রাজীব কুমার।—ফাইল চিত্র।
একটা ফোন বলছে, ‘উপলব্ধ নয়’। আর একটা ফোন জানান দিয়েছে, ‘সুইচড অফ’। শুক্রবার বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তার জবাব নেই। তাঁর দেহরক্ষীর ফোনও বন্ধ।
কোথায় গেলেন রাজীব কুমার? জানেন না সিবিআই অফিসারেরাও। সিআইডি-র কর্তা হিসেবে ৩৪ নম্বর পার্ক স্ট্রিট-এ সরকারি বাসভবনের দোতলায় যে ফ্ল্যাটে এখন রাজীব থাকেন, তার দরজায় কোনও নেমপ্লেট নেই। এ দিন কলকাতা হাইকোর্ট তাঁর গ্রেফতারির উপরে রক্ষাকবচ তুলে নেওয়ার পরে সেই ফ্ল্যাটেই যায় সিবিআইয়ের একটি দল। ফ্ল্যাটের দরজা ছিল ভিতর থেকে বন্ধ। সিবিআই সূত্রের দাবি, বাড়িতে যিনি ছিলেন, তাঁর হাতেই নোটিস দেওয়া হয়। নোটিস অনুযায়ী, আজ, শনিবার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে রাজীবের হাজিরা দেওয়ার কথা। প্রশ্ন উঠেছে, সল্টলেকে রাজীব জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির না-হলে কী হবে? সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, ‘‘হাজির না-হলে তাঁকে পলাতক বলেই ধরে নেব। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’
কোথায় গেলেন রাজীব?
প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার আদৌ কলকাতায় রয়েছেন কি না, তা নিয়েও এ দিন তুমুল জল্পনা চলে। রাজীবের স্ত্রী আয়কর কমিশনার, এখন রাজস্থানে কর্মরত। রাজীব কি সেখানে গিয়েছেন? ঘনিষ্ঠ মহল বলতে পারেনি। ফোনে রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন সিবিআই অফিসারেরা। কিন্তু ফোনের অবস্থা দেখে তাঁদের মন্তব্য, ‘‘টাওয়ার লোকেশন দেখে যাতে আমরা জানতে না-পারি কোথায় আছেন, তাই ফোন বন্ধ রাখা হয়েছে।’’
রাজীবনামা
• ৩ ফেব্রুয়ারি: কলকাতার সিপি-র বাড়িতে সিবিআই।
• ৫ ফেব্রুয়ারি: সুপ্রিম কোর্ট জানাল, গ্রেফতার করা যাবে না। জিজ্ঞাসাবাদ হবে শিলংয়ে।
• ৯-১৩ ফেব্রুয়ারি: শিলংয়ে ডেকে প্রশ্ন সিবিআইয়ের।
• ১৯ ফেব্রুয়ারি: সিপি-র পদ থেকে অপসারিত।
• ৫ এপ্রিল: হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে সিবিআই।
• ১৬ মে: লোকসভা ভোটের আগে রাজ্য থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লিতে।
• ১৭ মে: সিপি-র উপর থেকে যাবতীয় রক্ষাকবচ তুলে নিল শীর্ষ আদালত।
• ২৬ মে: ভোটের পরে রাজ্যে সিআইডি-প্রধান হিসেবে পুনর্বহাল।
• ৩০ মে: কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন। রক্ষাকবচ।
শুনানি শুরু।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার থেকে ১০ দিনের ছুটিতে রয়েছেন রাজীব। তা সত্ত্বেও শুক্রবার বেলা ১টা নাগাদ ভবানী ভবনে নিজের অফিসে এসেছিলেন তিনি। কেন? তারও উত্তর নেই। ভবানী ভবন থেকে পৌনে তিনটে নাগাদ বেরিয়ে যান রাজীব।
সিবিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টার পরেও রাজীবের হদিস না-মেলায় ৩৪ পার্ক স্ট্রিটে তাঁর ফ্ল্যাটে তিন অফিসারকে পাঠানো হয়। বিকেল পৌনে পাঁচটার সময়ে ওই তিন অফিসার রাজীবের ফ্ল্যাটে যান। ভারতীয় ফৌজদারি বিধির ১৬০ ধারায় সাক্ষী হিসেবে রাজীবকে তলবের নোটিস রেখে আসেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy