মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে নরেন্দ্র মোদীর ‘বিচার’ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠের জনসভায় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নাম করে করে মমতা বলেন, ‘‘বেঁচে যদি থাকি, মোদীবাবু, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে কড়ায় গণ্ডায় হিসেব নিয়ে ছাড়ব। যত চুরি করেছ, যত ডাকাতি করেছ, যত খুন করেছ, তার ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বিচার হবে। ৫৬ ইঞ্চি আর দেখিও না।’’
মানুষের কাছে তাঁর আবেদন, ‘‘ওই বিষাক্ত চোখ, বিষাক্ত নিঃশ্বাসের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। এমন ভাবে ভোট দিন যাতে বাংলার মানুষের দিকে ওরা তাকানোর সাহস না পায়।’’
এরই সঙ্গে মহাভারতের কৌরব-চরিত্রের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘সুশাসন নিয়ে আসবেন বলছেন কিন্তু আপনিই তো দুঃশাসন। বিজেপিতে দু’জন রয়েছেন দুর্যোধন ও দুঃশাসন। আপনি আর আপনার দলের সভাপতি (অমিত শাহ)।’’
রবিবার মোদী এই রাসমেলার মাঠ থেকেই মমতাকে আক্রমণ করে ভোটের পরে বেআইনি অর্থ লগ্নি সংস্থা-দুর্নীতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টা পরে মমতা প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা বিঁধে বলেন, ‘‘এই ভোটটা কি আমার ভোট?
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এটা দিল্লিতে বদলের ভোট। আপনারই কৈফিয়ত দেওয়ার কথা। আর আপনি আমার কাছে কৈফিয়ত চাইছেন?’’ তাঁর দলের বেশ কিছু নেতাকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। কয়েক জন ইতিমধ্যেই জেলেও থেকেছেন। মমতার অভিযোগ, ‘‘আমাদের সময়ে সারদা হয়নি। সিপিএমের সময়ে হয়েছে। এক জন কমরেডকেও গ্রেফতার করেছেন? কেন করেননি এতদিন?’’ এরই সঙ্গে তাঁর দল থেকে বিজেপিতে যাওয়া মুকুল রায়কে ইঙ্গিত করে এ দিনও মমতা বলেন, ‘‘আপনি কাকে সঙ্গে নিয়ে সভা করেছেন কাল?’’
রবিবারের জনসভা থেকেও সারদা-নারদকাণ্ডে মুকুলকে নিশানা করেছিলেন মমতা। এ দিন একই সঙ্গে কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধেও নানা কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলেন তিনি। তাঁর দাবি, ওই সব কেলেঙ্কারির জন্যই তাঁকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
বাংলায় সার্বিক ভাবে যেউন্নয়ন হয়েছে, তার খতিয়ান দিয়ে মোদীকে ফের আক্রমণ শানান মমতা। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি যা কাজ করেছি তার এক শতাংশও করে দেখাতে পারবেন? এক শতাংশ? লজ্জা করে না?”
লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মমতা-মোদীর এই দ্বৈরথের মধ্যে এ রাজ্যের বেশ কিছু অফিসার রদবদল করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই বদল কেন্দ্রের ‘অনুমোদনে’ই বলে গত দু’দিন ধরে তোপ দাগছেন মমতা। এ দিনের জনসভাতেও সেই প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ভয় দেখিয়ে চোখ রাঙিয়ে কিছু হয় না।’’
তবে রাজ্যে ভোট-মরসুমে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রতি যাতে ভোটাররা কোনও রকম অসহযোগিতা না করেন, সেই পরামর্শ দিয়ে মমতার বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে, দু’দিন পরে চলে যায়। সারা বছর রাজ্য সরকারের পুলিশ থাকে। তারা আসবে তাদের ভালবাসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy