গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানেই সাম্প্রতিক কালে উপনির্বাচন হয়েছে সবং, নোয়াপাড়া বিধানসভা বা উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে। প্রতি বারই বুথ দখল, গা-জোয়ারির অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তার পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আওতায় সদ্য হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। যেখানে পুরো নির্বাচনটাকেই ‘প্রহসন’ বলে মন্তব্য করেছে বিরোধীরা। এমন বাতাবরণে অন্য রকমের নির্বাচন দেখা গেল মহেশতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে। যেখানে ভোট ঘিরে তেমন কোনও অশান্তির অভিযোগ নেই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারিতে ভোটের চেহারা দেখে বিরোধীরা বরং স্বস্তিতেই!
রমজানের জন্য মহেশতলায় ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়েছিল। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভোট পড়েছে প্রায় ৭৪%। রাজ্যে নির্বাচন ঘিরে লাগাতার বেনিয়ম এবং গোলমালের অভিযোগের পরে এ দিনের ঘটনাশূন্য ভোটের পিছনে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের তৎপরতাই কাজ করেছে বলে উল্লেখ করছেন মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরের কর্তারা। বিরোধীরা অবশ্য কেন্দ্রীয় বাহিনীকেও কৃতিত্ব দিচ্ছে। তাদের বক্তব্য, এর আগেও ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে কিন্তু তাদের মোতায়েনে প্রভাব খাটিয়েছে রাজ্যের শাসর পক্ষ। যে কারণে ২০১৪-র লোকসভা, ২০১৬-র বিধানসভা বা সাম্প্রতিক অতীতের উপনির্বাচনেও গণ্ডগোলের অভিযোগ এসেছে। এমনকী, ভোটের দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা মুর্শিদাবাদে হাজারদুয়ারি ঘুরে দেখছেন, এ দৃশ্যও দেখা গিয়েছে! কিন্তু এ বার তেমন কিছু ঘটেনি। গোটা বিধানসভা কেন্দ্র জুড়েই তাদের অস্তিত্ব চোখে পড়েছে।
আরও পড়ুন: এত উন্নয়ন, তবু মুখ ফেরাল কেন জঙ্গলমহল?
পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের ‘গা-জোয়ারি’র বিরুদ্ধে তাঁরা সরব ছিলেন। কিন্তু এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মহেশতলার নির্বাচনটা হল লোকসভার মহড়া। আমরা যে পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিলাম, তার তুলনায় বাহিনী কম এসেছে। তবে মহেশতলার উপনির্বাচন যেমন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নজরদারিতে হয়েছে, লোকসভা নির্বাচন এর থেকেও কড়া হবে।’’ সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ীর মতে, ‘‘এই রাজ্য সরকারের অধীনে কোনও সুষ্ঠু নির্বাচনই সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী সক্রিয় থাকলে ভোট কেমন হতে পারে, তার মোটামুটি একটা ছবি মহেশতলায় দেখা গিয়েছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘মানুষ ভোট কাকে দেবেন, সেটা তাঁদের অধিকার। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া পাহারা এবং একাধিক দফায় লোকসভা নির্বাচন করলে তবেই মানুষ সেই অধিকার পাবেন।’’
মহেশতলার তৃণমূল প্রার্থী দুলাল দাস অবশ্য এ সব বিতর্কে যাননি। তাঁর সাফ কথা, ‘‘অন্যান্য নির্বাচনে বিরোধীরা কিছু অভিযোগ সৃষ্টি করেছিলেন! এ বার সেই সুযোগও পাননি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy