Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘মমতার তোষণ-নীতির জন্য সামাজিক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে’, বিস্ফোরক কেশরীনাথ

এ বার রাজভবন ছেড়ে যাওয়ার মুখে কার্যত বিজেপির সুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তোষণ-নীতি’ নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন তিনি।

কোশরীনাথ ত্রিপাঠী। ছবি: পিটিআই।

কোশরীনাথ ত্রিপাঠী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

রাজ্যপাল হিসেবে তাঁর কার্যকালে সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠতার প্রশ্নে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। বিতর্কে জড়িয়েছেন সরকারের সঙ্গেও। তাঁর বহু কথা এবং কাজে বিজেপির প্রতি ‘পক্ষপাত’ দেখেছে রাজনৈতিক মহল। এ বার রাজভবন ছেড়ে যাওয়ার মুখে কার্যত বিজেপির সুরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তোষণ-নীতি’ নিয়ে সরাসরি মুখ খুললেন তিনি। বললেন, ‘‘মমতার তোষণ-নীতির জন্য সামাজিক সম্প্রীতি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাঁর সবার প্রতি সম মনোভাব পোষণ করা উচিত। রাজ্যের প্রতিটি অধিবাসীকে বৈষম্যহীন ভাবে এবং সমদৃষ্টিতে দেখতে হবে।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, এ রাজ্যে ভোট অবাধ হয় না বলে প্রচুর অভিযোগ এসেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও ভাল নয়।

রাজ্যপালের এই বক্তব্যের রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশিত ভাবেই ব্যাপক চেহারা নিয়েছে। মুখ খুলেছে সব দলই। রাজ্যপালের কথার সমালোচনা করে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন সময় বলেছি, রাজ্যপালের অফিস বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে। চলে যাওয়ার সময় তাঁর এই মন্তব্য সে কথাই প্রমাণ করল। রাজ্যপাল কি বিজেপির খাতায় পয়েন্ট বাড়াচ্ছেন?’’ আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যপাল আমাদের কথাই বলেছেন। রাজ্যপালের এই বক্তব্যের জন্য বাংলার মানুষ তাঁর কাছে ঋণী হয়ে থাকবে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘রাজ্যপাল এত দিন এ সব বললেন না কেন? আসলে তিনি নিজেই তোষণের রাজনীতিকে সমর্থন করে এসেছেন।’’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘রাজ্যপালের মুখে এ সব মানায় না। কারণ, মমতা সাম্প্রদায়িকতার প্রতিযোগিতামূলক রাজনীতি করেছেন। একতরফা নয়।’’

আজ, রবিবার রাজ্যপাল পদে পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে বিদায় নিচ্ছেন কেশরী। শনিবার পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অনেক উন্নতি প্রয়োজন। আমি জানি না এখানে কেন মানুষ হিংসার পথ নেয়। এর পিছনে রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক কারণ থাকতে পারে। বাংলাদেশি অথবা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি বলে বহু অভিযোগ পেয়েছি। পুলিশের উপরতলার অফিসারেরা ভাল। কিন্তু নিচুতলার পুলিশ কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের দিকে ঝুঁকে থাকেন। তাই নির্বাচনের কাজে মানুষের আস্থা অর্জনে তাঁরা ব্যর্থ।’’

মমতার ‘দূরদষ্টির’ প্রশংসা করার পাশাপাশি কেশরীনাথ এ-ও বলেছেন, ‘‘মমতা বড় বেশি আবেগপ্রবণ। তাঁর সংযত হওয়া প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Keshari Nath Tripathi Mamata Banerjee BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE