Advertisement
E-Paper

দু’সপ্তাহের মধ্যে কাঁধের অস্ত্রোপচার ঋদ্ধিমানের

জাতীয় স্তরের এক ফিজিয়ো প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ল্যাব্রাল টিয়ার’ ধরা পড়ার পরেও ঋদ্ধিকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হল না কেন?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৪
ঋদ্ধির চোট নিয়ে বোর্ডের বিবরণে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি।

ঋদ্ধির চোট নিয়ে বোর্ডের বিবরণে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড অবশেষে ঋদ্ধিমান সাহার কাঁধে চোটের কথা স্বীকার করেই নিল। কাঁধে অস্ত্রোপচারের জন্য তাঁকে ম্যাঞ্চেস্টারে পাঠানো হচ্ছে। সেটাও বোর্ড তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয় শুক্রবার। দু’দিন আগেই জাতীয় নির্বাচকদের প্রধান এমএসকে প্রসাদ বলেছিলেন, ‘‘বুড়ো আঙুলে চোট আছে ঋদ্ধির।’’ অথচ শনিবার বোর্ডের দেওয়া বিবরণে স্পষ্ট জানানো হয়, জানুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পরেই কাঁধে সমস্যা শুরু হয় তাঁর।

ঋদ্ধির চোট নিয়ে বোর্ডের এই বিবরণে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি। যা নিয়ে উঠছে বহু প্রশ্ন। ওয়েবসাইটে বোর্ড জানিয়েছে, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে এমআরআই স্ক্যান করে ঋদ্ধিমানের কাঁধে ‘ল্যাব্রাল টিয়ার’ ধরা পড়ে। ক্রীড়া চিকিৎসক ডা. শ্রীকান্ত নারায়নস্বামীর পরামর্শে আল্ট্রাসাউন্ড ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তাঁকে। তার পরে এনসিএ-তে রিহ্যাব শুরু হয় তাঁর।’’

জাতীয় স্তরের এক ফিজিয়ো প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ল্যাব্রাল টিয়ার’ ধরা পড়ার পরেও ঋদ্ধিকে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হল না কেন? তখন থেকেই যদি ঋদ্ধির চোট নিয়ে সতর্ক হত বোর্ড, তা হলে ইংল্যান্ড সফরে দেশের সেরা উইকেটকিপারকে হয়তো পাওয়া যেত।

সেটা না করে আইপিএলের ঠিক আগে ১৯ মার্চ ঋদ্ধিকে ফিট ঘোষণা করে এনসিএ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে বোর্ড। ‘ল্যাব্রাল টিয়ার’ সারিয়ে কেউ মাত্র দেড় মাসে ফিট হয়ে উঠতে পারেন কি না, উঠছে এই প্রশ্নও। ঋদ্ধির ফ্র্যাঞ্চাইজি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হাতও এক্ষেত্রে থাকতে পারে বলে কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

বোর্ডের বিবরণে জানানো হয়েছে, ‘‘ঋদ্ধি ফের চোট পান ৭ মে, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ম্যাচে। বল ধরতে গিয়ে ডান কাঁধের ওপর ভর করে তিনি পড়ে যান দু’বার। তার পরেই কাঁধে ব্যথা শুরু হয়। কাঁধ আড়ষ্টও হয়ে যায়।’’

চোট লাগা জায়গাতেই ফের জোরালো আঘাত লাগায় তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নয়াদিল্লিতে। বোর্ড জানিয়েছে, ‘‘দিল্লিতে দ্বিতীয় বার আলট্রাসাউন্ড ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় ঋদ্ধিকে। এর পরে আইপিএলের পাঁচটি ম্যাচে তাঁকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। তখন ফ্র্যাঞ্চাইজির তত্ত্বাবধানে রিহ্যাব হয় তাঁর। কয়েক দিনের মধ্যে কাঁধের ব্যথা সেরে যায় ও ফের মাঠে নামেন তিনি।’’

কিন্তু ১৫ মে এনসিএ-র প্রধান ফিজিয়ো আশিস কৌশিকের কাছে গিয়ে যা জানতে পারেন ভারতীয় টেস্ট উইকেটকিপার, তা আরও অবাক করার মতো। বোর্ডের বিবরণ অনুযায়ী, ‘‘১৫ মে এনসিএ-র প্রধান তাঁর চোট পরীক্ষা করে জানান, জানুয়ারির শেষ ও ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে ঋদ্ধির চোট যে অবস্থায় ছিল, তেমনই আছে।’’ ভারতীয় দলের ফিজিয়ো প্যাট্রিক ফারহার্টকেও ঋদ্ধির কাঁধের এই অবস্থার কথা জানানো হয়েছিল।

তা সত্ত্বেও ঋদ্ধিকে ফের আইপিএল ম্যাচে নামানো হল কেন, প্রশ্ন উঠছে এই নিয়েও। ফেব্রুয়ারিতে যে চোট সারতে দেড় মাস লেগেছিল বলে বোর্ড জানিয়েছে, সেই একই চোট এ বার মাত্র দু’সপ্তাহে ঠিক হয়ে গেল! বোর্ডের বিবরণে জানা গিয়েছে, ‘‘৩ জুলাই এনসিএ-তে রিহ্যাব করতে গিয়ে ফের কাঁধে ব্যথা ও আড়ষ্টতা অনুভব করেন তিনি। এমআরআই করে জানা যায়, ফেব্রুয়ারির এমআরআই রিপোর্টে কাঁধের যে অবস্থা ছিল, তার আরও অবনতি হয়েছে।’’ চোট পুরোপুরি না সারিয়ে আইপিএলে খেলতে গিয়েই তাঁর টেস্ট ভবিষ্যৎ সঙ্কটে পড়ে গেল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

‘‘৬ জুলাই মুম্বইয়ে কোকিলাবেন অম্বানি হাসপাতালে অস্থিবিশেষজ্ঞ ডা. দিনশ পার্ডিওয়ালা তাঁকে স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে জানান, এই ইঞ্জেকশনে কাজ না হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে। ইঞ্জেকশন নেওয়ার পাঁচ দিন পরেও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ১৩ জুলাই, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়ে দেওয়া হয় ঋদ্ধি আনফিট’’, জানিয়েছে বোর্ড। কিন্তু ১৮ জুলাই টেস্ট দল ঘোষণা করার পরে নির্বাচকদের প্রধান এম এস কে প্রসাদ জানান, ঋদ্ধির বুড়ো আঙুলের চোট এখনও সেরে ওঠেনি, যা ২ জুলাই-এর এক্স রে-তেই সেরে গিয়েছিল বলে ওয়েবসাইটে জানিয়েছে ভারতীয় বোর্ড।

প্রশ্ন উঠছে এনসিএ-র ভূমিকা নিয়েও। ভারতীয় দলের এক নিয়মিত সদস্যকে কেন এ ভাবে কাঁধে চোট থাকা সত্ত্বেও আইপিএলে খেলার অনুমতি দেওয়া হল? শনিবার দেশের ক্রিকেট মহলে এই প্রশ্ন ওঠার পরে দেখা যায় যুবরাজ সিংহ টুইট করে এনসিএ-র প্রশংসা করেছেন। কিন্তু ঋদ্ধি যদি আগামী ছ-সাত মাসে ১০-১১টি টেস্ট খেলার সুযোগ হারান, তা হলে এই এনসিএ-র দিকেই আঙুল ওঠে।

Cricket Wriddhiman Saha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy