Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Illegal

‘ব্যান পিরিয়ড’ বাজারে ঢালাও সামুদ্রিক মাছ!

দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলেন, “মরসুমে সমুদ্রে ট্রলারগুলোর দাপটে মোট মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। এখন বছরে যে মাছ হয়, তা বিক্রি করে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবিদের জীবিকা চলে না। তাই জীবিকার স্বার্থে এই নিষিদ্ধ  সময়েও ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের  মাছ ধরতে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি।’’

বেচাকেনা: বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। নিজস্ব চিত্র

বেচাকেনা: বাজারে দেদার বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৮ ০২:১৭
Share: Save:

রামনগর, কাঁথি বা দিঘার বাজারে গেলেই চোখে পড়ছে ঢালাও সামুদ্রিক লটিয়া, রুপা পাটিয়া, রুলি, তাপড়া, ভোলা, লাল চিংড়ি সহ আরও নানা রকমের মাছ। মাছপ্রিয় বাঙালি তাতে খুশি হলেও বছরের এই সময় বাজারে এই ধরনের মাছের ভরপুর জোগানে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন, এই দু’মাস সমুদ্রে মৎসজীবীদের মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকে। বর্তমানে সেই সময়সীমা থাকাকালীন বাজারে এভাবে মাছের জোগান থাকায় নিষেধাজ্ঞার সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এপ্রিল থেকে জুন মাস সামুদ্রিক মাছের প্রজননকাল হওয়ায় সরকার এই পিরিয়ডে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। সেই সঙ্গে আগামীদিনে সামুদ্রিক মাছের নানা প্রজাতির সুরক্ষারও ব্যবস্থা করাও ‘ব্যান পিরিয়ড’ এর উদ্দেশ্য।

কিন্তু এই নিষিদ্ধ সময়কালে কাঁথি মহকুমার বিভিন্ন বাজারে দেদার বিকোচ্ছে সামুদ্রিক মাছ। কাঁথি, জুনপুট, পিছাবনি, আলাদারপুট, বালিসাই, চাউলখোলা-সহ জেলার বিভিন্ন বাজারে অসময়ের এই সামুদ্রিক মাছ কিনতে ভিড় হচ্ছে ভালই। মরসুমের তুলনায় দামও বেশি।

এই অবস্থায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা কারা অমান্য করছে? এ নিয়ে মৎস্য দফতরের নজরদারিই বা কোথায়?

মৎস্যজীবী সংগঠনগুলির একাংশের অবশ্য দাবি, এই সময়ে মাছ না ধরলে তাঁরা জীবিকা সঙ্কটে পড়বেন। সেই কারণেই মাছ ধরতে হয়। শুধু তাই নয়, তাঁরা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের ওই নিষিদ্ধ সময়সীমার বাইরে রাখার আবেদন জানিয়েছেন। দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি দেবাশিস শ্যামল বলেন, “মরসুমে সমুদ্রে ট্রলারগুলোর দাপটে মোট মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ক্রমশ কমছে। এখন বছরে যে মাছ হয়, তা বিক্রি করে ক্ষুদ্র মৎস্যজীবিদের জীবিকা চলে না। তাই জীবিকার স্বার্থে এই নিষিদ্ধ সময়েও ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীদের মাছ ধরতে দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি।’’

‘কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতি’-র সম্পাদক লক্ষীনারায়ণ জানা বলেন, “ক্ষুদ্র মৎস্যজীবিরা হস্তচালিত নৌকায় বেউদি জালে মাছ ধরে। তাতে সামুদ্রিক মাছের ব্যাপক ক্ষতি হয় না। তাই তাঁদের ব্যান পিরিয়ডের বাইরে রাখার জন্য রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি।’’

মৎস্য দফতরের সহ মৎস্য অধিকর্তা (মেরিন) রামকৃষ্ণ সর্দার বলেন, “রাজ্য সরকার সমুদ্রে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মাছ ধরার অনুমোদন দেয়। কিন্তু তার বাইরে দেখভালের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। কিন্তু মৎস্যজীবিরা যদি ওই সীমার বাইরে গিয়ে মাছ ধরেন, সে ক্ষেত্রে দায়িত্ব কে নেবে? এই বিষয়ে কিছু অসুবিধা রয়েছে। তবে পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Fish trading Ban period
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE