Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Open University

মুক্ত বিদ্যালয়ের পরীক্ষা বাড়িতে কেন, উঠছে প্রশ্ন

করোনার জন্য রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে ২০২০ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৩১
Share: Save:

অতিমারিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বার পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় কাউন্সিল পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাড়ি থেকে দেওয়ার বন্দোবস্ত হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বড় অংশের প্রশ্ন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার ব্যবস্থা হল কেন? তাঁদের আশঙ্কা, এই সুযোগে বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীই বই খুলে লিখবেন।

করোনার জন্য রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে ২০২০ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। ওই বিদ্যালয় সূত্রের খবর, তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা আজ, সোমবার শুরু হচ্ছে এবং উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হবে ২ ফেব্রুয়ারি। কাউন্সিল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের যে-কোনও কেন্দ্র থেকে নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিতে পারবেন। ওই সব কেন্দ্র থেকে পরীক্ষার প্রশ্ন ও খাতা সংগ্রহ করতে পারবেন পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও। উত্তর লিখে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মুক্ত বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে খাতা জমা দিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষার্থীরা অনলাইনেও প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের প্রিন্ট আউট নিয়ে উত্তর লিখে কেন্দ্রে জমা দিতে পারেন।

সাধারণ মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিকের মতো রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়েরও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নির্দিষ্ট কেন্দ্রে বসেই দেওয়ার কথা। করোনার কারণে গত বছর এই দু’টি পরীক্ষা না-হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকেই স্বস্তিতে।

কিন্তু এতে প্রকৃত মূল্যায়ন হবে কি না, সেই বিষয়ে শিক্ষা শিবিরের একাংশ সন্দিহান। “মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মার্কশিট সাধারণ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের সমতুল্য। মুক্ত বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে যে-কোনও ধরনের উচ্চশিক্ষা পাঠ্যক্রমে ভর্তি হওয়া যায়। বসা যায় সব ধরনের চাকরি পরীক্ষাতেও। এই অবস্থায় রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাড়িতে বসে দিলে প্রকৃত মূল্যায়ন হবে না,” বলেন কাটজুনগর স্বর্ণময়ী বিদ্যাপীঠ, উচ্চ মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষাবিদ কাজি মাসুম আখতার। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষকের মতে, কোনও শিক্ষক-নজরদার ছাড়াই বাড়িতে বসে পরীক্ষা দেওয়া মানে প্রায় সকলেই বই খুলে পরীক্ষা দেবেন। অনেক পরীক্ষার্থী নিজে না-লিখে শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের দিয়েও উত্তর লিখিয়ে নিতে পারেন। ‘‘এ ভাবে পরীক্ষা দেওয়া এবং পরীক্ষার পরে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন হবে হাস্যকর,” মন্তব্য ওই শিক্ষকের। শিক্ষকদের একাংশের মতে, গত বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা আর পিছোনো সম্ভব না-হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা যেত। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়ে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারত। তা না-করে এ-রকম দু’টি বড় পরীক্ষা বাড়িতে বসে দেওয়ার বন্দোবস্ত হল কেন, সেটা তাঁদের মাথায় ঢুকছে না বলে জানান অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাই।

“করোনার জন্য পরীক্ষা নেওয়া যায়নি, পরীক্ষার্থীরা ভাল করে পড়তেও পারেনি। ক্লাসও হয়নি। পরীক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার মধ্যে পড়াশোনা করতে হয়েছে। তাই শিক্ষা দফতর এ বার বাড়িতে বসেই ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে,” বলেন পশ্চিমবঙ্গ রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় কাউন্সিলের সভাপতি অমরেন্দ্র মহাপাত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Open University Examination
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE