Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Mamata Banerjee

১০ বছর খেয়ে এখন বিরোধী! তোপ মমতার

মমতা খোলাখুলিই জানিয়ে দেন, যাঁরা বিজেপিতে যেতে চান, তাঁরা যেতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জলপাইগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

জলপাইগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: পিটিআই।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫৩
Share: Save:

নাম করলেন না কারও। তবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনায় থাকা নেতাদের উদ্দেশে আক্রমণের মাত্রা তীব্র করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘দশ বছর ধরে পার্টির হয়ে খেয়ে, দশ বছর সরকারে থেকে সরকারের সবটা খেয়ে ভোটের সময় এর সঙ্গে, ওর সঙ্গে বোঝাপড়া করা!’’ তার পরেই মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘আমি কিন্তু তাঁদের সহ্য করব না, এটা মাথায় রাখবেন।” শুধু তাই নয়, খোলাখুলিই জানিয়ে দেন, যাঁরা বিজেপিতে যেতে চান, তাঁরা যেতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জলপাইগুড়ির এই দলীয় সভায় এ দিন বিজেপিকেও চড়া সুরে আক্রমণ করেন মমতা। চার দিনের উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার জেলার দলীয় সমাবেশে বক্তৃতা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে তিনি যান কোচবিহারে। সেখানে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সেরে একটি হাসপাতালের নতুন ভবনের উদ্বোধন সহ কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন তিনি। পরে শিবযজ্ঞ মন্দির ও মদনমোহন মন্দিরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ বুধবার কোচবিহারে দলীয় সমাবেশ করার কথা রয়েছে তাঁর।

এ দিন জলপাইগুড়ির জনসভায় একেবারে নির্বাচনী প্রচারের মেজাজেই ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলের বেসুরো নেতাদের আক্রমণের পাশাপাশি মমতা এ দিন সুর চড়িয়েছেন বিজেপির বিরুদ্ধেও। তিনি বলেন, ‘‘কখনও বলছে মারব, কখনও বলছে তৃণমূলের অফিস জ্বালাব!’’ তার পরেই মমতার হুঁশিয়ারি, ‘‘আমি ভাল তো খুব ভাল। একশো ভাগ শান্তির লোক। কিন্তু আমাকে যদি আঘাত করো, আমি যে প্রত্যাঘাত করব তোমরা কোটি কোটি গুন্ডা এনেও তা রুখতে পারবে না।’’

আরও পড়ুন: সিগারেট ছাড়ারই চেষ্টা করব, ডাক্তারদের কথা দিলেন বুদ্ধদেব

ডায়মন্ড হারবারে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার কনভয়ে অশান্তি নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি পারস্পরিক দোষারোপ শুরু হয়েছিল আগেই। সেই সূত্রে সে দিনের কর্তব্যরত তিনি আইপিএস অফিসারকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো নিয়েও এ দিন কেন্দ্রীয় সরকারের কড়া সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সেই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়ে মমতা বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ রাজ্য সরকারের অধীনে। তাদের ডেকে পাঠাচ্ছে। ভাবছে, কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে রাজ্যসরকারের পুলিশদের বদলি করে দিয়ে, ভয় দেখাবে।’’ তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে ভয় পায় না তাঁকে ভয় দেখাবে কী করে!’’ একই সঙ্গে মমতার কটাক্ষ, ‘‘রাষ্ট্রপতি শাসন করে দেখাক না! আমার কাজ কমে যাবে। আমি ঘুরে ঘুরে প্রচার করব। আর তোমাদের ভোটটাও নিয়ে নেব।’’

গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে কোনও আসন পায়নি তৃণমূল। সে দিক থেকে বিধানসভা নির্বাচনের আগে জমি ফেরাতে এ দিন দলীয় কর্মীদের জন্যও আচরণবিধি নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার কথাও বলেন তৃণমূলনেত্রী। এ দিনের সমাবেশে ফের নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে এনআরসি-এনপিআর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মমতা। এই প্রসঙ্গে অসমের কথা উল্লেখ করে তিনি।

আরও পড়ুন: জিতেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন মমতা, এ বার বিক্ষুব্ধ বাণীও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE