Advertisement
E-Paper

দশ দফা দাওয়াই নিয়ে নামছেন প্রান্দেলি

ইতালি মানে একঘেঁয়ে আলট্রা ডিফেন্সিভ ফুটবল আর মাঝেসাঝে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল তুলে নিয়ে জেতার গল্প ইদানীং আর নেই। আজুরিদের নীল জার্সিও এখন ডাইরেক্ট ফুটবল খেলছে। বল পজেশন রেখে পারলেই আক্রমণ শানাচ্ছে বিপক্ষ ডিফেন্সে। নাই বা সেখানে কেউ মেসির মতো ডিফেন্ডারের বুটের উপর দিয়ে ড্রিবল করে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৪ ০৪:০৮

ইতালি মানে একঘেঁয়ে আলট্রা ডিফেন্সিভ ফুটবল আর মাঝেসাঝে কাউন্টার অ্যাটাকে গোল তুলে নিয়ে জেতার গল্প ইদানীং আর নেই। আজুরিদের নীল জার্সিও এখন ডাইরেক্ট ফুটবল খেলছে। বল পজেশন রেখে পারলেই আক্রমণ শানাচ্ছে বিপক্ষ ডিফেন্সে। নাই বা সেখানে কেউ মেসির মতো ডিফেন্ডারের বুটের উপর দিয়ে ড্রিবল করে। কিংবা রোনাল্ডোর মতো স্পিডে ডিফেন্স চিরে ফেলে। কিন্তু পাস-পাস-পাস আর দুর্দান্ত বোঝাপড়া থেকে গোল তুলে নিতে এখন ইতালিকে হামেশাই দেখা যায়।

এবং এ সবের সৌজন্যে সিজার প্রান্দেলি।

ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপ অফ ডেথে (যেখানে চারটের মধ্যে তিনটে দেশ প্রাক্তন বিশ্বজয়ী) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইতালির প্রথম ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে তাই বুফোঁ, বালোতেলি, পির্লোদের চেয়ে আজুরি শিবিরে আলোচনার কেন্দ্রে তাদের ছাপান্ন বছর বয়সী ম্যানেজার। আর সেটা আরও বেশি মাত্রা পাচ্ছে রুনি-জেরারদের বিপক্ষে লড়াইয়ের আগের দিন প্রান্দেলি তাঁর টিমের এ বারের বিশ্বকাপে আচরণবিধি কী হবে সেটার একটা করে কপি প্রত্যেক ফুটবলারের হাতে তুলে দেওয়ায়।

কী আছে ডি রোসি, বোনুচি, বারজালিদের জন্য প্রান্দেলির গড়া সেই কোড অব কন্ডাক্টে?

মূলত সেখানে পইপই করে প্রান্দেলি তাঁর ছেলেদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, জেতার জন্য ঝাঁপাতে হবে। কিন্তু জিততে গিয়ে কিছুতেই অখেলোয়াড়সুলভ ব্যবহার করা চলবে না। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে বিপক্ষ ফুটবলার এবং রেফারি-সহকারী রেফারিদের উপর মাথা গরম করা চলবে না। ব্রাজিলে এই এক মাস ইতালির যে ম্যাচে আজুরিদের যে ফুটবলার খারাপ আচরণ করবে তাকে পত্রপাঠ দল থেকে ছেঁটে ফেলা হবে। তরুণ ফুটবলারদের দলের সিনিয়রদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে হবে। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সম্মান দেখাতে হবে।

প্রান্দেলির এই আচরণবিধি রচনার পিছনে মনে করা হচ্ছে, এ মরসুমে ইতালির ঘরোয়া ফুটবল মরসুমে প্রচুর প্লেয়ারের মাথা গরমের ঘটনার আধিক্যকে। বিশ্বকাপের মতো সর্বোচ্চ মঞ্চেও ইতালির ফুটবলাররা ঘরোয়া ম্যাচের গরম মেজাজ আমদানি করে বসলে ফুটবল দুনিয়ায় আজুরিদের লজ্জার একশেষ। যেখানে এমনিতেই ম্যাচ গড়াপেটা আর কর ফাঁকি কেলেঙ্কারিতে ইতালির ফুটবল বিশ্বমঞ্চে নিন্দিত। এহেন গড়বড়ে আবহে প্রান্দেলির মতো কড়া মনোভাবের কোচকে ইতালি দলের জন্য ফুটবলদেবতার আশীর্বাদ হিসাবে দেখছেন অনেকে। ইতালির বিশ্বকাপজয়ী কোচ এনজো বেয়ারজোতের (১৯৭৫-৮৬) পর প্রান্দেলিই আজুরিদের প্রথম কোচ যিনি এক টানা পাঁচ বছর এই পদে টিকে আছেন। অথচ তিনি দেশকে না বিশ্বকাপ, না ইউরো কাপ কিছুই এখনও দিতে পারেননি।

কিন্তু প্রান্দেলির জমানায় ইতালির মতো ধারাবাহিক অতীতে খুব কম আজুরি বাহিনীই ছিল। ২০১০ বিশ্বকাপে প্যারাগুয়ে-স্লোভাকিয়া-নিউজিল্যান্ডের গ্রুপে তার আগের বারের কাপ চ্যাম্পিয়ন ইতালি যখন সর্বশেষ স্থান পেল, তার পরেই প্রান্দেলি নীল জার্সির দায়িত্ব নেন। তার পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রান্দেলির ইতালি মাত্র তিনটে প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হেরেছে। ২০১২ ইউরো ফাইনাল (বনাম স্পেন)। ২০১৩ কনফেডারেশনস কাপে আগেই নক আউটে উঠে যাওয়ার পর গ্রুপের শেষ ম্যাচ (বনাম ব্রাজিল) এবং ওই টুর্নামেন্টেই সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে (বনাম স্পেন)। এ বার ব্রাজিলে প্রান্দেলির আর এক চমক— এ বছর সেরি আ-তে যে-যে ইতালীয় ফুটবলারের নামে ক্লাবে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের কাউকে বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না রাখা। বিশ্বকাপ কোয়ালিফাইংয়ে অপরাজিত ইতালির অন্তত আটটা এমন ঘটনা আছে যেখানে প্রান্দেলি স্রেফ অখেলোয়াড়চিত আচরণের কারণে ডি রোসি (তিন বার), বালোতেলি-অসভাল্ডো (দু’বার করে) ও বোনুচিকে (এক বার) খেলাননি।

পেলের দেশেও প্রান্দেলির কাপ-অভিযানে নামার আগে অস্ত্র কোড অব কন্ডাক্ট। আচরণবিধি।

fifaworldcup prandelli italy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy