ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজে বুথ লেভেল এজেন্টদের (বিএলএ) ভূমিকা আরও শক্তিশালী করতে বড়সড় সাংগঠনিক পদক্ষেপ করতে চলেছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর, আগামী সোমবার কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বিএলএ-দের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠক থেকেই ভোটার তালিকা সংক্রান্ত একাধিক দিকনির্দেশ দিতে পারেন তিনি।
এসআইআর শুরুর পর বিএলওরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশেন ফর্ম বিলি করেছেন। পরে তা সংগ্রহ করে ডিজিটাইজ করেছেন। মঙ্গলবার খসড়া ভোটার তালিকাও প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই পর্বটিকে প্রথম পর্ব ধরা হলে বলা যায় এর পর শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে তালিকা ঝাড়াইবাছাইয়ের কাজ চলবে। এই পর্বেও বিএলও-দের সহযোগিতা করবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি তথা বিএলএ-রা। আগের পর্বের চেয়ে এই পর্বের কাজ কিছুটা অন্য রকম। সেখানে তাঁর দলের ভূমিকা কী হবে মূলত সেই দিকনির্দেশই দেবেন মমতা।
বুধবার বিকেলে কালীঘাটের বাসভবনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিএলএ এবং বিএলএ-২দের নিয়ে ইতিমধ্যেই একটি বৈঠক সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান, সেই বৈঠকেই রাজ্য জুড়ে বুথ স্তরের এজেন্টদের নিয়ে আলাদা বৈঠক করার নির্দেশ দেন মমতা। এর পরই দ্রুত নেতাজি ইন্ডোরে সভা আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হয়। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সভায় বিএল-দের পাশাপাশি সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা নেতাদেরও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। বুথ স্তরে তথ্য সংগ্রহ, ভোটারদের সহযোগিতা এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সমন্বয়—এই তিনটি বিষয়কে সামনে রেখেই কর্মপদ্ধতি ঠিক করে দিতে পারেন মমতা।
আরও পড়ুন:
তবে একটি বড় প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—রাজ্যে তৃণমূলের বিএলএদের সংখ্যা কয়েক হাজার। এত বিপুল সংখ্যক কর্মীকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে বসানোর ব্যবস্থা কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন দলীয় নেতৃত্ব। প্রয়োজনে একাধিক দফায় প্রবেশ বা বিকল্প ব্যবস্থার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় রাজ্য জুড়ে প্রায় সাড়ে ৫৮ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে বলে দাবি উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটার তালিকায় নাম সংযোজন, সংশোধন ও আপত্তি সংক্রান্ত প্রক্রিয়ায় বুথ স্তরের কর্মীদের কীভাবে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় নেতৃত্বের মতে, সাধারণ মানুষ যাতে শুনানির সময় অযথা হয়রানির শিকার না হন, সেই বিষয়টিও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে বিশেষ গুরুত্ব পাবে।