অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
দলীয় তিনটি বৈঠক, লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি, বিদ্বজ্জনেদের সমাবেশে বক্তৃতা— এ সব আছে। কিন্তু বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের এ বারের বঙ্গ সফরে সব থেকে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে তাঁর পুরুলিয়ার সভা। যার পাল্টা সভা করতে এখন থেকেই তৎপর তৃণমূল।
বলরামপুরে প়ঞ্চায়েত ভোটের আগে জগন্নাথ টুডু এবং পরে ত্রিলোচন মাহাতো ও দুলাল কুমার নামে তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। বিজেপির দাবি, ওই তিন জনই তাদের কর্মী। পুরুলিয়ায় পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল সন্তোষজনক ফল করেনি। ভাল ফল করেছে বিজেপি। দলীয় সূত্রের দাবি, তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা যা দেওয়া, তা শাহ দেবেন ওই পুরুলিয়ার সভা থেকেই। শাহর সফর নিয়ে দিলীপবাবুর মন্তব্য, ‘‘তিনি ভোট জিততে আসছেন।’’
শাহ অবশ্য মৃত তিন জনের বাড়ি যাচ্ছেন না। লাগদা গ্রামে বুথ কমিটির বৈঠক সেরে শিমুলিয়া মাঠে জনসভা করার কথা তাঁর। আর পুরুলিয়ায় শাহের সভার রাজনৈতিক তাৎপর্য আগে থেকেই আঁচ করে ওই শিমুলিয়া মাঠেই জনসভা ডেকে ফেলেছে তৃণমূলও। শাহের সভার তিন দিন পরে রবিবার সেখানে সভা করবে তৃণমূল। সেখানে থাকার কথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী শশী পাঁজা ও পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা আদিবাসী নেতা সুকুমার হাঁসদার। ওই সভার প্রস্তুতির জন্য মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরের একটি হোটেলে বৈঠক করেছেন জেলা তৃণমূলের নেতারা। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো অবশ্য দাবি করেছেন, বিজেপির সভার পাল্টা হিসেবে ওই সভা করা হচ্ছে না। সভা হচ্ছে তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিজেপির ‘কুৎসা ও অপপ্রচারের’ জবাব দিতে। তিনি বলেন, ‘‘বলরামপুরে বিজেপির কর্মীদের মৃত্যু যে রাজনৈতিক বিবাদের ফলেই হয়েছে, তা এখনও প্রমাণ হয়নি। বিজেপি প্রমাণ করার চেষ্টা করছে, তৃণমূলের হাতে তাদের কর্মীরা খুন হয়েছেন। বলরামপুরের ঘটনা এত বড় নয় যে, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি এসে সভা করবেন। আসলে ওরা জেলার শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছে। সেই চেষ্টা রুখতেই সভা করছি।”
আরও পড়ুন: চার্টার্ড বিমানে বঙ্গসফরে অমিত
বিজেপির বক্তব্য, শাহের সফর থেকেই দলের লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হবে। আজ কলকাতা এবং হাওড়ায় বৈঠক সেরে কাল, বৃহস্পতিবার তারাপীঠ ও পুরুলিয়া যাওয়ার কথা তাঁর। কলকাতায় জি ডি বিড়লা সভাঘরে দিল্লির ‘শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত আলোচনাসভায় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জাতীয় স্মারক বক্তৃতা করবেন তিনি। যে কালীর ছবি দেখে বঙ্কিমচন্দ্র ‘বন্দে মাতরম্’ গানটি রচনা করেছিলেন বলে কথিত আছে, সেই ছবি ওই অনুষ্ঠানে সংস্থা উপহার দেবে শাহকে। গেরুয়া শিবিরের কল্পিত ভারতমাতার প্রতিকৃতির বদলে ওই অনুষ্ঠানে রাখা হবে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা ‘ভারতমাতা’। ফাউন্ডেশনের বক্তব্য, এই পরিবর্তনও করা হচ্ছে মননশীল বাঙালির পছন্দ মাথায় রেখে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মঙ্গলবার, অর্থাৎ, বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মদিনের এক দিন আগেই টুইট করেছেন, ‘‘সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে জানাই শ্রদ্ধার্ঘ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy