ব্যাঙ্কে ঢোকার মূল কোলাপসিবল গেটের (ডান দিকে) সব তালা ভেঙেই চলেছে লুঠ।—নিজস্ব চিত্র।
থানা থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় সিঁধ কাটল চোর। মঙ্গলবার সকালে ব্যাঙ্কের দরজা খুলতে এসে কর্মীরা টের পেলেন, প্রায় গোটা ব্যাঙ্কটাই লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে চোরের দল!
ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা থানা এলাকায়। থানা থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ওই শাখাটি। দোতলায় ব্যাঙ্ক, নীচে দোকানপাট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এ দিন সকালে সাড়ে ন’টা নাগাদ ব্যাঙ্ক খুলতে আসেন দুই কর্মী। তাঁরা দেখেন, ব্যাঙ্কে ঢোকার মূল কোলাপসিবল গেটের সব তালা ভাঙা। তালাগুলি পড়ে রয়েছে মেঝেতে। সঙ্গে সঙ্গে ওই দুই কর্মী খবর দেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও।
ব্যাঙ্ক কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ভিতরে ঢুকে তাজ্জব বনে যান পুলিশ আধিকারিকরা। গোটা ব্যাঙ্ক লণ্ডভণ্ড। ভিতরে-বাইরে সমস্ত সিসি ক্যামেরা ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যে যন্ত্রে রেকর্ড করে রাখা হয় তা-ও ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে!
(আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।)
আরও পড়ুন: কে বাঘা, সেরা বাইন আমিই! বাজনদারদের হরীতকী গ্রাম চেয়ে আছে পাকা রাস্তার দিকে
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছন জেলার পুলিশ সুপার ভি সলমন নিশাকুমার, অতিরিক্ত জেলাশাসক ইন্দ্রজিৎ বসু-সহ পুলিশ-প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তারা। এখনও ব্যাঙ্কের তরফে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি, ঠিক কত টাকা লুঠ হয়েছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পর জেলা পুলিশ সুপার ভি সলমন নিশাকুমার বলেন, “প্রায় ৫০ লাখ টাকা লুঠ হয়েছে। দুষ্কৃতীরা ভল্ট ভেঙে টাকা লুঠ করেছে।”
আরও পড়ুন: কুকুর খুনের ঘটনায় সন্দেহভাজনরা চিহ্নিত, তিন ছাত্রীকে জেরা পুলিশের, চলছে বিক্ষোভ
প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, গ্যাস কাটারের মতো কোনও যন্ত্র দিয়ে ভল্টের ধাতব পাত কেটে টাকা লুঠ করা হয়েছে। গোটা অপারেশনে সময় লেগেছে অন্তত দু’তিন ঘণ্টা। সেখানেই ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা এবং পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রত্যেকটি ব্যাঙ্কে একটি স্বয়ংক্রিয় বিপদঘণ্টা থাকে। ব্যাঙ্কে জোর করে ঢুকলে বা তালা ভাঙলে সেই বিপদ ঘণ্টা বেজে ওঠার কথা। সেই অ্যালার্ম কাজ করল না কেন? অন্যদিকে, রাতে ব্যাঙ্কের নিজস্ব কোনও নিরাপত্তা রক্ষী না থাকলেও নীচের বাজারে নিরাপত্তার জন্য থাকেন পুলিশ কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়াররা। সে সব সত্ত্বেও কী ভাবে দীর্ঘ এতসময় ধরে এত বড় অপারেশন চালাল দুষ্কৃতীরা?
জেলা পুলিশ সুপারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,“রাত একটার সময় পুলিশ এখানে টহল দিয়ে গিয়েছে। তখনও সব স্বাভাবিক ছিল। এর পরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমরা অনুমান করছি। বাকিটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেবাংলায় খবরপেতে চোখ রাখুন আমাদেররাজ্যবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy