জয়োৎসব। ম্যাচ শেষে জাদরান।
শেষ ওভার। বাকি চার বল। ইতিহাস গড়তে চাই চার রান। দমবন্ধ সেই পরিস্থিতিতে ঝাঁকড়া চুলের শাপুর জাদরান স্নায়ুর উপর অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রণ-সহ ওভারের তৃতীয় বলটাকেই পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারির ওপারে!
এগারো নম্বর ব্যাটসম্যানের শটটা দড়ি পেরোনোর যা অপেক্ষা। কাবুল থেকে কন্দহর, বিজয় মিছিল করে, গোলাগুলি ছুড়ে, বাঁধনহারা উৎসবে ভেসে গেল তখন পর্যন্ত টিভির পর্দায় নিমজ্জিত থাকা দেশ! তালিবানি ত্রাসের মূল ভূখণ্ড থেকে বহু দূরে, নিউজিল্যান্ডের মাঠও ততক্ষণে এক টুকরো আফগানিস্তান। দর্শকাসনে হাজির আফগানরা জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, নেচে, গেয়ে হিন্দুকুশের অমেজ মিশিয়ে দিলেন ডানেডিনের সবুজে। মাথা ঝুঁকিয়ে দেখলেন স্কটরা। কী ভাবে সামিউল্লাহ শেনওয়ারির লড়াকু ৯৬ আর দুই টেলএন্ডারের প্রতিজ্ঞায় রক্তচাপ বাড়ানো স্নায়ু-যুদ্ধে তাঁদের হারিয়ে বিশ্বকাপে ঐতিহাসিক প্রথম জয়ের থ্রিলার লিখল আফগানিস্তান!
টস জিতে ফিল্ডিং নেন অফগান অধিনায়ক মহম্মদ নবি। শাপুর (৪-৩৮) এবং দৌলত (৩-২৯) জাদরান ভাল বল করলেও স্কটরা ২১১ রানের টার্গেট খাড়া করার পর আফগান ব্যাটিংকে ৯৭-৭ করে দিয়ে প্রবল চাপে ফেলেছিল। ওপেনার জাভেদ আহমদি (৫১) এবং শেনওয়ারি বাদে কেউ দাঁড়াতে পারেননি। সেঞ্চুরি ফস্কে শেনওয়ারিও যখন বাউন্ডারিতে ক্যাচ তুলে ফিরছেন, জেতার জন্য তখনও দরকার ১৯ রান। ক্রিজে শেষ দুই ব্যাটসম্যান। স্কটদের জয় তখন নিশ্চিত বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু হামিদ হাসান (অপরাজিত ১৫) এবং শাপুর জাদরান (অপরাজিত ১২) অসম্ভবটাই করে দিলেন। রেকর্ড করল স্কটল্যান্ডও। তিন বিশ্বকাপে এগারো ম্যাচ খেলে একটাও জিততে না পেরে। তারা টেক্কা দিল নেদারল্যান্ডসের টানা দশটি হারের রেকর্ডকে। এ দিকে, জালালাবাদে গোলাগুলি ছুড়ে আনন্দ করতে গিয়ে আহত হন ছ’জন। তবু আফগানদের আশা, “তালিবান বোমা ভুলিয়ে জয়টা আমাদের এক জাতি করে তুলবে।”
ছবি: এএফপি ও গেটি ইমেজেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy