Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

আলো-জল নেই, দুর্ভোগ রাজ্যবাসীর

বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সকালে বলেন, ‘‘মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রায় সর্বত্র বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ-কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরাও রিপোর্ট দিতে পারছেন না।’’

ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়েছে গাছপালা। বিদ্যুৎ নেই, জলের সঙ্কট। ছবি: পিটিআই

ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়েছে গাছপালা। বিদ্যুৎ নেই, জলের সঙ্কট। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২০ ০৪:১০
Share: Save:

বিদ্যুৎ সংযোগ উধাও হয়েছিল বুধবার সন্ধেয়। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালেও আলো আসেনি। পাম্প চালাতে না-পারায়, অনেক বাড়ি ও বহুতলে একফোঁটা জলের জন্য কার্যত মাথা খুঁড়েছেন বাসিন্দারা। একে নেট সংযোগ নেই, তার উপরে মোবাইলের চার্জ ফুরোনোয় যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়। করোনার আবহে বাড়ি থেকে কাজের বিধি মানতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হন অনেকেই। ফলে আমপানের ধাক্কায় শুরু দুর্ভোগ থেকে ঝড় সরার ২৪ ঘণ্টা পরেও মুক্তি মেলেনি বহু মানুষের। বরং আরও শোচনীয় হয় পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার দিনভর পাড়ার টিউবওয়েলের সামনে দেখা যায় ১২ থেকে ৭২ বছর বয়সিদের জল তোলার লম্বা লাইন। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্ধকারে ডুবে থাকে অনেক এলাকা। ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের অভিযোগ, করোনার স্বাস্থ্য বিধি মানতে গেলে রান্না-খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে। তাঁদের প্রশ্ন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা মেরামতে এত সময় লাগছে কেন?

বণ্টন সংস্থা সূত্রে খবর, সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবর্তী জেলাগুলি। বিদ্যুতের লাইনে অসংখ্য গাছ পড়েছে। উপড়েছে বহু টাওয়ার, বিদ্যুতের খুঁটি। বসে গিয়েছে অসংখ্য সাবস্টেশন। ছিঁড়েছে হাই-টেনশন ও লো-টেনশন তার। বিদ্যুৎ কর্তাদের দাবি, অতীতে ঝড়ে বিদ্যুৎ পরিষেবার এই ভয়ানক অবস্থা হতে দেখেননি তাঁরা। বণ্টন সংস্থা সূত্রেরও খবর, এত বেশি গাছ পড়েছে যে, সেগুলো দ্রুত না-সরালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া কঠিন।

বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সকালে বলেন, ‘‘মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রায় সর্বত্র বিচ্ছিন্ন। বিদ্যুৎ-কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। বণ্টন সংস্থার আধিকারিকেরাও রিপোর্ট দিতে পারছেন না।’’ কিন্তু নাকাল রাজ্যবাসীর প্রশ্ন, গাছ কেটে সরানো বা বিদ্যুতের খুঁটি সারাই হবে কত দিনে? লকডাউনের থমকে থাকা এই আবহে প্রশাসন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বিদ্যুৎ ফেরানোর ব্যবস্থা না-করলে, তাঁরা কোথায় যাবেন? পরে রাতে মন্ত্রী বিবৃতিতে জানান, ‘‘রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিটি কর্মী প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করছে। বেশ কিছু জায়গায় পরিষেবা স্বাভাবিক করা সম্ভব হয়েছে। বাকি অংশেও তা দ্রুত স্বাভাবিক করার কাজ চলছে।’’

আমপানের জেরে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় সিইএসসি এলাকার গ্রাহকদেরও। সংস্থার দাবি, তবে ঝড় থামার পর থেকে কাজ শুরু হয়েছে সর্বত্র। ধাপে ধাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। বণ্টন সংস্থার সুত্র অবশ্য বলছে, বিদ্যুৎ পরিকাঠামো যে-ভাবে ভেঙে পড়েছে, তাতে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলিতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন লাগতে পারে। মোবাইল যোগাযোগ মুখ থুবড়ে পড়ায় আরও জটিল হয়েছে পরিস্থিতি।

মন্ত্রী জানান, ঝড়ে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরেই ৫২টি সাবস্টেশন বসে গিয়েছে। বাকি জেলা ও কলকাতার শহরতলিতে বণ্টন সংস্থার এলাকাগুলিতেও কম-বেশি একই অবস্থা। তবে সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত কার্যত বিদ্যুৎ লাইনে কোনও কাজই করা যায়নি। কর্তাদের হিসেব, কয়েক’শ কোটি টাকা লোকসানের মুখে রাজ্যের বিদ্যুৎ শিল্প।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Sovandeb Chattopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE