—ফাইল চিত্র।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি!
দশ বছর আগের কথা। ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম দুর্গ তছনছ করে এক ধাক্কায় এক থেকে উনিশে উঠে এসে এসে জাতীয় সংবাদমাধ্যমের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন বঙ্গের তৃণমূল সাংসদেরা। দশ বছর পরে দুই থেকে আঠারো হওয়া বিজেপির সাংসদেরা ঠিক একই ভাবে আজ আলোচনার কেন্দ্রে। দলের নেতারা বলছেন, পরের লক্ষ্য বাংলা দখল করা। আর রাজ্যে বিজেপিকে আঠারোয় তুলে আনার কারিগর মুকুল রায়ের দাবি, পুজোর আগেই রাজ্য-রাজনীতিতে বড় মাপের চমক আসতে চলেছে।
লোকসভার এনডিএ দলনেতা নির্বাচনে যোগ দিতে আজ দিল্লিতে এসেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদেরা। বেলা সাড়ে চারটে নাগাদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে আঠারো সদস্যের বঙ্গ সাংসদদের দলটি সংসদ চৌহদ্দিতে পৌঁছতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যম। ক্যামেরা-মাইকের ধাক্কাধাক্কি এড়িয়ে, পাশ কাটিয়ে কোনও রকমে সেন্ট্রাল হলে ঢুকে পড়েন রাজ্যের সাংসদেরা। টিম দিলীপ ঢুকতেই ফের এক বার সাড়া পড়ে যায়। প্রকাশ জাভড়েকর, মুখতার আব্বাস নকভির মতো নেতারা এসে দিলীপবাবু ও নতুন সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে যান। সৌমিত্র খাঁ-র মতো যাঁরা পুরনো মুখ, তাঁরা মশগুল হন অন্য রাজ্যের সাংসদদের সঙ্গে খোশগল্পে। সাতটির মধ্যে কেবল একটি বিধানসভায় প্রচার করার অনুমতি পাওয়া সৌমিত্র কী ভাবে অসাধ্যসাধন করলেন, সেই গল্প শুনতে সেন্ট্রাল হলে ভিড় জমে যায় সৌমিত্র দম্পত্তির আশেপাশে।
হুগলি থেকে দু’বারের তৃণমূল সাংসদ রত্না দে নাগকে হারিয়ে দিল্লি আসা লকেট চট্টোপাধ্যায় খুঁজে নিচ্ছিলেন নিজের পুরনো পেশার কজনকে। তাই হয়তো সদ্য জিতে আসা সাংসদ তথা অভিনেতা সানি দেওল, রবি কিষেণের সঙ্গে আলাপ হতেই গল্পে মেতে ওঠেন তিনি। সংসদের পুরনো মুখ এস এস অহলুওয়ালিয়াকে দেখা যায় ঘুরে ঘুরে পুরনো বন্ধুদের হাল-হকিকত জেনে নিতে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসা নতুন সাংসদেরা সময় পেলেই আলাপ সেরে নিচ্ছিলেন আশেপাশের সাংসদদের সঙ্গে।
এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ সকালের বিমানে দিল্লিতে পৌঁছতে শুরু করেছিলেন রাজ্যের সাংসদেরা। সাফল্যের অন্যতম কারিগর মুকুল রায় অবশ্য গত কালই চলে এসেছিলেন দিল্লিতে। জিতে আসা সাংসদদের সম্মানে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় আজ রাজধানীর এক পাঁচতারা হোটেলে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলেন। পরাজিত হলেও ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষকে দেখা গেল সেখানে।
মধ্যাহ্নভোজের পরে জয়ী সাংসদের সঙ্গে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন দলের সংগঠনের দায়িত্বে থাকা নেতা রামলাল। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে প্রথম লক্ষ্য পার হয়েছে দল। এর পর দ্বিতীয় ধাপ হল বিধানসভায় জিতে এসে রাজ্যে ক্ষমতা দখল করা। সকল জেতা প্রার্থীর বায়োডাটা জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২১ সালে। কিন্তু তার আগেই তৃণমূল সরকার পড়ে যাবে বলে এ দিনও ফের দাবি করেন মুকুল। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যের ৫৫ শতাংশ ভোট শাসক দলের বিপক্ষে গিয়েছে। জনভিত্তি নড়ে গিয়েছে তৃণমূলের।’’ শাসক দলের শুধু বিধায়কেরাই নন, বেশ কিছু জয়ী সাংসদও যোগাযোগ করা শুরু করেছেন বলে রাজ্য বিজেপি সূত্রের দাবি। আর মুকুলের দাবি, বড় চমক আসছে এ বছর পুজোর আগেই।
এ দিন সেন্ট্রাল হলের অনুষ্ঠানে অবশ্য থাকেননি মুকুল। রাজ্যে কাজ থাকায় রাতের বিমানে কলকাতা ফিরে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy