Advertisement
E-Paper

সেরা টিম খেলিয়েও হার অস্ট্রেলীয় কাঠিন্যের কাছে

রাত সাড়ে বারোটায় ম্যাচ রিপোর্টটটা লেখার আগে নাইট সমর্থকদের প্রথমেই একটা কথা বলে রাখব। আপনারা টিমটার উপর বিশ্বাস হারাবেন না। কলকাতার টিম মঙ্গলবার হারল স্রেফ কপালদোষে। আর কিছুটা সুপার ওভারে স্টিভ স্মিথের অবিশ্বাস্য মানসিক কাঠিন্যের কাছে।

অশোক মলহোত্র

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:৪৫
জয়ের দৌড় স্মিথ-ওয়াটসনের। মঙ্গলবার মরুশহরে।

জয়ের দৌড় স্মিথ-ওয়াটসনের। মঙ্গলবার মরুশহরে।

রাত সাড়ে বারোটায় ম্যাচ রিপোর্টটটা লেখার আগে নাইট সমর্থকদের প্রথমেই একটা কথা বলে রাখব। আপনারা টিমটার উপর বিশ্বাস হারাবেন না। কলকাতার টিম মঙ্গলবার হারল স্রেফ কপালদোষে। আর কিছুটা সুপার ওভারে স্টিভ স্মিথের অবিশ্বাস্য মানসিক কাঠিন্যের কাছে।

আমি নিশ্চিত, সুপার ওভারে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে স্টিভ স্মিথের বদলে যদি একটা এবি ডে’ভিলিয়ার্স বা অ্যালবি মর্কেল থাকত, তা হলে ম্যাচের শেষটা অন্য রকম হত। স্টিভ স্মিথ দেখিয়ে দিল, অস্ট্রেলীয়রা ‘চোকার’ নয়। সুপার ওভারে সামনে সুনীল নারিন নামক একটা জলজ্যান্ত চাপ থাকলেও ওরা মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচ বের করে নিতে পারে। যেটা এবি ডে’ভিলিয়ার্স আরসিবি ম্যাচে একটা বিনয় কুমারকে পেয়েও পারেনি। স্মিথ জানত, সুপার ওভারের শেষ বলে তিন লাগবে না। দুই করলেই বাউন্ডারির হিসেবে ওরা জিতে যাবে। আর তাই ও অযথা বাউন্ডারি মারার চেষ্টায় না গিয়ে বলটাকে স্রেফ প্লেস করে দিল।

আমি গৌতম গম্ভীরকে দোষ দিই না। শেষ বলে তিন দরকার, এই অবস্থায় যে কোনও ক্যাপ্টেন বাউন্ডারি বাঁচানোর জন্যই ফিল্ড সাজাবে। গম্ভীরের উপায় ছিল না খুব বেশি ফিল্ডারকে তিরিশ গজের সার্কলের মধ্যে রাখার। তাতে বাউন্ডারি খেয়ে যাওয়ার সুযোগ বেড়ে যেত। দূরে ফিল্ড রেখে গম্ভীর ঠিকই করেছে। বরং ফিল্ডার যদি আর একটু তৎপর হত, তা হলে আইপিএল সেভেনের প্রথম সুপার ওভারটা কেকেআরই হয়তো জিতত। স্টিভ স্মিথকে বাহবা দিতেই হবে ওর প্ল্যানিংয়ের জন্য। কিন্তু গৌতম গম্ভীরকেও আমি বাহবা দেব, টিমটাকে একদম সেট করে দেওয়ার জন্য।

হার-জিত ভুলে যান। আইপিএল সেভেনের নিলামের পর থেকেই প্রচুর সমালোচনা হয়েছিল নাইটদের নিলাম নীতির। বলা হচ্ছিল, কেকেআরের বোলিং যতটা ভাল, ব্যাটিং ততটাই খারাপ। গৌতম গম্ভীর আর জাক কালিসকে বাদ দিলে যে ক’টা নাম পড়ে থাকছিল, কোনওটাই ভরসা দেওয়ার মতো নয়। কিন্তু মঙ্গলবার কেকেআর যে টিমটা নামাল, সেটা দেখে মনে হল টিমটার বোলিং যতটা ভাল, ব্যাটিংও ততটাই। আমার তো মনে হয় এ বারের আইপিএলে এটাই সেরা কেকেআর টিম কম্বিনেশন। আগের ম্যাচ রিপোর্টেই বলেছিলাম, ইউসুফ পাঠানকে বসাতে হবে। কারণ ও নেমেই আউট হয়ে গেলে টিমের মিডল অর্ডারে অসম্ভব চাপ পড়ে যাচ্ছে। এ দিন দেখলাম গম্ভীর সেটাই করেছে। আরও ভাল লাগল দেখে যে, মনবিন্দর বিসলাকে ও ওপেনিংয়ে তুলে আনল। যে বছর কেকেআর চ্যাম্পিয়ন হল, সে বার গম্ভীর-বিসলা ওপেনিং জুটিটাই কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে রান করে গিয়েছিল। আইপিএল সিক্সেও তাই। তিনে জাক কালিস। সাকিব আল হাসান বা রবিন উথাপ্পার আগে চার নম্বরে সূর্যকুমার যাদবকে পাঠানোটাও দারুণ স্ট্র্যাটেজি। এতে নাইটদের ব্যাটিং গভীরতা অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। সাত নম্বরে রবিন উথাপ্পা নামছে ১৫২ তাড়া করতেও আর অসুবিধে হচ্ছে না।

যেভাবে হারল নাইটরা...

সবচেয়ে বড় কথা, গৌতম গম্ভীরের ফর্মে ফেরা। এ বারের আইপিএলে প্রথম চারটে ম্যাচে মাত্র ১ করার পর ওকে নিয়ে তুমুল হাসিঠাট্টা হয়েছিল। সেই চাপ নিয়ে নেমে এ দিন আবু ধাবিতে যে ভাবে ৪৪ বলে ৪৫ করে গেল গম্ভীর, তাকে টি-টোয়েন্টির বিচারে অসাধারণ বলা যাবে না। কিন্তু এই একটা ইনিংস ওর আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিল। একটা সময় সাকিব আর সূর্যকুমার যে ভাবে ব্যাট করছিল, তাতে মনে হচ্ছিল কুড়ি ওভারেই ম্যাচটা অনায়াসে জিতবে কেকেআর। সেটা হল না, জেমস ফকনারের অবিশ্বাস্য ডেথ বোলিংয়ের জন্য। দু’ওভারে তখন নাইটদের চাই ১৬, হাতে ছ-ছ’টা উইকেট। ওই অবস্থায় ফকনার এসে চার রান দিয়ে তিনটে উইকেট নিয়ে চলে গেল। নিজের জন্মদিনে টিমকে এর চেয়ে ভাল রিটার্ন গিফ্ট আর কী দিতে পারত! সত্যি বলতে, ফকনারের ওভারটা না থাকলে সুপার ওভারে স্টিভ স্মিথের জেতানোর কোনও প্রসঙ্গই আসে না।

কেকেআরের আমিরশাহি পর্ব মঙ্গলবার শেষ। পাঁচটা ম্যাচে নাইটরা জিতল দুটো, হারল তিনটে। খুব ভাল দেখাবে না পরিসংখ্যানটা। কিন্তু একটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে, এই টিমটাই যখন ভারতে খেলতে নামবে, তখন এদের আরও বেশি শক্তিশালী দেখাবে। আরও বেশি ব্যালান্সড দেখাবে। আমিরশাহির উইকেট টানা পনেরো দিন খেলা হয়ে যাওয়ার পর অনেকটাই স্লো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ভারতের উইকেটগুলো এখনও ফ্রেশ। আমার মনে হয় কেকেআর একদম ঠিক সময় ‘পিক’ করছে। তবে একটা জিনিস ওদের মনে রাখতে হবে। পাঁচটা ম্যাচ হয়ে যাওয়ায় বাকি ন’টা ম্যাচে ওদের ‘মার্জিন অব এরর’-টা অনেক কমে গেল। গম্ভীরদের মনে রাখতে হবে, প্রতিপক্ষকে সুপার ওভার উপহার দিলে আর চলবে না।

ipltag kkr rr
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy