Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুজো কমিটির আন্দোলন পথে আনলেন মমতা

ফেসবুকে তৃণমূলের ‘আমার গর্ব মমতা’ পেজেও এ দিন করধার্যের প্রতিবাদে ব্যঙ্গচিত্রে দেখানো হয়েছে, আয়কর অফিসার দশভুজার কাছে জানতে চাইছেন, ‘‘আপনার প্যানকার্ড, আধার কার্ড দেখান। শেষ কবে আইটি রিটার্ন ফাইল করেছেন?’’

মমতার এই আন্দোলন অনেকটাই সফল হবে বলে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের ধারণা।—ছবি পিটিআই।

মমতার এই আন্দোলন অনেকটাই সফল হবে বলে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের ধারণা।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৫
Share: Save:

আগেই প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার আন্দোলন পথে নিয়ে এলেন তিনি।

পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু দুর্গাপুজো কমিটিকে আয়কর দেওয়ার নোটিস পাঠানোর প্রতিবাদে মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন পুজো কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে অবস্থান-বিক্ষোভ করল তৃণমূলের বঙ্গজননী এবং মহিলা শাখা। কোনও ভাবেই পুজো কমিটিগুলির উপর কর ধার্য করা মেনে নেওয়া হবে না বলে অবস্থান-মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। রাতে ফেসবুকে মমতা লেখেন, ‘পুজোর সঙ্গে যুক্ত সকলের আয় থেকে টিডিএস কাটা আসলে টেরিব্‌ল ডিজাস্টার স্কিম (ভয়ঙ্কর ধ্বংসাত্মক প্রকল্প)।’ আয়কর দফতর একটি বিবৃতিতে এ দিনই দাবি করেছে, বাংলার অনেক পুজোকমিটিই আয়কর সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য তাদের কাছে জমাও দিয়েছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ফেসবুকে তৃণমূলের ‘আমার গর্ব মমতা’ পেজেও এ দিন করধার্যের প্রতিবাদে ব্যঙ্গচিত্রে দেখানো হয়েছে, আয়কর অফিসার দশভুজার কাছে জানতে চাইছেন, ‘‘আপনার প্যানকার্ড, আধার কার্ড দেখান। শেষ কবে আইটি রিটার্ন ফাইল করেছেন?’’

তবে বিজেপি যে ভাবে দুর্গাপুজোকে দখলে উদ্যোগী হয়েছে, তার মোকাবিলায় মমতার এই আন্দোলন অনেকটাই সফল হবে বলে রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের ধারণা। কারণ কর-বোঝায় বেশিরভাগ পুজো কমিটিরই ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা। সেই দিক থেকে মমতা অনেক পুজো কমিটিরই সমর্থন আদায় করে নেওয়ার পথ খোলা রাখলেন বলে তাঁদের অভিমত।

ধর্নামঞ্চে বঙ্গজননী শাখার সভানেত্রী ও তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের মত, ‘‘পুজো কমিটিগুলিকে নিয়ে আয়কর দফতর বসে আলোচনা করুক। তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে কেন সকলের উপর কর বসানোর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে?’’ তৃণমূলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একই সুরে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘রাজ্যে ক্ষমতায় আসার অনেক আগে থেকেই আমরা দুর্গাপুজোকে বাঁচিয়ে রেখেছি। কোনও ভাবেই করের ভয় দেখিয়ে পুজোগুলিকে দখল করা যাবে না। পুজোর মধ্যে কোনও রকম রাজনীতি দেখতে চাই না।’’

চেতলা অগ্রণী দুর্গাপুজো কমিটির কর্তা ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বিজেপিকে দুষে বলেন, ‘‘টাকার থলি নিয়ে পুজো কমিটিগুলি দখল করতে গিয়েছিলেন। পারেননি। তাই পুজোগুলো বন্ধ করতে চাইছে হিন্দুত্ববাদী দল।’’ বিজেপিকে মানব-বিরোধী দল বলে কটাক্ষ করে ফিরহাদের মন্তব্য, ‘‘বাঙালির হৃদয়ে জয় মা দুর্গা রয়েছে। ফলে কোনও বর্গীর ভাষায় বাংলার মানুষ কথা বলবে না।’’ পুজো কমিটিগুলি লাভজনক সংস্থা নয় বলে দাবি করেছেন গড়িয়াহাটের একটি পুজো কমিটির প্রধান ও রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে আয়ই করে না, তার উপর আয়কর বসানো হবে কী ভাবে? আসলে দুর্গাপুজোগুলি দখল করতে চাইছে ওরা (বিজেপি)।’’

ধর্নামঞ্চে শামিল হয়ে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের কর্তা শাশ্বত ঘোষ বলেন, ‘‘কর বসালে কেউ পুজোর সঙ্গে যুক্ত হতে চাইবে না। অনেকের রুটি-রুজি জড়িয়ে পুজোর সঙ্গে। তাঁদের পেটেও থাবা বসানোরও চক্রান্ত চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE