সাংবাদিক সম্মেলনে ভারতী ঘোষ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার পরে হইচই হয়েছিল। তবে ঘাটাল কেন্দ্রে হেরে গিয়ে গেরুয়া রাজনীতিতে এক অর্থে অন্তরালেই ছিলেন প্রাক্তন পুলিশ কর্ত্রী ভারতী ঘোষ। করোনা বিপর্যয়, লকডাউনেও সে ভাবে দেখা মেলেনি রাজ্য বিজেপির এই সহ-সভাপতির। সেই ভারতীর হঠাৎ উদয় ঝাড়গ্রামে, তাঁর পুলিশ-বেলার পুরনো কর্মক্ষেত্রে।
রবিবার বিকেলে অরণ্যশহরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মুখোমুখি হন ভারতী। রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন। নাম না করে ছত্রধর মাহাতোকে ‘প্রাক্তন মাওবাদী’ বলে সমালোচনা করেন। রাজ্যে পঞ্চম তফসিল কার্যকর করার দাবিও জানান ভারতী।
জঙ্গলমহলের চেনা মাটিতে ভারতীর এই ঝটিকা সফরের পরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। জেলা বিজেপি-র সভাপতি সুখময় শতপথীও মানছেন, ‘‘ভারতীদি রাজ্যের নেত্রী। জঙ্গলমহলকে উনি হাতের তালুর মতো চেনেন।’’ তবে কি এ বার ঝাড়গ্রামে নিয়মিত আসবেন? ভারতীর জবাব, ‘‘আমি তো ক্রাইসিস ম্যানেজার হিসেবে আসব।’’
জঙ্গলমহলের শান্তি আনার ক্ষেত্রে পরোক্ষে নিজের ভূমিকা মনে করিয়ে ভারতী এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘আমরা জঙ্গলমহল পরিষ্কার করে দিয়েছি। বাকিটা রাজ্য সরকারের যে সদর্থক ভূমিকা পালনের কথা ছিল, রাজ্য সেটা করেনি।’’ নাম না করে ছত্রধরের প্রসঙ্গ টেনে এখন প্রাক্তন মাওবাদীদের দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগও করেছেন ভারতী। এই ‘মাওবাদী’ কি ছত্রধর মাহাতো? ভারতীর জবাব, ‘‘আমি কমা, ফুলস্টপ না লাগালে আপনারা লাগিয়ে নিন।’’ আবাস যোজনা, কৃষি পেনশনে ভারতী দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলিকে ‘করোনা ম্যানুফ্যাকচারিং সেন্টার’ বলে কটাক্ষও করেন।
পুলিশ সুপার থাকাকালীন ভারতীর বিরুদ্ধে শাসক তৃণমূলের হয়ে কাজের অভিযোগ ছিল। তিনিই এখন পুলিশের বিরুদ্ধে শাসকদলের হয়ে কাজ করার কথা বলছেন! ভারতীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছত্রধরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি জনগণের আন্দোলন করেছিলাম। মাওবাদীদের সঙ্গে সংস্রব ছিল না। আর ভারতীদেবীই তো সাধারণ যুবকদের মাওবাদী সাজিয়ে মূল স্রোতে ফেরানোর নাটক করেছিলেন। ভুয়ো এনকাউন্টারে অনেককে হত্যাও করেছেন।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভানেত্রী বিরবাহা সরেন বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে মানুষের ক্ষতির মূলে রয়েছেন ভারতী। উনি যতই সাধু সজার চেষ্টা করুন জনগণ ওঁকে ঘৃণা করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy