? মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গের স্থানীয় সময় রাত বারোটায় স্টেডিয়াম থেকে বেরোনোর সময় সত্যিই দারুণ আনন্দ হচ্ছিল।
আর্জেন্টিনার কাছে মঙ্গলবার ছিল মরণ-বাঁচন লড়াই। শেষ ষোলোয় পৌঁছতে হলে নাইজিরিয়ার বিরুদ্ধে জিততেই হতো। ম্যাচের ১৪ মিনিটেই ঝলসে উঠলেন আমার প্রিয় তারকা। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে দেওয়া এভার বানেগার পাস অবিশ্বাস্য ভাবে বাঁ পায়ের ঊরু দিয়ে নামিয়ে ডান পায়ে গোল করলেন মেসি। অসাধারণ গোল। স্টেডিয়াম জুড়ে উৎসব শুরু হয়ে গেল। দিয়েগো মারাদোনাকেও দেখলাম, উঠে দাঁড়িয়ে দু’হাত ছুড়ছেন। কাঁদছেন আমার পাশে বসা আর্জেন্টিনা সমর্থকেরা। এ তো তলিয়ে যেতে যেতে ভেসে ওঠার কাহিনি।
আরও পড়ুন: ‘যাও ব্রাজিল, যাও ছেলেরা, জয় করে এসো!’
বিরতির সময় আর্জেন্টিনা থেকে আসা এক যুবক বলছিলেন, ‘‘এই ম্যাচটার উপর শুধু আমাদের নয়, মেসিরও ভাগ্য নির্ভর করছে। কারণ, শেষ ষোলোয় পৌঁছতে ব্যর্থ হলে আর কখনওই মারাদোনার সঙ্গে ওঁর তুলনা করা হবে না। মেসিকে আজ অনেক বেশি উজ্জীবিত দেখাচ্ছে।’’
সত্যিই তাই। মঙ্গলবারই প্রথম চেনা মেসিকে দেখলাম বিশ্বকাপের মঞ্চে। সেই বল ধরে অনায়াসে দু’-তিন জনকে কাটিয়ে চলে যাওয়া। গন্সালো হিগুয়াইন, অ্যাঙ্খেল দি মারিয়াকে ডিফেন্স চেরা পাস দেওয়া। এই মেসিকে দেখার জন্যই বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা প্রতীক্ষা করে ছিলেন অবশেষে স্বপ্নপূরণ।
৫১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নাইজিরিয়ার ভিক্টর মোসেস গোল শোধ করতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল স্টেডিয়ামে। ড্র মানেই তো বিদায়। তা হলে মঙ্গলবারই রাশিয়া বিশ্বকাপে শেষ ম্যাচ খেলছেন মেসি। ম্যাচ শেষ হওয়ার চার মিনিটে অসাধারণ গোলে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দিলেন মার্কোস রোহো। নক আউটে এ বার তাঁদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স।
ম্যাচ শেষ হওয়ার পরে মেসিকে দেখলাম গ্যালারির ফেন্সিংয়ের সামনে চলে এসে দর্শকদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন। তার পর পুরো দলকে নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করলেন গ্যালারির দিকে হাত নাড়তে নাড়তে। যেন বলছিলেন— আস্থা রাখুন বিশ্বকাপ আমরাই জিতব!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy