Advertisement
১১ মে ২০২৪
Coronavirus

করোনা আক্রান্ত সন্দেহে অসুস্থ বৃদ্ধকে বাড়ি ঢুকতে বাধা

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোসাবা থানার কচুখালি এলাকার ওই বৃদ্ধেরা দুই ভাই। বৃদ্ধ দীর্ঘ দিন ধরে বারুইপুরে থাকতেন। নিজের সংসার নেই। মাঝে মধ্যে গোসাবায় ভাইদের সংসারে যাতায়াত ছিল তাঁর।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রসেনজিৎ সাহা
গোসাবা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২০ ০৩:৫৬
Share: Save:

করোনা আক্রান্ত, এই সন্দেহে বছর পঁয়ষট্টির অসুস্থ বৃদ্ধকে বাড়িতে ঢুকতে বাধা দিলেন পরিবারের সদস্যেরাই। উপায়ান্তর না দেখে গত দু’দিন কাছেই খেয়াঘাটের বিশ্রামাগারে পড়ে ছিলেন বৃদ্ধ। স্থানীয় মানুষ জনের কাছ থেকে খবর পেয়ে ব্লক প্রশাসন তাঁকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সাহায্য চায়। পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁকে ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোসাবা থানার কচুখালি এলাকার ওই বৃদ্ধেরা দুই ভাই। বৃদ্ধ দীর্ঘ দিন ধরে বারুইপুরে থাকতেন। নিজের সংসার নেই। মাঝে মধ্যে গোসাবায় ভাইদের সংসারে যাতায়াত ছিল তাঁর।

দিন তিনেক আগেও আসেন। সর্দি, কাশিতে ভুগছিলেন। তা জানতে পেরে পৈতৃক ভিটেতে ঢুকতে বাধা দেন বাকিরা। বৃদ্ধ বলেন, ‘‘আমার করোনা হয়েছে ধরে নিয়েই ওরা বাড়িতে ঢুকতে দিল না। কিন্তু শরীর ভাল ছিল না। ওই অবস্থায় বারুইপুরে ফিরে যেতে পারিনি। কাছেই খেয়াঘাটের বিশ্রামাগারে আশ্রয় নিই।”

ওই বৃদ্ধের এক ভাই বলেন, ‘‘দাদা বাইরে থেকে এসেছেন। সর্দি, কাশি ছিল। করোনা আক্রান্ত বলেই ওঁকে মনে হয়েছে। বাড়িতে ছোট বাচ্চারা আছে। তারা সংক্রমিত হতে পারে। সে কারণেই এমন করেছি। তবে উনি যেখানে ছিলেন, সেখানে আমরা বাড়ি থেকে খাবার পৌঁছে দিয়েছি।’’

দু’দিন ধরে বৃদ্ধকে অসুস্থ অবস্থায় যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে পড়ে থাকতে দেখে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় মানুষ জন বিডিও সৌরভ মিত্রকে বিষয়টি জানান। তিনি যোগাযোগ করেন থানার সঙ্গে। গোসাবার ওসি অভিজিৎ পাল পুলিশ কর্মীদের পাঠিয়ে উদ্ধার করেন বৃদ্ধকে। শুক্রবার সন্ধ্যায় গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

বিডিও বলেন, ‘‘বৃদ্ধের পরিবার ও আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েতের প্রধান মনোরঞ্জন জোতদার বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘নিজের আত্মীয়েরাই যদি এমন আচরণ করেন, তা হলে পাড়া-পড়শিদের আর কী বলা যেতে পারে!’’

কিন্তু এ ক্ষেত্রে কী করতে পারতেন বৃদ্ধের আত্মীয়েরা?

প্রশাসনের ওই কর্তার কথায়, ‘‘ওঁকে বাড়িতে আলাদা থাকার ব্যবস্থা করে স্বাস্থ্য দফতরকে খবর দেওয়া যেত। তা হলেই যাবতীয় পরীক্ষার ব্যবস্থা করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু তা না করে ওঁরা বৃদ্ধকে বাড়িতে ঢুকতেই দিলেন না। এটা অত্যন্ত অমানবিক আচরণ।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Gosaba
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE