ন্যু কাম্পে ড্র করায় বার্সেলোনার এ বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অভিযান নিয়ে আকস্মিক সমস্যা তৈরি যদি বার্সা ভক্তদের কাছে এক নম্বর আশঙ্কা হয়, খুব কাছাকাছি থাকবে ফিফার শাস্তি ঘোষণা। যে সিদ্ধান্তের জেরে বার্সার আগামী দুই মরসুমের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
জুনিয়র পর্যায়ে নিয়ম ভাঙায় স্প্যানিশ ক্লাবের দলবদলের উপর ১৪ মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ফিফা। ২০১৪-র ট্রান্সফার গ্রীষ্মকালীন উইন্ডো তো বটেই, ২০১৫-র শীতকালীন উইন্ডোতেও বার্সেলোনা ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনও ফুটবলার কিনতে বা বিক্রি করতে পারবে না। ফিফার বিবৃতিতে অবশ্য এটা পরিষ্কার নয় যে ঠিক কবে থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। তবে বুধবার ফিফার এই ঘোষণার পর বার্সা ভক্তদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, পরের দুটো মরসুমে দলের হাল কী হবে? এমনকী মেসিকে নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। মেসির সঙ্গে ২০১৮ পর্যন্ত চুক্তি থাকলেও বার্সেলোনা বারবার তাঁর টাকা বাড়ানোর কথা বলছে। চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলছে। সম্প্রতি ক্লাবকে নতুন চুক্তির প্রস্তাব দেওয়ার কথা বলেছেন মেসি, এমনটাও শোনা যাচ্ছে। আসন্ন গ্রীষ্মকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোয় বার্সার প্রধান লক্ষ্য ছিল মেসির সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা চাপলে সেখানে আইনি সমস্যা হবে কি না, তা পরিষ্কার নয়।
তা ছাড়া আসন্ন ট্রান্সফার উইন্ডোয় প্লেয়ার কিনতে কাতালান ক্লাব প্রায় ১২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করার লক্ষ্য রেখেছিল। মূলত ডিফেন্স আর গোলকিপিং এই দুটো জায়গায় বার্সা নতুন প্লেয়ার আনার ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ১২ বছর স্প্যানিশ ক্লাবে খেলার পর গোলকিপার ভিক্টর ভালদেস জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ মরসুমের শেষে বার্সা ছাড়তে চান। তার জায়গায় বরুসিয়া মনচেনগ্লাডবাখের ২১ বছর বয়সি গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে স্টার্গেনকে আনার কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছিল।
লিও মেসির টিমের বড় চিন্তার কারণ সেন্ট্রাল ডিফেন্সও। কার্লোস পুয়ল পরিষ্কার করে দিয়েছেন এ মরসুমের শেষেই তিনি অবসর নিচ্ছেন। চোট-আঘাতে জর্জরিত বার্সেলোনা ক্যাপ্টেনের আরও এক বছর মাঠে নামার মতো ফিটনেস নেই বলেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। ৩৫ বছর বয়সি বিশ্বস্ত সৈনিককে বার্সেলোনা নতুন চুক্তির প্রস্তাব দেবে সেটাও নিশ্চিত নয়।
জাভিয়ের মাসচেরানোর পারফরম্যান্সেও খুশি নয় ক্লাব। তাঁর পরিবর্তেও অন্য প্লেয়ার আনার কথাবার্তা চলছিল। শোনা যাচ্ছে তাঁর পরিবর্তে বার্সার টার্গেট চেলসির দাভিদ লুইজ। তাঁর খেলার স্টাইলও বার্সেলোনায় খাপ খেয়ে যাবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে সত্যিই লিও মেসিরা নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লে রিয়াল মাদ্রিদ আর আটলেটিকো মাদ্রিদের মতো টিম সবচেয়ে খুশি হবে। দুর্বল ডিফেন্স আর ‘বুড়ো’ গোলকিপার নিয়ে চললে আগামী মরসুমে বার্সেলোনা কতদূর যেতে পারবে সে নিয়ে ইতিমধ্যেই সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করে দিয়েছেন সমর্থকরা। যে সুযোগে নিজেদের দল আরও গুছিয়ে কাতালান ক্লাবকে টপকে যাওয়ার প্রস্তুতি পাকা করে ফেলার সুযোগ রয়েছে রিয়াল আর আটলেটিকোর সামনে। নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বার্সা কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টসে আবেদন করেও সুবিধা পাবে তারও নিশ্চয়তা নেই। ফ্রান্সের একটি ক্লাব একই রকম শাস্তির বিরুদ্ধে আবেদন করেও রক্ষা পায়নি। তবে আবেদনের রাস্তাতেই সম্ভবত হাঁটবে মেসির ক্লাব।
ধাক্কা খেল চেলসি, বড় জয় রিয়ালের
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বড় জয় পেল রিয়াল মাদ্রিদ ও প্যারিস সাঁ জা।ঁ বুধবার বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-০ গোলে হারাল রিয়াল। দলের তিন গোলদাতা বেল, ইস্কো, রোনাল্ডো। অন্য ম্যাচে চেলসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে অঘটন ঘটাল প্যারিস সাঁ জাঁ। দলের হয়ে তিনটে গোল লাভেজ্জি, লুইস ও পাস্তোরের। চেলসির একমাত্র গোলদাতা হ্যাজার্ড।