Advertisement
E-Paper

মারাদোনা যুগ ভুলে এগিয়ে যেতে চান মেসি

২০১০-এ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের পরে তাঁর কী মনে হয়েছিল? সংবাদপত্রটির প্রশ্নের সামনে মেসি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ থেকে আগেভাগেই হেরে বিদায় নিতে হলে সকলেই ভেঙে পড়বে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৮ ০৪:২২

আর্জেন্তিনা দলে দিয়েগো মারাদোনা এবং তাঁর বিখ্যাত জুটি নিয়ে মুখ খুললেন লিয়োনেল মেসি। আর্জেন্তিনার সংবাদপত্র ‘লা নাসিয়ন’-র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মেসি জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের সেই অভিশপ্ত অভিজ্ঞতার কথা। তবে মারাদোনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কেমন ছিল, তা নিয়ে খুব একটা কথা বলতে চাননি তিনি।

২০১০-এ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে বিপর্যয়ের পরে তাঁর কী মনে হয়েছিল? সংবাদপত্রটির প্রশ্নের সামনে মেসি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপ থেকে আগেভাগেই হেরে বিদায় নিতে হলে সকলেই ভেঙে পড়বে। আমারও সেই অবস্থা হয়েছিল। তবে অতীতে পড়ে থাকার মানে হয় না। প্রত্যেকটি অভিজ্ঞতা থেকেই শিক্ষা নিতে হয়।’’ দ্রুত যোগ করছেন, ‘‘জীবনের মতোই ফুটবলেও আমি ভাগ্যবান যে, বেশির ভাগ ভাল মুহূর্তই পেয়েছি। কিন্তু আমি খারাপ মুহূর্তগুলো থেকেও ইতিবাচক তরঙ্গ বার করে নেওয়ার চেষ্টা করি। যাতে সব সময় শেখার প্রক্রিয়াটা চালিয়ে যেতে পারি।’’

আর্জেন্তিনা জুড়ে স্লোগান উঠে গিয়েছে, এ বার নয়তো আর কখনও নয়। লিয়োনেল মেসির এটাই শেষ সুযোগ বিশ্বকাপ জেতার। নিজের দেশে দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে অহরহ তাঁর তুলনা টেনে বলা হয়, মেসি শুধু ক্লাব ফুটবলেই সেরা। মারাদোনার মতো ক্লাব-দেশ দু’জায়গাতে সফল নন। মারাদোনার মতো কখনও আর্জেন্তিনাকে বিশ্বকাপ দিতে পারেননি তিনি। সেই সমালোচনাকে চিরতরে থামিয়ে দেওয়ার এটাই সম্ভবত শেষ সুযোগ।

অতীতে নিয়ে পড়ে থাকতে চান না বলে দিলেও মেসি কিন্তু জানাতে ভোলেননি যে, সমস্ত খারাপ ফল তাঁকে আঘাত করে। ‘‘ভেনেজুয়েলায় কোপা আমেরিকা কাপে আমি ভাল খেলছিলাম। কিন্তু ব্রাজিলের কাছে ফাইনালে হারটা একটা বড় ধাক্কা ছিল। খুবই হতাশ হয়েছিলাম। আমাদের কাপ জেতার মতো দক্ষতা ছিল। খুব ভাল খেলছিল দল। তার পরেও ফাইনালে গিয়ে হারলাম। সমস্ত আশাই শেষ হয়ে গেল এক সেকেন্ডের ভুলে। আমি ভীষণ ভেঙে পড়েছিলাম।’’ এর পরেই মারাদোনার সঙ্গে তাঁর জুটির বাধার প্রসঙ্গে ঢুকে পড়েন। আর্জেন্তিনার ভাগ্য ফেরাতেই মারাদোনাকে কোচ করে এনেছিলেন আর্জেন্তিনার কর্তারা। কিন্তু তিনি যত বড় ফুটবলার ছিলেন, ততটাই ব্যর্থ হলেন কোচ হিসেবে। মেসি সেই সময়ের কথা মনে করতে গিয়ে বলছেন, ‘‘দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যর্থতাটা মনে পড়লে খারাপ লাগে কারণ, আমাদের নিয়ে কত লোকের কত প্রত্যাশা ছিল। দল হিসেবে আমরা ভাল খেলছিলাম বলে সেই প্রত্যাশা আরও বেড়ে গিয়েছিল।’’

দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জন্য অন্যদের দিকে আঙুল না তুলে নিজেকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন মেসি। যেটা তাঁর বরাবরের বৈশিষ্ট। বলেছেন, ‘‘একটাও গোল করতে পারিনি আমি। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি। কিন্তু আমাকে মনে রাখতে হবে যে, কোনও কোনও সময়ে এমন ঘটনা জীবনে ঘটে যার কোনও ব্যাখ্যা হয় না। পরে গিয়ে নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পেরেছিলাম এই বলে যে, আমি তো সর্বাত্মক ভাবে চেষ্টা করেছিলাম। আমি পারিনি সে বার কিন্তু চেষ্টায় কোনও ত্রুটি ছিল না।’’ তার পরেই যেন সারা ফুটবল দুনিয়ায় তাঁর ভক্তদের উদ্দেশে আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন, ‘‘জাতীয় দলের জার্সি পরে আমি সব সময় নিজের সেরাটা দিয়েছি। সব সময় আপ্রাণ চেষ্টা করে গিয়েছি সেরা খেলাটা খেলার।’’

চিনে অলিম্পিক্স সোনা জয়ের অভিজ্ঞতা এখনও শিশুর মতো আনন্দ এনে দেয় তাঁর মুখে। ‘‘চিনের সেই দিনগুলো দারুণ ছিল। অনেকে আমাকে বলেছিলেন, যাও, দারুণ উপভোগ করবে অলিম্পিক্সের আবহ। চিনে না গেলে সেটা বুঝতে পারতাম না। আমাদের গ্রুপটার জন্য অলিম্পিক্সে সোনা জেতাটা অবিস্মরণীয় একটা মুহূর্ত ছিল। সারা জীবন সোনা জয়ের অনুভূতিটা থেকে যাবে,’’ বলে ফেলছেন তিনি। সেই সময়ে বার্সেলোনার সঙ্গে টক্কর চলছিল আর্জেন্তিনার তাঁকে ছাড়া নিয়ে। মেসি কিন্তু এত বছর পরেও বলে দিচ্ছেন, ‘‘ভাগ্য ভাল যে, পেপ (গুয়ার্দিওলা তখন বার্সেলোনায় মেসিদের কোচ) আমার অবস্থাটা বুঝেছিলেন এবং গেমসে খেলার অনুমতি দিয়েছিলেন।’’

ফুটবল জীবনের অমূল্য শিক্ষা? রাশিয়া বিশ্বকাপে যাঁর উপর নজর থাকবে সারা দুনিয়ার, তিনি বলে দিচ্ছেন, ‘‘জিতলে সব কিছু ঠিক চলে। সব কিছুই ভাল চলছে। আমরা, ফুটবলাররা সেই সত্যটা মেনে চলি!’’

Lionel Messi Argentina Diego Maradona Football FIFA World Cup 2018 বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy