Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

ফিরছেন ২০ হাজার শ্রমিক, চিন্তায় রাজ্য

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে যে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলি এসেছিল, তাতে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ৭৬ জনের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে।

একসঙ্গে এত জনের ‘করোনা স্ক্রিনিং’ কী ভাবে হবে, সেটাই ভাবাচ্ছে হাওড়া জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে।—ছবি পিটিআই।

একসঙ্গে এত জনের ‘করোনা স্ক্রিনিং’ কী ভাবে হবে, সেটাই ভাবাচ্ছে হাওড়া জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০২:৩৬
Share: Save:

রাজ্য সরকার না চাওয়ায় গত কয়েক দিন বন্ধ থাকার পরে আজ, বুধবার কমবেশি ২০টি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের পৌঁছনোর কথা হাওড়া স্টেশনে। আসার পথে রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে থামবে ওই ট্রেনগুলি। বিভিন্ন রাজ্য থেকে ওই সমস্ত ট্রেনে আসছেন প্রায় ২০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক। এক দিনে এত সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক আসার বিষয়টি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। একসঙ্গে এত জনের ‘করোনা স্ক্রিনিং’ কী ভাবে হবে, সেটাই ভাবাচ্ছে তাদের।

জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, এত জনের ‘স্ক্রিনিং’ হাওড়া স্টেশনে করা সম্ভব নয়। আবার করোনার উপসর্গ থাকলেও স্থানাভাবে খুব বেশি সংখ্যক শ্রমিককে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা যাবে না। সবাইকেই হোম কোয়রান্টিনে রাখতে হবে। বাড়ি থেকেই তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে পরীক্ষার জন্য।

হাওড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে যে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনগুলি এসেছিল, তাতে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ৭৬ জনের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। আরও প্রায় ১৫০ জনের রিপোর্ট আসা এখনও বাকি। এর মধ্যেই বুধবার বিভিন্ন রাজ্য থেকে একের পর এক শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনের এসে পৌঁছনোর কথা হাওড়ায়।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর চিন্তিত মূলত মহারাষ্ট্র, দিল্লি, রাজস্থান ও গুজরাত থেকে আসা শ্রমিকদের নিয়ে। কারণ, ওই সব রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের মধ্যেই পজ়িটিভের সংখ্যা সব থেকে বেশি।

আরও পড়ুন: বিমানবন্দরের পুরনো টার্মিনালই কোয়রান্টিন কেন্দ্র

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশিকা মেনেই সমস্ত যাত্রীর ‘স্ক্রিনিং’ করা হবে। কারও শরীরে করোনার উপসর্গ পেলে তাঁকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে পাঠানোর কথা। কিন্তু প্রায় কোনও কোয়রান্টিন কেন্দ্রেই আর জায়গা নেই। তাই শ্রমিকদের শুধুমাত্র ‘স্ক্রিনিং’ করেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেখান থেকেই লালারসের নমুনা নিয়ে পাঠানো হবে পরীক্ষা করাতে। এর পরে যাঁদের রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসবে, তাঁদের পাঠানো হবে কোনও কোভিড হাসপাতালে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এত শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন একসঙ্গে আসছে বলেই আমরা সমস্যায় পড়েছি। রাজ্য সরকার মেডিক্যাল টিম পাঠালেও এত সংখ্যক যাত্রীর ‘স্ক্রিনিং’ করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। তবে চেষ্টা করা হবে। পরিস্থিতি এমনই যে, করোনার উপসর্গ পেলেও আমরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়রান্টিনে জায়গা দিতে পারব না। বাড়িতেই পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: অপহরণ-শঙ্কা নিয়েই কাজে বিদ্যুৎ-যোদ্ধারা

স্বাস্থ্য দফতরের ওই কর্তা জানান, সাম্প্রতিক নির্দেশিকা মেনে ঠিক হয়েছে, বাড়ি থেকেই লালারসের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করানো হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে রিপোর্ট পেতে দেরি হতে পারে। কারণ, আগের প্রচুর রিপোর্টই এখনও পাওয়া যায়নি। তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে অনেক নমুনা নষ্টও হয়ে যাচ্ছে।

এ দিকে, সরকারি হিসেব অনুযায়ী, হাওড়ায় এ দিন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬০। এর মধ্যে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী। আক্রান্ত পুলিশকর্মীর সংখ্যা ৫৫। হাওড়ায় এখনও পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে মোট ৭২০৬ জনের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE