Advertisement
E-Paper

অনাথদের পুজো উদযাপনে অভিনব উদ্যোগ বাগানের

পুজোর দিনগুলোতে মা-বাবার হাত ধরে আর পাঁচটা বাচ্চার মতো দুর্গাঠাকুর দেখার সুযোগ নেই ওদের! আইসক্রিম, ফুচকা, চকোলেট খাওয়ার ওরা যে আবদার করবে কারও কাছে, বিশ্ব সংসারে এমন কেউও নেই!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:০৪
খুদেদের সঙ্গে কাতসুমি, শঙ্করলাল, বাগান ফিজিও গার্সিয়া। —নিজস্ব চিত্র

খুদেদের সঙ্গে কাতসুমি, শঙ্করলাল, বাগান ফিজিও গার্সিয়া। —নিজস্ব চিত্র

পুজোর দিনগুলোতে মা-বাবার হাত ধরে আর পাঁচটা বাচ্চার মতো দুর্গাঠাকুর দেখার সুযোগ নেই ওদের!

আইসক্রিম, ফুচকা, চকোলেট খাওয়ার ওরা যে আবদার করবে কারও কাছে, বিশ্ব সংসারে এমন কেউও নেই!

ওরা যে অনাথ!

পুজোর দিনগুলোতেও ওদের আস্তানা বৌবাজারের ‘রেফিউজ’ অনাথ আশ্রম!

উত্‌সবের দিনে অন্য বাচ্চাদের তাদের মা-বাবাদের সঙ্গে নতুন-নতুন জামা পরে ঘুরতে দেখে ওদের মন খারাপ হয়। কিন্তু কোনও উপায় তো নেই। উত্‌সবের দিনে আলোর ছটায় যখন শহর ভেসে যাচ্ছে, তখনও ওদের মনের কোণে নিকষ অন্ধকার।

পাঁচ বছরের গণেশ বা একরত্তি মেয়ে পায়েল সর্দার কিংবা ক্লাস ওয়ানের কার্তিক, সঞ্জনা— ওদের কাছে দুর্গাপুজো মানে চার দিনে চারটে নতুন জামা নয়। সেজেগুজে মণ্ডপে মণ্ডপে প্রজাপতির মতো উড়ে বেড়ানো নয়। বাবা-মার সঙ্গে অঞ্জলি দেওয়া নয়। ওদের বাস্তব বড় কঠিন। বড় নিষ্ঠুর।

কিন্তু ওদেরও তো ইচ্ছে করে নতুন জামা পরতে। পুজোর ক’টা দিন উত্‌সবে মেতে উঠতে। আর সে জন্যই সঞ্জনা-পায়েলদের মুখে হাসি ফোটাতে এ বার উদ্যোগ নিলেন কাতসুমি, বলদীপ সিংহ, জেজের মতো ময়দানের দেশি-বিদেশি ফুটবলাররা।

কী ভাবে? মোহনবাগান ফুটবলাররা একটি ফান্ড তৈরি করে তাতে বিভিন্ন ম্যাচে নিজেদের ম্যান অব দ্য ম্যাচের টাকা অনেক দিন ধরে জমিয়েছিলেন। এমনকী ফুটবলারদের জরিমানার টাকাও জমা পড়েছে ওই বিশেষ তহবিলে। এবং পুজোর আগে সেই টাকার অর্ধেক তুলে দেওয়া হয়েছে কার্তিক, গণেশদের হাতে। মানে অনাথ আশ্রমের কার্তিক-গনেশদের হাতে। বৌবাজারের ওই আশ্রমের প্রায় সাড়ে তিনশো বাচ্চার পুজোর দিনগুলোকে কিছুটা হলেও রঙিন করার সামান্য চেষ্টা করছেন সবুজ-মেরুন ফুটবলাররা।

সোমবার ক্লাবের পক্ষ থেকে ‘রেফিউজ’-এ গিয়েছিলেন বাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী, কাতসুমি এবং ফিজিও গার্সিয়া। ছোট-ছোট ছেলেমেয়েগুলোর জীবন-লড়াই দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন সবুজ-মেরুনের জাপানি তারকা কাতসুমি। কোচ শঙ্করলালকে বলেও ফেলেন, “ওদের জন্য আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।” পরে অবশ্য তাঁকে ঘিরে বাচ্চাদের উন্মাদনার সঙ্গে কাতসুমি নিজেও মেতে ওঠেন ছেলেমানুষের মতোই। সইয়ের আবদার মেটানোর পাশাপাশি বাচ্চাদের সঙ্গে খুনসুটি করতেও দেখা গেল জাপানি মিডিও-কে।

আশ্রম থেকে বার হওয়ার আগে কার্তিক-পায়েলদের কাতসুমি বলে আসেন, “তোমরা পুজোয় অনেক আনন্দ করো। জীবনে অনেক বড় হও।” এই আশ্রমের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক, সিএবি কোষাধ্যক্ষ, বিশ্বরূপ দে বলছিলেন, “মোহনবাগান ফুটবলারদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমার এই ছেলেমেয়েরা দারুণ খুশি কাতসুমিকে দেখে। অনেকে তো আবার ওর কাছে গোলের আবদারও জুড়েছিল। এটাই ওদের কাছে বিরাট প্রাপ্তি।”

শুধু অনাথ বাচ্চারাই নয়, বাগান ফুটবলারদের তৈরি ফান্ডের বাকি অর্ধেক টাকা ক্লাবের মালি এবং ক্যান্টিনে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের দেওয়া হয়েছে। পুজোয় নতুন জামা কেনার জন্য। শঙ্করলাল বললেন, “পুরো উদ্যোগটা আমাদের ফুটবলাররাই নিয়েছে। টাকা জমিয়ে অনাথ-দুঃস্থদের পাশে দাঁড়াতে।”

এ দিকে, বাগানের নতুন বিদেশি সোনি নর্ডি রবিবার শহরে এসেই বলেছিলেন, তিনি সবার সঙ্গে পুজো সেলিব্রেট করতে চান। সোমবারই তিনি একটি পুজো উদ্বোধন করে ফেললেন। সকালে প্র্যাকটিসে না নামলেও ক্লাবে এসেছিলেন। পরিচিত হন টিডি সুভাষ ভৌমিক, টিমের সাপোর্ট স্টাফ এবং সতীর্থদের সঙ্গে।

orphans destitute celebration pujo football
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy