দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ। ইনসেটে দীপক ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
ভরদুপুরে তৃণমূল ব্লক সভাপতিকে গুলি করে, কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করল দুষ্কৃতীরা। রবিবার এই হামলার ঘটনা ঘটে বীরভূমের খয়রাশোলে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুর্গাপুরের মিশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খয়রাশোলের তৃণমূল ব্লক সভাপতি দীপক ঘোষ।
সূত্রের খবর, অবৈধ কয়লা খাদানের দখলকে কেন্দ্র করে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জেরেই এই হামলার ঘটনা। যদিও গোষ্ঠীকোন্দলের কথা অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অভিযোগ, বিজেপি ঝাড়খণ্ড থেকে দুষ্কৃতী এনে এই খুনের চেষ্টা চালিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নিজের ঘনিষ্ঠ অনুগামী ভোলা ঘোষকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রগাড়িয়াতে নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন দীপক। বাইক চালাচ্ছিলেন ভোলা। সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়ি যাওয়ার পথে অজয় নদের উপর সাঁকো পেরনোর সময় ‘সুপার’ ইটভাঁটার সামনে দীপকের বাইকের পথ আটকে দাঁড়ায় অন্য একটি মোটর সাইকেল। ওই মোটর বাইকে সওয়ার ছিলেন তিনজন আততায়ী। সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা প্রথমে ভোজালি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে দীপককে। পুলিশকে ভোলা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা ভোজালি দিয়ে কোপানোর পাশাপাশি খুব কাছ থেকে গুলি করে দীপককে, যা দীপকের গাল ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। গুলির আওয়াজ শুনে পাশের ইটভাঁটা থেকে লোকজন ছুটে এলে আততায়ীরা পালিয়ে যায়। এর পরই দীপককে নিয়ে আসা হয় নাকড়াকোন্দা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: ‘ওরা কিন্তু ভুল করছে, আমি কাউকে ছেড়ে কথা বলব না’, শাসানি অনুব্রতর
বেআইনি কয়লা এবং পাখর খাদানের দখল নিয়ে খয়রাশোল এলাকায় শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। ক’দিন আগেই খয়রাশোলের বড়রা এলাকায় একটি দলীয় কার্যালয় বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছিল। তদন্তে উঠে আসে যে ওই কার্যালয়ে প্রচুর বোমা মজুত করে রাখা ছিল।
আরও পড়ুন: মনস্কামনা পূরণ করতে ওড়িশায় শিশুকে ‘বলি’ দিল দাদা-কাকা!
২০১৪ সালে এই দীপক ঘোষের দাদা অশোক ঘোষ খুন হন। তিনিও খয়রাশোলের শাসক দলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। অশোকের খুনের এক বছরের মধ্যে খুন হন অশোক ঘোষের বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত অশোক মুখার্জি। দীপক ঘোষের অনুগামীদের অভিযোগ, এর আগেও কয়েকবার দীপককে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: পুলিশের সামনেই জাহাজের কার্নিশে পা ঝুলিয়ে দেদার সেলফি!
সম্প্রতি খয়রাশোলের এই দলীয় কোন্দল সামাল দিতে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দীপককে ব্লক সভাপতির দায়িত্ব দেন। অন্য দিকে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত উজ্জ্বল হক কাদরীকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের মতে, এতে যে কোন্দলের চোরা স্রোতে বিন্দু মাত্র বাঁধ দেওয়া যায়নি, তা এ দিনের ঘটনাতেই স্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy