খড়্গপুরে সাংসদ কার্যালয়ের সামনে দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সকালে। নিজস্ব চিত্র
তিনি মঞ্চে থাকায় ক’দিন আগে শো-কজের মুখে পড়েছিলেন এগরার তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতাকে ক’দিন আগে আবার রেলশহরের তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে রেলের বৈঠকে দেখা যাওয়ায় বিতর্ক বেধেছে। এ বার রেলশহরে এসে মানুষের ইচ্ছেপূরণে একসঙ্গে কাজের বার্তা দিয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ককে চাপে ফেললেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ!
মঙ্গলবার সকালে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ। বিভিন্ন বিভাগ ও ট্রমা ইউনিট ঘুরে দেখেন তিনি। কথা বলেন হাসপাতাল সুপারের সঙ্গেও। কয়েকটি বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মেদিনীপুরের সাংসদ। তার পরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শহরের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেন দিলীপ। রাজনীতির রং মুছে জনপ্রতিনিধি হিসাবে ঐক্যবদ্ধভাবে মানুষের সেবা করা উচিত বলে জানান। সেই প্রসঙ্গেই দিলীপ বলেন, “মানুষ আমাদের থেকে সেবা আশা করেন। জন-প্রতিনিধি নির্বাচনের পরে দল গৌণ হয়ে যায়। রং বাদ দিয়ে একসঙ্গে কাজ করলে সাধারণ মানুষের ইচ্ছেপূরণ হয়। শহরের বিধায়কের সঙ্গেও উন্নয়নের কাজ একসঙ্গে করতে আমি সবসময়ে রাজি।” তবে তৃণমূলকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি তিনি। দিলীপের টিপ্পনি, “তৃণমূলের সংস্কৃতিতে একসঙ্গে কাজের মানসিকতা নেই। ওঁরা নিজেরাই একসঙ্গে থাকতে পারে না!”
দিন কয়েক আগেই রেলের বৈঠকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে দিলীপ ‘ঘনিষ্ঠ’ বিজেপি নেতা প্রেমচাঁদ ঝা ও তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ সরকারকে। তার পরেই প্রদীপের সঙ্গে কাজ করার দিলীপের বার্তা নিয়ে শোরগোল পড়েছে শহরে। প্রদীপ অবশ্য বলছেন, “উনি (দিলীপ ঘোষ) তো সাড়ে তিন বছর বিধায়ক ছিলেন। এখন সাংসদ। শহরে রেলের এলাকায় যে সমস্যা রয়েছে সেগুলি আগে সমাধান করে দেখান। তার পরে সহযোগিতার বিষয়ে ভাবব।”
বিধায়ক থাকাকালীন খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন দিলীপ। পরে তাঁকে সরিয়ে জেলা কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষকে সভাপতি করেছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন দিলীপ। এ দিনও তিনি বলেন, “বিধায়ক থাকাকালীন রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলাম। কিন্তু হাসপাতালের সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্য মিশনে বলার পরে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।” নবনির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ককে আরও চাপে ফেলে দিলীপ জুড়েছেন, “রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতির পদ এখন যিনি বিধায়ক হয়েছেন তাঁর পাওয়া উচিত। জানি না রাজ্য সরকার কী করবে!” এ প্রসঙ্গে প্রদীপের বক্তব্য, “আমি পুরপ্রধান হিসাবে রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য রয়েছি। তাই আলাদা করে সভাপতি হওয়ার প্রয়োজন নেই। সদস্য হিসাবেই কাজ করব।”
এ দিন হাসপাতাল পরিদর্শনের পাশাপাশি রোগীদের ফল বিতরণ করেন দিলীপ। বলেন, “আমি সাংসদ হিসাবে হাসপাতাল দেখতে এসেছিলাম। পরিকাঠামোর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। চিকিৎসকও কম। ঠিকাকর্মীদের বেতন নিয়ে সমস্যা রয়েছে। যেখানে প্রসূতি বিভাগে শয্যা কম, ভিড় বেশি। ট্রমা সেন্টার কোনওমতে চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও আইসিইউ হয়নি।” এ সব নিয়ে এ দিন তিনি হাসপাতালের সুপারের সঙ্গে কথাও বলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy