যত দিন যাচ্ছে, ততই আরও উন্নত হচ্ছে স্মার্টফোন। কিন্তু বিশ্লেষকদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের বোকা বানাতে গালভরা নামের কয়েকটি ফিচারের কথা বলে ফোনের দাম বাড়িয়ে দেয় নির্মাণকারী সংস্থা। কোম্পানির এই ফাঁসে সহজেই পা দিয়ে ফেলেন মুঠোফোনপ্রেমী তরুণ-তরুণীরা। তাই ফোন কেনার সময়ে কোন কোন দিকে নজর রাখা উচিত, আননন্দবাজার ডট কমের এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে কিছু সংস্থা তাদের স্মার্টফোনে ডেডিকেটেড এআই (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধা) চিপ আছে বলে ঘোষণা করে দিয়েছে। ব্যস, তাতেই কেল্লাফতে! লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ফোন বিক্রির সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের যুক্তি, দৈনন্দিন জীবনে ফোনের এআই কতটা কাজে লাগবে, সেটা বুঝে নিয়ে এই ধরনের ফোন কেনার দিকে ঝোঁকা উচিত।
তা ছাড়া স্মার্টফোনের অপটিমাইজ়েশন দুর্দান্ত না হলে এআই থাকা বা না থাকায় কিছু যাবে-আসবে না। কিছু ফোনে আবার এইট-কে প্লাস ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের কথা বলছে নির্মাণকারী সংস্থা। বিজ্ঞাপন শুনলে মনে হলে গোটা একটা সিনেমা ওই স্মার্টফোন দিয়ে দিব্যি তুলে নেওয়া যাবে। কিন্তু, বাস্তবে সেটা অসম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ফোন ব্যবহারকারীদের ভিডিয়ো রেকর্ডিংয়ের জন্য ফোর-কে যথেষ্ট। সেখানে এইট-কে প্লাসে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করলে ফোনের মেমোরি পুরোপুরি ভর্তি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। সে ক্ষেত্রে বার বার কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে ফোন। চলতি ভাষায় যাকে সবাই হ্যাং করা বলে থাকেন।
এ ছাড়া ১০ থেকে ১৫টি ফাইভ-জি ব্যান্ডের কথা বলেও ফোনের দাম বাড়ানোর প্রবণতা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, এগুলির বেশ কয়েকটি ভারতে উপলব্ধ নয়। কারণ, এ দেশের সব জায়গায় ফাইভ জি নেটওয়ার্ক পৌঁছে গিয়েছে এমনটা নয়। বহু এলাকাতেই রয়েছে ফোর-জি নেটওয়ার্ক। ফলে ৪-৫টি ফাইভ-জি ব্যান্ডওয়ালা ফোন কেনার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।
পাশাপাশি, ফোনের পারফরম্যান্সকে আরও ভাল করার জন্য গেম মোড দিয়ে দাম বাড়িয়ে থাকে নির্মাণকারী সংস্থা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এটাও একটা গিমিক। কারণ, এতে একটা স্মার্টফোনের পারফরম্যান্সের বিশাল হেরফের হয়, এমনটা হয়। এটা থাকলে কিছুটা বাড়ে ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা। সেই সঙ্গে পোড়ে অতিরিক্ত ব্যাটারি।
ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে বহু ফোনের বিজ্ঞাপনে বলা হয় এক ইঞ্চি ক্যামেরা সেন্সরের কথা। এটা শুনলে মনে হতেই পারে সংশ্লিষ্ট ফোনটি দিয়ে ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ছবি তোলা যাবে। কিন্তু সেটা একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ, ডিএসএলআর ক্যামেরার এক ইঞ্চি ক্যামেরা সেন্সরের সঙ্গে স্মার্টফোনের ক্যামেরা সেন্সরের হিসেবনিকেশের বেশ পার্থক্য রয়েছে। ফোনের ইমেজ প্রসেসিং যত ভাল হবে, তত ভাল ছবি উঠবে, বলছেন বিশ্লেষকেরা।